Bangla Golpo - বোকা প্রেমিকা পার্ট১১ - bangla choti golpo - love story - Life story

 

বোকা প্রেমিকা

পার্ট১১

Bangla Golpo - বোকা প্রেমিকা পার্ট১১ - bangla choti golpo - love story - Life story
Bangla Golpo - বোকা প্রেমিকা পার্ট১১ - bangla choti golpo - love story - Life story 


বর্ষার প্রেমিক রিশাদ ইদানীং প্রায়ই বর্ষাকে রু*মডেটের প্রস্তাব দিচ্ছে।আধুনিক যুগের প্রেমিক-প্রেমিকার কাছে যা বর্তমানে ট্রেন্ড।প্রেমিকাকে তার প্রেমিকের কাছে বিশ্বাসের পরীক্ষা দিতে রুমডেট করতে হবে।ফিজি* ক্যাল রিলে*শন করে দিতে হবে ভালোবাসার প্রমাণ।ভালোবাসা কখনোই কুৎসিত নয়।তবে বর্তমান যুগে কপোত-কপোতীরা এই রুম*ডেট নামক নষ্টামি দিয়ে ভালোবাসা-প্রেমের মতো সুন্দর জিনিসকে বিশ্রী করে দিচ্ছে। বর্ষাকে জল বারবার করে বলে দিয়েছে আবেগের বশে যেন সে কোনো ভুল কাজ না করে।কিন্তু রিশাদের প্রস্তাবেও বর্ষা নাকোচ করতে পারছে না।বলতে গেলে একপ্রকার দোটানায় আছে বর্ষা।একদিকে নিজের, পরিবারের সম্মান অন্য দিকে একটা সম্পর্ক বাঁচানোর তীব্র আকাঙ্খা।কারও সাথে যে বিষয়টা শেয়ার করবে তারও সাহস হয়ে উঠছে না বর্ষার।সারাদিন এই বিষয়টা নিয়েই ভাবে বর্ষা।কোনো কিছুতেই এই বিষয়টার জন্য মন দিতে পারছে না বর্ষা।এদিকে বর্ষার থেকেও কোনো উত্তর না পেয়ে রিশাদ প্রায়ই বর্ষার সাথে রুড বিহেভিয়ার করছে।যা বর্ষার একদম সহ্য হচ্ছে না।প্রায়ই সে রিশাদের ব্যবহারের জন্য লুকিয়ে নীরবে চোখের জল ফেলছে।

বর্ষার হাতে থাকা ফোনটা কেঁপে ওঠে।স্ক্রিনে রিশাদের নামটা ভেসে ওঠেছে।বর্ষা ফোন রিসিভ করে।


" হ্যাঁ বলো।"


" বলো মানে?আমি বলবো না তুমি বলবে?ডিসিশন কি তাহলে তোমার?দেখো বর্ষা তোমার ডিসিশনের ওপর ভিত্তি করে আমাদের রিলেশনটা আর থাকবে কিনা।"


" আমি রাজী।"


চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে বর্ষা।ফোনের ওপাশ থেকে রিশাদ শব্দহীন পৈশাচিক হাসি দেয়।বর্ষা ভয়ার্ত কন্ঠে বলে,,,


" এই কাজটা করার পর তুমি আমায় ছেড়ে যাবে না তো? অনেক ছেলে তো তাই ই করে।"


" কুইন!আমায় কি তোমার আর পাঁচটা ছেলের মতো লাগে?আমি ওরকম ছেলেই না।আমি তোমায় অনেক অনেক লাভ করি। You know hah? আমি কেন তোমাকে ছেড়ে যাবো।"


" আমি তোমায় বিশ্বাস করি বলেই কিন্তু তোমার প্রস্তাবে রাজি হলাম।তুমি আমার বিশ্বাসে আঘাত করো না কিন্তু!"


" I know that Queen."


" কবে করতে হবে?"


" তুমি রাজি থাকলে কালই।"


" Are you sure? আচ্ছা আমরা এই কাজটা না করে বিয়ে করে নিলেই তো পারি।"


" তোমার ফ্যামিলি রাজি হবে বেকারের হাতে তোমায় তুলে দিতে?"


" চেষ্টা করলে ক্ষতি কি?"


" দেখো বর্ষা আমি নিজেই আমার বাবার টাকায় চলি।তারমধ্যে তোমায় বিয়ে করে নিয়ে আসলে ব্যাপারটা কেমন না?যদিও আমার ফ্যামিলি কিছু বলবে না কিন্তু সমাজ তো ছেড়ে কথা বলবে না।"


" তুমি নিজের কথাটাই ভাবলে শুধু।সমাজ যদি জানতে পারে বিয়ের আগেই আমরা ফিজিক্যাল রিলেশন করেছি তাহলে তোমায় সমাজ কিছু না বললেও আমায় আমার ফ্যামিলিকে ছেড়ে কথা বলবে না।আমার মন সায় দিচ্ছে না রিশাদ।"


" Trust me dear..the matter will be kept completely secret..আমার কিছু কাজ আছে।আমি রাখছি।কাল দেখা হচ্ছে তাহলে।আমি তোমায় তোমার কলেজের সামনে থেকে নিও যাবো।ফর নাও বাই।"


" রিশাদ শোনো...."


বর্ষার কথা না শুনেই ফোন কেটে দেয় রিশাদ।বর্ষা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।


________


আজ জল বর্ষণকে নিয়ে ওর মায়ের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে।বিয়ের সময় জলের মাকে বলা হয়েছিলো।তিনি আসার আগ্রহও দেখিয়েছিলেন। কিন্তু জলের মায়ের নতুন স্বামী তাকে আসতে দেন নি।জলের মা প্রায়ই ফোন দিয়ে জলের কাছে দুঃখ প্রকাশ করতেন যে মেয়ের জামাইকে এখনো তার দেখা হয়ে উঠলো না।জল তার মাকে কথা দিয়েছিলো যে বর্ষণকে মায়ের সাথে দেখা করাবে।আর সেই কথা রাখতেই জল বর্ষণকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে।

আজ বহু দিন পর জল বর্ষণ একসাথে রিকশায় চড়লো।সেই সম্পর্কের শুরুর দিন গুলো মনে পরে গেলো জলের।রিকশায় চড়ে বর্ষণকে পাশে বসিয়ে শহর দেখা।আর কত শত মুহুর্ত!কিন্তু সবই আজ স্মৃতি।

কলিংবেল চাপতেই খালা এসে দরজা খুলে দেয়।জলকে দেখে তিনি আনন্দিত হয়ে বলেন,,,


" আফা আইছেন?লগে এডা কেঠা?"


" কে হতে পারে?"


" খালাম্মা কইলো আন্নের নাকি বিয়া হইছে।এডা কি আন্নের জামাই?"


জল মুচকী হেসে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ায়।খালা আনন্দিত কন্ঠে বলেন,,


" মাশাআল্লাহ মাশাআল্লাহ।ভাই তো সুন্দর আছেন।"


" মা কোথায়?"


" খালাম্মা এই মাত্র ঘরে গেলো।আপনেগো লাইগা নাস্তা বানাইতাছিলো এতক্ষণ।"


" তুমি বসো বর্ষণ।আমি মাকে ডেকে নিয়ে আসছি।"


কথাটা বলে জল মায়ের ঘরের দিকে চলে যায়।বর্ষণ সোফায় বসে।কিছুক্ষণ পরে জল ওর মাকে নিয়ে আসে।বর্ষণ উঠে দাঁড়িয়ে জলের মায়ের পা ছুঁয়ে সালাম করে।জলের মা মাথায় হাত দিয়ে বর্ষণলে আশীর্বাদ করেন।


" কেমন আছেন?"


" আল্লাহ তায়ালা যেমন রাখেন।তোমাদের বিয়েতে আমার যাওয়ার ইচ্ছা ছিলো কিন্তু...."


" আপনার হাজবেন্ড আসতে দেননি।বিষয়টা আমি জানি।"


জলের মা মুচকী হাসেন।


" তোমরা বসো আমি তোমাদের জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।"


" মা শুধু শুধু এগুলো করতে গেলে কেন?তুমি তো জানো আমি সব জায়গায় খাই না"


" তুমি না খেলে!জামাই এসেছে জামাই খাবে না?"


জল প্রতুত্তরে কিছু বলে না।জলের মা নিজ হাতে বেড়ে বর্ষণকে খাওয়ান।তারপর মায়ের সাথে কিছু গল্পগুজব করে বর্ষণ জল বাসার দিকে রওনা দেয়।বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে জল রাতের খাবার রান্না করার লেগে পরে।জল রান্নাঘরে রান্নার কাজে ব্যস্ত।আর বর্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে জলের দিকে তাকিয়ে আছে আজ জলকে অন্যরকম সুন্দর লাগছে। বর্ষণ উঠে গিয়ে জলকে জড়িয়ে ধরে।এইবারও জল ধাক্কা দিয়ে বর্ষণকে দূরে সরিয়ে দেয়।সব কিছুরই একটা সীমা থাকে।বিয়ের এতদিন হয়ে গেলো জল বর্ষণকে কাছে আসতে দেয় নি।বর্ষণ কাছে আসলে হয় জল পালিয়েছে না হলে বর্ষণকে জল দূরে সরিয়ে দিয়েছে।জলের আচরণে বর্ষণের খুব রাগ হলো।তার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে গিয়েছে।


" এই সমস্যা কি তোমার?কাছে আসলেই এমন আচরণ করো কেন?"


জল চুপচাপ। সে বর্ষণের কথার কোনো উত্তর দিচ্ছে না।বর্ষণ এবার জলকে হ্যাঁচকা টান দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে।পুরুষ শক্তির সাথে পেরে ওঠে না জল।


" কিছু জিজ্ঞেস করেছি।"


জল এবারও চুপ।বর্ষণের রাগ চরম আকার ধারণ করেছে এতক্ষণে।রাগে তার কন্ঠ কাঁপছে।কিছু বলতে গিয়েও সে বারবার আটকে যাচ্ছে।


" ভালো লাগে না আমায় আর?নতুন কাওকে জুটিয়েছিস?বাপে তো তাই করেছিলো।আগের বউ পুরোনো হয়ে গিয়েছিলো তাই নতুন মেয়ে মানুষ ঘরে তুলেছে।"


জল এবার ঠাস করে বর্ষণের গালে থাপ্পড় মেরে দেয়।জলকে নিয়ে যা বাজে কথা বলার বলুক।কিন্তু ওর বাবাকে নিয়ে মানুষ কোনো বাজে কথা বললে জলের তা একদম সহ্য হয় না।যতই খারাপ থাকুক ওর বাবা।বাবা তো!আর বাবারা কখনো খারাপ হয় না।যাই করে থাকুক জাবেদ চৌধুরী।জলের কাছে তিনিইই পৃথিবীর সবচে ভালো বাবা।

বর্ষণ গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।জল ওর দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।জল বর্ষণের অতীত নিয়ে বলতে গিয়েও থেমে যায়।এভাবে যদি জল বর্ষণের অতীত নিয়ে কথা তোলে তাহলে বর্ষণ আর জলের মধ্যে কোনো পার্থক্য তো থাকলো না।দুজনেই একই পর্যায়ের হয়ে গেলো।জল নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে রান্নায় মন দেয়।বর্ষণ গালে হাত দিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে ঘরে চলে যায়।বর্ষণের যতই রাগ হোক সে খাওয়া বাদ দেয় না।খিদে সহ্য করার ক্ষমতা বর্ষণের নেই।তাই জল রান্না শেষ করে টেবিলে খাবার সাজিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে দরজা আটকিয়ে দেয়।


চলবে,,,ইনশাআল্লাহ 


Next part 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.