Bangla Golpo - শুধু তোমারই জন্য পর্ব_২৩ | bangla love story pdf

 


শুধু তোমারই জন্য 

পর্ব_২৩

Bangla Golpo - শুধু তোমারই জন্য   পর্ব_২৩ | bangla love story pdf
Bangla Golpo - শুধু তোমারই জন্য   পর্ব_২৩ | bangla love story pdf


--"কেক কাটবে না?"


আহিয়ানের কথায় আনিতা আহিয়ানের বুক থেকে মাথা তুলল। চোখ মেলে আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছুক্ষণ। আনিতার কপালে পড়া চুলগুলো আহিয়ান হাত দিয়ে সরিয়ে বলে,


--"চলো কেক কাটবে।"


কথাটা বলেই আহিয়ান আনিতার হাত ধরে ছাদের অন্য দিকে নিয়ে গেলো। আনিতা সামনে চোখ রাখতেই দেখে ছোট্ট একটা গোল টেবিল লাল আর সাদা নেট কাপড় দিয়ে সাজানো। টেবিলের উপর জুড়ে লাল গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো ছিটানো। আর টেবিলের চারপাশে লাল আর সাদা রঙের মোমবাতি জ্বালানো। আহিয়ান আনিতার হাত ধরে টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। টেবিলে ছোট্ট একটা গোল আকৃতির চকলেট কেক। তাতে ইংলিশ ফ্রন্টে লিখা, "হ্যাপি বার্থডে পিচ্চিপাখি"


কেকের পাশ থেকে আহিয়ান নাইফটা উঠিয়ে আনিতার হাতে দিলো। আনিতা নাইফটা হাতে নিলো। আনিতা এক হাতে নাইফ নিয়ে অন্যহাত দিয়ে আহিয়ানের হাত নিজের হাতের উপর রাখলো। দুজনে মিলে একসাথে কেক কাটে। এবং একসাথেই একে অপরকে কেক খাইয়ে দেয়। আহিয়ান ফোন বের করে তন্ময়কে ম্যাসেজ করে। কিছুক্ষণের মাঝেই তন্ময় ছাদে এসে হাজির হয়। হাতে একটা শপিং ব্যাগ। তন্ময় আহিয়ানের কাছে গিয়ে শপিং ব্যাগটা ওর কাছে দিলো। আহিয়ান আনিতার দিকে ঘুরে শপিং ব্যাগটা আনিতার হাতে দিয়ে বলে,


--"এটা তোমার জন্য।"


--"কি আছে এতে?"


--"সেটা রুমে গিয়ে দেখে নিও।"


আনিতা হেসে মাথা দুলিয়ে ব্যাগটা টেবিলে রাখলো। তারপর এক টুকরো কেক কেটে তন্ময়কে খাওয়াতে নেয়। তন্ময় আনিতার হাত থেকেই কিছুটা কেক নিয়ে আনিতাকে আগে খাইয়ে দিয়ে পরে আনিতার হাত থেকে কেক খেলো। তন্ময় বড় একটা চকলেট বক্স আনিতাকে দিয়ে বলে,


--"হ্যাপি বার্থডে কিউটিপাই। তোমার ভাইয়ের তরফ থেকে তোমার জন্য তার এই সামান্য উপহার।"


--"থ্যাঙ্কিউ ভাইয়া।"


পরবর্তীতে তন্ময় মুচকি হাসলো। আনিতা চকলেট বক্সটাও টেবিলে রেখে দিলো। আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে তন্ময় বলে,


--"আর দশ মিনিট টাইম দিলাম দুজনকে একসাথে সময় কাটানোর জন্য। আমি নিচে দেখছি কেউ আবার উঠলো কিনা।"


কথাটা বলে আর এক মূহুর্ত দাঁড়ালো না তন্ময়। সঙ্গে সঙ্গেই নিচে নেমে গেলো। আহিয়ান আনিতার হাত ধরে একদম ছাদের রেলিং ঘেঁষে দাঁড়ালো। কিছুক্ষণ আনিতার মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলল,


--"বিকেল থেকে অনেক কষ্ট দিয়েছি তাই না?"


--"এতটুকু কষ্ট না পেলে এতটা খুশি হতে পারতাম না।"


--"কষ্ট না দিয়েও তো সারপ্রাইজটা দেওয়া যেতো।"


--"তা যেতো কিন্তু এতটা খুশি তাতে থাকতো না আমার মনে হচ্ছে।"


--"আচ্ছা শোনো না।"


--"শুনছি তো বলুন।"


--"একটা রিকুয়েষ্ট করবো?"


--"রি্ রিকুয়েষ্ট?"


--"হ্যাঁ।"


--"আচ্ছা বলুন কি রিকুয়েষ্ট।"


--"রাখবে তো?"


--"না জেনে কিভাবে বলবো?"


--"কাল বেরোতে পারবে আমার সাথে?"


--"ম্ মানে?"


--"সারাটাদিন একসাথে থাকতে চাই। থাকবে?"


--"এটা ক্ কিভাবে স্ সম্ভব বল্ বলুন? খুব র্ রিস্ক হয়ে যা্ যাবে।"


--"যেতে চাও কিনা সেটা বলো।"


--"ধরা পরে গেলে সব শেষ হয়ে যাবে। মেজো চাচ্চু ছোট চাচ্চু ফাইয়াজ ভাইয়া সবাই বাসায়। একবার যদি কেউ দেখে ফেলে__"


--"এসব নিয়ে তোমার ভাবতে হবে না। তুমি শুধু বলো যাবে কিনা?"


--"কিন্তু___"


--"আচ্ছা বাদ দাও।"


বেশ কিছুটা সময় দুজনেই চুপ করে ছিলো। আনিতা আহিয়ানের দিকে চোখ তুলে তাকাতেই দেখে আহিয়ান মুখ কিছুটা গোমড়া করে রেখেছে৷ আনিতা এগিয়ে এসে নিজে থেকে আহিয়ানকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মাথা রাখে। আহিয়ানও আষ্টেপৃষ্টে আনিতাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। আনিতা আহিয়ানের সাথে নিজেকে আরো ভালোভাবে জড়িয়ে নিয়ে বলে,


--"আমি জানি আপনি খুব কষ্ট পেয়েছেন।  খারাপ লাগছে আপনার। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন এসময় যদি কোনো ভাবে আপনার আর আমার সম্পর্কের কথাটা সবার সামনে চলে আসে তাহলে কিন্তু আমাদের জন্যই খারাপ হবে। এমন কি সারাজীবনের জন্য আমরা একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্নও হতে পারি। কিন্তু আমি আপনাকে একদম হারিয়ে ফেলতে চাই না বিশ্বাস করুন। আপনাকে খুউব বেশিই ভালোবাসি আমি৷ আপনাকে হারিয়ে থাকতে পারবো না আমি।"


--"আমি জানি পাগলি। তুমি যেমন আমাকে হারিয়ে থাকতে পারবে না। আমিও তেমনি পারবো না তোমাকে ছাড়া থাকতে।"


আহিয়ান আনিতার দু-গাল ধরে কপালে একটা চুমু খেলো। লজ্জায় আনিতা আবারো আহিয়ানের বুকে মুখ লুকায়। কিছুক্ষণ বাদে হুট করেই ছাদের দরজায় খটখট আওয়াজ হয়। আনিতা আহিয়ানকে ছেড়ে দেয় সাথে সাথেই। আহিয়ান আনিতাকে না ছেড়েই দরজার দিকে তাকায়। ছাদের দরজায় তন্ময় দাঁড়িয়ে আছে। আনিতা ছাড়া পাবার জন্য মোচড়ামুচড়ি করছে কিন্তু আহিয়ান আনিতাকে না ছেড়েই তন্ময়কে বলে,


--"কি চাই?"


--"ইউর টাইম ইজ ওভার। দশ মিনিট সময় দিয়েছিলাম। আর এখন দশ মিনিট শেষ হয়ে বারো মিনিট চলছে।"


--"আর একটু কষ্ট করে পাহাড়া দে ভাই।"


--"তোমরা দুজনে এদিকে আলাদা সময় কাটাবে আর আমি সিড়ির নিচে দাঁড়িয়ে মশার কামোড় খাবো তাই না?"


--"আর একটু প্লিজ ভাই।"


--"একদমই না।"


কথাটা বলেই তন্ময় টেবিলটার কাছে এগিয়ে আসলো। তারপর টেবিল থেকে মোম গুলো নিভিয়ে একটা ব্যাগে রাখলো। নেট কাপড়গুলো খুলেও সেই ব্যাগেই রাখলো। গোলাপের পাপড়ি গুলো নিয়ে একটা আলাদা ব্যাগে রেখে ব্যাগটা ছাদ থেকে ফাইয়াজদের বাসার পিছন দিকে ফেলে দিলো। ছাদের এক কোনে দুটো চেয়ার সমেত টেবিলটা থাকে। তন্ময় টেবিলেটা সরিয়ে আগের জায়গায় রেখে দিলো। আনিতা এবার জোড় করেই আহিয়ানের থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিলো। আহিয়ানের থেকে কিছুটা দূরে সরে দাঁড়ালো আনিতা। তন্ময় কেকের বাকী অংশটুকু হাতে নিয়ে আহিয়ানদের সামনে এসে দাঁড়ালো। কেকটা তিন টুকরো করে এক টুকরো নিজে খেতে খেতে বলে,


--"তোরা যে একা শেষ করতে পারবি না জানতাম। তাই নিজের টুকু নিজে খেয়ে নিলাম। এখন বাকীগুলো তোরা দুজনে মিলে শেষ করবি।"


--"আমি খাবো না। নিচে যাচ্ছি আমি। তোমরা এসো।"


কথাটা বলে আনিতা চলে আসতে নিলেই তন্ময় আনিতাকে থামিয়ে দিয়ে বলে,


--"তা বললে তো হবে না কিউটিপাই। রাতে তো খেলে না কিছুই। এখন এইটুকু খেতেই হবে।"


--"পারবো না আমি ভাইয়া।"


--"আহিয়ানের জন্য না হলেও আমার জন্য খেয়ে নাও প্লিজ।"


আনিতা অসহায় মুখ করে তাকালো তন্ময়ের দিকে। আহিয়ান মুখ টিপে হাসছে। আনিতা আর কোনো উপায় না পেয়ে কিছুটা কেক খেলো। বাকীটুকু রেখে দিয়ে বলে,


--"আর পারবো না।"


--"ওকেহ আর খেতে হবে না। এইটুকু না হয় তোমার প্রেমিকপুরুষ আহিয়ানই খেয়ে নিবে।"


তন্ময় কথাটা বলেই আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে চোখ মারলো। আহিয়ানও ঠোঁট কামড়ে ধরে ক্ষানিকটা শব্দ করে হেসে দিয়ে বলে,


--"একদম। এইটুকু আমিই খেয়ে নিবো। সাথে আমার পিচ্চির ঠোঁটের_____"


আনিতা আর এক মূহুর্ত না দাঁড়িয়ে দৌড়ে নিচে নেমে গেলো। আনিতার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আহিয়ান আর তন্ময় একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে কিছুটা শব্দ করেই হেসে দিলো। 


*


বিকেলে আনিতা পুরো বাসা সাজানো দেখে বেশ অবাক হয়। কখনো সেভাবে ওর বার্থডে সেলিব্রেট করা হয়নি। কিন্তু আজ? আজ এভাবে সব সাজানো কেন তাহলে। রুমে বসে বসে এসব ভাবছিলো আনিতা। অনিমা এসে আনিতার সামনে একটা ব্যাগ রেখে যায়। আর তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নিতে বলে। আনিতা ব্যাগটা হাতে নিয়ে উলটে পালটে দেখলো। লাল রঙের একটা লং গাউন রাখা। মাঝে খুবই ছোট ছোট গোল্ডেন স্টোন বসানো। কিছুক্ষণ পরই রোদেলা তাসকিয়া জেরিন শুভ জারা জয় সব্বাই একসাথে এসে হাজির হলো। আনিতা ওদের দেখে এগিয়ে গিয়ে বলে,


--"তোরা সবাই?"


--"হ্যাঁ আমরা। চলে এলাম সবাই তোর বার্থডে পার্টি এ্যাটেন্ড করতে।"


শুভর কথায় আনিতা অবাক হলো ক্ষানিকটা। বাহ! ভালোই তো! পার্টি এ্যারেঞ্জ করা হচ্ছে সবাইকে ইনভাইট ও করা হয়েছে। অথচ আনিতা কিছুই জানে না? যাক ভালোই হলো এই সুবাদে বেশ এঞ্জয় করা যাবে। রোদেলা আনিতাকে কিছু ভাবতে দেখে ওর কাঁধে হাত দিয়ে বলে,


--"কিরে? কি ভাবছিস এত? রেডি হয়ে আয়।"


--"হুম। তোরা বস আমি এক্ষুনি রেডি হয়ে আসছি।"


কথাটা বলেই আনিতা জামাটা নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। বেশ ক্ষানিকটা বাদে জামা পালটে বের হলো আনিতা। ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে চুলগুলো আঁচড়ে এক সাইডে সিথি করে চুল ছেড়ে দিলো। ঠোঁটে ডার্ক রেড লিপস্টিক চোখে হালকা করে কাজল। ব্যাস এতেই আনিতা রেডি। বরাবরের মতো আহিয়ানের দেওয়া ব্রেসলেট একহাতে পড়ে নিলো। এবং অন্য হাতে রেড এন্ড গোল্ডেনের কম্বিনেশনের পাথরের চুড়ি পড়ে নিলো।


রেডি হয়ে আনিতা বের হয় রুম থেকে। ড্রয়িংরুমে গিয়ে সরাসরি চোখ পড়ে আহিয়ানের উপর। ফুল ব্লাক ড্রেসআপে আছে ছেলেটা। ইশ্ চোখ সরানো দায় হয়ে যাচ্ছে। সোফায় বসে কি সুন্দর ভাবে হাত নারিয়ে ফাইয়াজ আর তন্ময়ের সাথে কথা বলছে। আহিয়ানের চলাফেরার স্টাইল যেমন ইউনিক ওর কথাবার্তা বলার ধরনও তেমন ইউনিক। আনিতাকে এভাবে দাঁড়িয়ে পড়তে দেখে জেরিন বলে,


--"কি হলো? দাঁড়িয়ে পড়লি যে? চল।"


জেরিনের কথায় আহিয়ান কথা থামিয়ে আনিতার দিকে তাকায়। আনিতাকে দেখেই যেন একদম থমকে যায় ও। ফর্সা গায়ে লাল ড্রেস আর খোলা চুলে একদম অমায়িক লাগছে আনিতাকে। আহিয়ান তাকাতেই আনিতা ওর থেকে চোখ সরিয়ে নেয়। আহিয়ান অদ্ভুত দৃষ্টিতে দেখছে আনিতাকে। আনিতা জেরিনের সাথে অন্যদিকে চলে গেলো। আহিয়ান তখনও ঘাড় ঘুড়িয়ে আনিতাকেই দেখে যাচ্ছিলো। তা দেখে তন্ময় আহিয়ানের মাথা দুহাতে ধরে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে নিয়ে বলে,


--"সবাই আছে এখানে। যেভাবে আনিতাকে দেখছিস যে কেউ বুঝে ফেলবে তোদের মাঝে কিছু একটা আছে। সো এবার চোখটা সরা ওর থেকে।"


--"কি করে চোখ সরাই ওর থেকে বল তো?"


আহিয়ান আবারো ঘাড় ঘুড়িয়ে আনিতার দিকে তাকিয়ে কথাটা বলল। তন্ময় কপাল চাপরে আবারো আহিয়ানকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে বলে,


--"জানিনা। বাট ওর থেকে চোখ সরা।"


--"ওফস তুই না কিচ্ছু বুঝিস না। আগে নিজে প্রেমে পড় তারপর আমিও দেখে নিচ্ছি তোকে।"


--"আচ্ছা দেখিস। এখন তারপরও আনিতার দিকে আর তাকাস না।"


--"হুম।"


রাত ন'টার দিকে বার্থডে পার্টি শেষ হয়ে যায়। জয় আর জারা কিছুক্ষণ আগেই বাসায় যাওয়ার জন্য বেরিয়ে পড়েছে। ওদের দুজনের বাসা একই দিকে। সেজন্য একসাথেই বের হয়েছে দুজনে। থাকার জন্য বেশ জোরাজোরি করলেও ওরা দুজন রাজি হয়নি। রোদেলা আর তাসকিয়াও বাসায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আনিতা অনেকবার করে বলছে জেরিন শুভ রোদেলা তাসকিয়া ওদের চারজনকে থেকে যেতে কিন্তু ওরা রাজি হচ্ছে না। তখনই ফাইয়াজ এসে আনিতাকে বলে,


--"আনি বুড়ি একটু এদিকে শোন।"


ফাইয়াজের ডাকে আনিতা ওদের চারজনকে "আসছি" বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। ফাইয়াজ আনিতাকে ছাদের সিড়ির দিকে নিয়ে বলে,


--"একটা কাজ করে দিতে পারবি?"


--"কি কাজ শুনি?"


--"তাসকিয়াকে যেভাবেই হোক আজকে রেখে দিতে হবে। প্লিজ কোনো ভাবে আজকে ওকে বাড়ি যাওয়া থেকে আটকাতে হবে তোর।"


--"এতে আমার লাভ কি?"


--"তোর লাভ কি মানে? এই যে এত কষ্ট করে তোর বার্থডে সেলিব্রেট করার জন্য ছোট মামাকে দিয়ে বড় মামাকে রাজি করালাম। তোকে সারপ্রাইজ দিলাম আর তুই বলছিস তোর লাভ কি?"


--"হ্যাঁ আমার লাভ কি? আমি বলেছিলাম তোমাকে এসব করতে?"


--"এই যে এত এত গিফট পেলি সবই কিন্তু আমার জন্য।"


--"হুম তো?"


--"প্লিজ ওকে রেখে দে না আজকের জন্য। বড় ভাইয়ের এই রিকুয়েষ্টটা রাখ।"


--"ভেবে দেখছি।"


--"এইটুকুর জন্য আবার ভেবে দেখতে হবে?"


--"আমি যা বলবো তাই করতে পারবে?"


--"কি? করতে হবে শুনি।"


--"প্রথমত, তুমি আম্মুকে রাজি করাবে আজকে আমি আর আমার ফ্রেন্ডদের তোমাদের বাসায় থাকার জন্য।"


--"আমি কিভাবে রাজি করাবো?"


--"সেটা জানি না। আর দ্বিতীয়ত, আজ তো আকাশে অনেক বড় চাঁদ উঠেছে। সো গভীর রাত অব্দি আমাদের নিয়ে বাইকে করে ঘুরতে হবে। মানে লং ড্রাইভ যাকে বলে। তোমায় আর তাসকিয়াকে আলাদা ভাবে সময় কাটাতে দিবো নো সমস্যা। এখন বলো রাজি আছো কিনা?"


--"পারবো না আমি।"


--"ওকেহ তাহলে আমিও তাসকিয়াকে আটকাতে পারবো না।"


--"এই না না প্লিজ।"


--"তাহলে বলো তুমি রাজি?"


--"ওকে__ওকে আমি রাজি।"


--"আচ্ছা তাহলে তোমার কাজ হয়ে গিয়েছে। তুমি যাও গিয়ে আম্মুকে রাজি করাও আমি ওদের নিয়ে আসছি তাদের বাসায়।"


কথাটা বলেই আনিতা ওখান থেকে আবার রুমে চলে এলো। নানান টালবাহানা দিয়ে ওদের সবাইকে আজ রাত থাকতে রাজি করালো। বেশ কিছুটা বাদে ফাইয়াজ এসে আনিতা রোদেলা তাসকিয়া জেরিন শুভ ওদের নিয়ে ফাইয়াজদের বাসায় গেলো। আজ রাত ওরা ওখানেই থাকবে। শুভ আর ফাইয়াজ একসাথে থাকবে তন্ময় আর আহিয়ান একসাথে। আর ওরা চারজন একই রুমে শুবে বলে ঠিক করেছে। 


রোদেলা তাসকিয়া জেরিন তিনজনে মিলে আড্ডা দিচ্ছে। আর আনিতা শুয়ে শুয়ে আহিয়ানের কথা ভাবছে। আহিয়ান আজ সারাটাদিন আনিতার কাছে চেয়েছিলো। কিন্তু আনিতা সেটা দিতে পারেনি। তাই তো কোনোভাবে ফাইয়াজকে রাজি করালো আজ রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর ওদের সবাইকে নিয়ে বাইকে করে লং ড্রাইভে বের হওয়ার জন্য। দিন কাটাতে পারেনি তাতে কি? গভীর রাত অব্দি একসাথে ঘুরবে আজ ওরা। মনে মনে এসব ভেবে মৃদু হাসলো আনিতা। এখন অপেক্ষা শুধু ফুপ্পি আর আংকেলের ঘুমানোর।

চলবে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.