শুধু তোমারই জন্য
পর্ব_৪৫
Bangla Golpo pdf - শুধু তোমারই জন্য পর্ব_৪৫ - bangla choti golpo |
পনেরো দিনে পরের কথা। সন্ধ্যায় আনিতা নডুলস রান্না করছিলো। নডুলস রান্না শেষে নিজের জন্য কিছুটা নডুলস একটা ছোট বাটিতে নিয়ে বাকীটা একটা বড় বাটিতে ঢেলে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখলো। সোফায় দু পা তুলে আসাম দিয়ে বসে বসে টিভি দেখছে আর নডুলস খাচ্ছে ও। তখনই তুষার তুষারের আব্বু আম্মু চার পাঁচ প্যাকেট মিষ্টি আর ফলমূল নিয়ে হাজির হয়। আনিতার মেজ কাকিমা সেগুলো নিয়ে কিচেনে রাখেন। অনিমা গিয়ে ওর আব্বু আর চাচ্চুকে ডেকে আনেন। সোফায় বসে সবাই গল্প করছে। তুষার গিয়ে আনিতার পাশে সোফায় বসে। কথা বলতে চায় আনিতার সাথে। আনিতাও সৌজন্যতার খাতিরে দু/একটা কথা বলেন। আনিতা জারাফকে ডেকে ওর আর তুষারের মাঝে বসালো। জারাফ চিপস্ এর প্যাকেট খুলে চিপস্ খাচ্ছে। আর আনিতা এখনো নডুলস খাচ্ছে বসে বসে। তুষার আরো কথা বলতে চাইছিলো ওর সাথে। কিন্তু আনিতা এমন একটা ভাব নিয়ে বসে ছিলো যে ও টিভি দেখায় প্রচুর ব্যস্ত তাই আর কথা বাড়ায়নি তুষার।
আনিতার আম্মু আর কাকিমা ট্রে তে করে নানান রকমের নাস্তা মিষ্টি ফলমূল এনে রাখলো টি-টেবিলে। তা দেখে তুষারের আম্মু বলে,
--"এতসব ঝামেলার আবার কি দরকার ছিলো?"
--"ঝামেলার কি আছে? কতদিন পর এসেছেন এইটুকু তো কিছুই না। আজ আপনাদের কিছুতেই ছাড়ছি না।"
আনিতার আম্মু কথাগুলো বলে ট্রে থেকে সব নামিয়ে রেখে খালি ট্রে নিয়ে আবার কিচেনে চলে গেলেন। রাতের জন্য রান্না বসাতে হবে তার। সন্ধ্যার নাস্তা শেষে তুষারের আব্বু বলেন,
--"বাড়ির সকলকে এখানে ডাকলে একটু ভালো হতো। কিছু কথা ছিলো।"
অনিমা উঠে গিয়ে সবাইকে ডেকে আনলো। আনিতা তখনো বসে বসে টিভি দেখছে। তুষারের আব্বু কথা বলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। আনিতার আব্বু তখন আনিতাকে বলে,
--"আনিতা অনিমা জারাফকে নিয়ে ভিতরে যাও তোমরা।"
ওরা উঠতে নিচ্ছিলো তখনই তুষারের আব্বু বলে,
--"থাকুক সমস্যা নেই। তোমরা বসো মামুনি।"
বাধ্য মেয়ের মতো ওরা আবার বসে পড়লো। আনিতা টিভির দিকে চোখ রাখলেও এখানে সবাই কি নিয়ে কথা বলবে সেটা শোনার জন্য বসে আছে ও। তুষারের আব্বু বলে,
--"আসলে আজকে এখানে আসার পিছনে আমাদের একটা কারন আছে।"
--"কারন আছে? কি কারন?"
--"আসলে আমরা আনিতার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে আসছিলাম।"
--"মানে?"
--"আমরা আনিতাকে আমাদের তুষারের বউ করে নিয়ে যেতে চাই যদি তোদের কোনো আপত্তি না থাকে।"
কথাগুলো শুনে থমকে গেলো আনিতা। ওর আব্বু কি বলবে? রাজি হয়ে যাবে না তো এই বিয়েতে? এই ভেবে আনিতার হাত পা অবস হয়ে এলো। এতক্ষন আনিতার আব্বু আর তুষারের আব্বুই কথা বলছিলো আর বাকী সবাই নিরব দর্শকের মতো সবটা শুনে যাচ্ছিলো। আনিতার ছোট চাচ্চু বলে,
--"কিন্তু___"
--"তুষার আনিতাকে অনেক ছোট থেকেই পছন্দ করে। বিষয়টা আমাদের জানিয়েছে ও অনেক আগেই। আমরা চেয়েছিলাম আনিতা আরো বড় হোক তারপর এই নিয়ে কথা বলবো তোদের সাথে। আর আনিতা তো এখন ছোট নেই।"
--"কিন্তু এভাবে হুট করেই তো কিছু সম্ভব না।"
আনিতার চাচ্চুর কথায় তুষারের আম্মু বলে,
--"কেন সম্ভব না? ছেলে তোমাদের জানাশোনা আর আনিতাকেও আমরা খুব ভালো করে চিনি। তাহলে সমস্যা কি আর?"
--"আমাদের কথাতেই তো আর হবে না। মেয়ে বড় হয়েছে ওর তো একটা মতামত আছে। সবচেয়ে বড় কথা এটা ওর লাইফের সবথেকে বড় একটা ডিসিশন এভাবে আমরা হুট করে কোনো কিছু করতে পারি না।"
আনিতার আব্বু কথাগুলো বলে আনিতার দিকে তাকালো। আনিতার টলমলে চোখে ওর আব্বুর দিকেই তাকিয়ে আছে। এই মূহুর্তে আনিতা খুব করে চাইছে ওর আব্বু যেন ওর চোখ দেখে সবটা বুঝতে পারে। ওর আব্বু যাতে বুঝতে পারে এখানে ও ভালো থাকতে চাইলেও ভালো থাকতে পারবে না। ও যে আহিয়ানকে ভালোবাসে। আনিতা খুব করে চাইছে ওর আব্বু যাতে ওকে আজ একটু হলেও বুঝে। তুষারের আম্মু বলে,
--"আনিতা তো এখানেই আছে। ওকে জিজ্ঞেস করুন না। আমার মনে হয় না ও কোনো আপত্তি করবে।"
--"আজ এসব থাক। এসব নিয়ে আমরা না হয় পড়ে আলোচনা করে আপনাদের জানাবো।"
আনিতার চাচ্চু কথাগুলো বলল। আনিতার চাচ্চুর কথায় সবাই সহমত জানায়। তুষারের পরিবারের কেউ-ও আর এ নিয়ে কথা বাড়ায়নি। আনিতা ওর চাচ্চুর দিকে কৃতজ্ঞতার চোখে তাকায়। আনিতার চাচ্চু আনিতার দিকে এক পলক তাকিয়ে ওখান থেকে উঠে নিজের রুমে চলে যায়। সেদিন রাতে তুষার ওরা ডিনার করে তারপর নিজেদের বাড়ি যায়। আর বলে যায় বিয়ের ব্যাপারে কথা বলে ওদের জানাতে।
-
দুই দিন পর। তুষারের পরিবার থেকে বারবার ফোন করা হচ্ছে আনিতার আর ওদের সকলের মত জানার জন্য। আনিতার আব্বু তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই সন্ধার পর সবাইকে ড্রয়িংরুমে থাকতে বললেন। আনিতাকেও থাকতে বললেন সেখানে।
সন্ধ্যার পর সকলে উপস্থিত হয় বসার রুমে। গুটিগুটি পায়ে আনিতাও হাজির হয়। আনিতার আব্বু তখনও আসেনি। সবাই ড্রয়িংরুমে বসে আনিতার আব্বুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তখনই ফাইয়াজ আসে। আনিতাকে ডেকে বলে,
--"কেমন আছিস বুড়ি? কতদিন পর দেখলাম তোকে।"
--"ভালো ভাইয়া। তুমি কখন এলে?"
--"এইতো ফ্রেশ হয়েই তোকে দেখতে চলে এলাম।"
আনিতা কিছু না বলে ফাইয়াজকে টেনে নিজের রুমে নিয়ে গেলো। নিজের রুমে গিয়ে আনিতা দরজা লাগিয়ে দিলো। ফাইয়াজ বিছানায় বসেছে। আনিতা ওর সামনে দাঁড়িয়ে ২ দিন আগের সব কথা জানায় ওকে। আর এটাও বলে ওর মতামতের জন্য আজকে সবাই জড়ো হয়েছে ড্রয়িংরুমে। ফাইয়াজ সবটা শুনে চুপচাপ বসে থাকে কিছু সময়। ওর চোখের সামনে ওরই আদরের ছোট বোন আর প্রানপ্রিয় বন্ধু কষ্ট পাচ্ছে। অথচ ও কিছুই করতে পারছে না। ফাইয়াজ দু হাতে নিজের চুল খামচে ধরলো। আনিতা ফাইয়াজের হাত নিজের হাতে নিয়ে বলে,
--"ভাইয়া তুমি কিছু করো না প্লিজ। তুমি তো জানো উনি আমাকে কতটা ভালোবাসে। আমরা কেউ কাউকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবো না। একসময় হয়তো বা বাস্তবতা মেনে নিয়ে দুজনেই সবটা অন্যের সাথে গুছিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু দিনশেষে এতে আমরা কেউ-ই ভালো থাকবো না।"
--"আমি বুঝি বুড়ি। কিন্তু মামাদের বুঝাবো কি করে বল?"
আনিতা আর ফাইয়াজ কথা বলছিলো। আর দরজার বাইরে থেকে আনিতার আব্বু সবটা শুনে। তিনি সেখানে আর এক মূহুর্ত না দাঁড়িয়ে ড্রয়িংরুমে সোফায় গিয়ে বসেন। আর অনিমাকে বলেন আনিতা আর ফাইয়াজকে ডেকে আনতে। অনিমা গিয়ে ওদের দুজনকে জানালো আব্বু ডাকছে। তাই দরজা খুলে দুজনেই বের হয়ে চুপচাপ সোফায় গিয়ে বসলো। আনিতার আব্বু প্রথমেই আনিতার ছোট চাচ্চুকে জিজ্ঞেস করলেন,
--"তুষারের সাথে আনিতার বিয়ে নিয়ে তোর মতামত কি?"
--"এখানে আমার বা অন্যকারো মতামতের আগে আনিতার মতামত জেনে নেওয়া বেশি প্রয়োজন। তার থেকে ভালো ওকেই জিজ্ঞেস করুন ও কি চায়?"
আনিতার আব্বু আনিতার দিকে তাকায়। আনিতা মাথা নিচু করে ছিলো। আনিতার আব্বু আনিতাকে বলে,
--"কি চাও তুমি? তুমি যদি মত দাও তাহলে আমরা এখানে কথা বলবো। তোমার মতের বিরুদ্ধে গিয়ে___"
চোখ বন্ধ করে আনিতা কিছুটা সাহস জুগিয়ে নিলো। পরপর দুটো শ্বাস নিয়ে আনিতা ওর আব্বুকে কথার মাঝে থামিয়ে দিয়ে বলে,
--"আ্ আমার কিছু বলার নেই আব্বু। যা বলার আমি ছোট চাচ্চুকে বলেছিলাম। তিনি সাথে সাথেই না করে দিয়েছিলেন। এর বাইরে আর কিচ্ছু বলার নেই আমার। আমি জানি তোমরা কখনো আমার খারাপ চাইবে না। এখন তোমরা আমাকে যা বলবে আমি তাই করবো। তোমরা অবশ্যই চাইবে না আমি খারাপ থাকি। তাই এখানে আমার মতামতের কিছু নেই। তোমরা যা ভালো মনে করো তাই করতে পারো। তোমাদের সিদ্ধান্তেই আমি রাজি।"
কথাগুলো বলে আনিতা উঠে যাচ্ছিলো। যেতে যেতে আবছা আবছা শুনতে পাচ্ছিলো, ওর আব্বু ওর চাচ্চুকে ওর আর আহিয়ানের ব্যাপারে বলছেন। এটাও বললেন একটু আগে আনিতা আর ফাইয়াজ কি কথা বলছিলো সবটাই উনি শুনেছেন। এসব শুনতে পেয়ে আনিতা ওর রুমের দরজার পর্দার আড়ালে লুকালো বাকী কথাগুলো শুনার জন্য। আনিতার আব্বু আর চাচ্চু দুজনে এ নিয়ে আরো কিছুক্ষণ কথা বলে। আনিতার আব্বু ফোন বের করে বলে,
--"তাহলে তুষারের আব্বুকে না করে দিচ্ছি?"
--"হ্যাঁ তাই করুন।"
আনিতার আব্বু ফোন কানে নিয়ে সেখান থেকে উঠে গেলেন। আনিতা রুমের ভিতর ঢুকে রুম লক করে ইচ্ছেমতো লাফাচ্ছে। তুষারদের প্রপোজালে না করে দিয়েছে মানে ওদের সম্পর্কটা মেনে নেওয়ার একটু হলেও চান্স আছে। আনিতা দরজা ধাক্কানোর শব্দে লাফালাফি থামিয়ে গিয়ে দরজা খুলে দিলো৷ আনিতার চাচ্চু বাইরে থেকেই বলে,
--"তুষারের ফ্যামিলিকে বারন করে দেওয়া হয়েছে বলে এই না যে তোমার আর আহিয়ানের সম্পর্ক মেনে নেওয়া হয়েছে। এত লাফালাফির কিচ্ছু নেই।"
আনিতা মাথা নিচু করে কথাগুলো হজম করে নিলো। আনিতার চাচ্চু কথাগুলো বলে আর এক মিনিটও না দাঁড়িয়ে চলে গেলেন ওখান থেকে।
-
খাবার টেবিলে একসাথে রাতের খাবার খেতে বসেছেন আহিয়ান আর ওর পরিবার। নুজাইরাহকে আগেই খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। খাবার টেবিলে পিনপতন নীরবতা চলছে। সকলেই চুপচাপ নিজেদের মতো খাবার নিয়ে খাচ্ছেন। আহিয়ান পা দিয়ে ওর ভাই নাহিয়ানকে ডাকলো। নাহিয়ান খাওয়া থামিয়ে আহিয়ানের দিকে তাকাতেই আহিয়ান ইশারা করে ওর আম্মুকে দেখালো। নাহিয়ান বুঝতে না পেরে ফ্যালফ্যাল করে আহিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। আহিয়ান ওর ভাইয়ের দিকে কিছুটা ঝুকে ফিসফিস করে বলে,
--"আম্মুকে বলো না আনিতা আর আমার কথা।"
--"ওহ আচ্ছা। দাঁড়া খেয়ে নেই তারপর বলছি।"
--"নাহ এক্ষুনি বলো।"
নাহিয়ান কিছু বলবে তার আগেই ওর আম্মু বলে,
--"খাওয়ার সময় দুই ভাই কি নিয়ে এত কথা বলছিস? খাওয়ার শেষে কথা বলা যাবে না? আর আহিয়ান? তুই তো কিছুই খাচ্ছিস না কথা না বাড়িয়ে চুপচাপ খেয়ে নে।"
--"আচ্ছা আম্মু।"
এই কথাটা বলে আহিয়ান এক লোকমা নিজের মুখে দিলো। কয়েক মূহুর্ত পর আবার নাহিয়ানের দিকে তাকালো ও। নাহিয়ান চোখের ইশারায় বললো,
--"বলছি।"
আহিয়ান স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। নাহিয়ান খেতে খেতেই ওর আম্মুকে বলল,
--"আম্মু কিছু বলার ছিলো তোমাকে।"
--"কোন বিষয়ে?"
--"আহিয়ানের বিয়ে ব্যাপারে।"
--"সেটা নিয়ে কারো ভাবার দরকার নেই। ওর জন্য আমি আগে থেকেই মেয়ে ঠিক করে রেখেছি।"
আহিয়ানের আম্মুর কথা শুনে সকলে অবাক হয়ে যায়। আহিয়ান চোখ বড়বড় করে ওর আম্মুর দিকে তাকিয়ে আছে। অবাক কন্ঠেই আহিয়ান বলে,
--"মানে? কি বলছো আম্মু?"
--"এভাবে অবাক হওয়ার কি আছে?"
--"না মানে আম্মু তুমি আমার জন্য মেয়ে ঠিক করে রেখেছো আর আমি জানিই না? আমাকে না জানিয়ে___"
--"তোদের বিষয়ে কিছু করতে হলে আজকাল তোদের জানিয়ে করতে হবে জানতাম না তো।"
--"আম্মু আমি সেভাবে বলিনি। তুমি ভুল ভাবছো।"
আহিয়ানের আম্মু আহিয়ানের কথা আমলে নিলেন না। তিনি নাহিয়ানের দিকে তাকিয়ে বলে,
--"তুমি কি বলছিলে বলো।"
--"আম্মু আহিয়ান একটা মেয়েকে ভালোবাসে। আর মেয়েটাও ওকে ভালোবাসে।"
--"যেটা হবে না সেটা নিয়ে কথা না বলাই কি ভালো না?"
--"আমাদের সবার আনিতাকে খুব পছন্দ এমন কি নুজাইরাহ-রও। আম্মু মেয়েটাকে দেখলে তোমারও খুব ভালো লাগবে বিশ্বাস করো।"
--"জান্নাতের আম্মুকে আমি কথা দিয়ে ফেলেছি। আহিয়ানের বিয়েটা জান্নাতের সাথেই হবে।"
--"কিন্তু আম্মু ওকে আমি সেভাবে কখনো দেখিনি। বোন হয় তো আমার।"
--"খালাতো বোন। আপন না।"
--"আম্মু একটু বুঝো আমি অন্য একটা মেয়েকে ভালোবাসি। এখানে জান্নাতকে বিয়ে করার প্রশ্নই আসে না। এই বিয়েতে কেউ ভালো থাকাবো না।"
--"জান্নাতে আম্মুকে কথা দেওয়ার আগে আমি তোকে জিজ্ঞেস করেছিলাম আহিয়ান।"
--"কোন বিষয়ে?"
--"তোর কাউকে পছন্দ কিনা। কিন্তু তুই না বলেছিলি বলেই আমি ওদেরকে কথা দিয়েছি।"
--"কিন্তু আম্মু তুমি আমাকে তখন একবারো জানাওনি। আর তখন পছন্দ ছিলো না কিন্তু এখন আছে।"
--"ভুলে যা।"
--"আম্মু।"
আহিয়ানের আম্মু আর কোনো কথা না শুনে খাবার খেয়ে উঠে যান টেবিল থেকে। সেদিন ভালোভাবে আর কারোরই খাওয়া হলো না।
--
সপ্তাহ ক্ষানেক পরের কথা। আহিয়ানের আম্মু নাহিয়ান আর রুহিকে ডেকে পাঠায় নিজের রুমে। নাহিয়ান যেতেই তিনি ওকে বসার জন্য ইশারা করলেন। নিঃশব্দে দুজনে খাটের দু পাশে বসলো। নাহিয়ানের আম্মু ভালো করে বসে বললেন,
--"মেয়েটার ছবি আছে তোদের কাছে?"
--"কোন মেয়েটা?"
--"তোর ভাই যাকে ভালোবাসে।"
--"আনিতার কথা বলছো? এক মিনিট দেখাচ্ছি।"
নাহিয়ান পকেট থেকে ওর ফোন বের করে গ্যালারি তে গেলো। আনিতার একটা ছবি বের করে ও ফোনটা ওর আম্মুর দিকে এগিয়ে দিলো। ওর আম্মু ফোন হাতে নিয়ে বেশ ভালোভাবে কিছুক্ষণ আনিতার ছবি দেখলো। তারপর নাহিয়ানের দিকে ফোনটা এগিয়ে দিয়ে বলে,
--"ভালোই। তবে এভাবে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। ওদের বাসায় জানিয়ে দিস কালকে ওকে দেখতে যাচ্ছি আমরা।"
--"ঠিক শুনলাম তো আম্মু?"
--"হ্যাঁ।"
রুহি ওর শাশুড়ীকে জড়িয়ে ধরে বলে,
--"তারমানে তুমি রাজি মা?"
--"হ্যাঁ রে। আমি রাজি। আমি তো আর আমার ছেলেকে আমার চোখের সামনে কষ্ট পেতে দেখতে পারি না। তবে হ্যাঁ ওকে এখন জানাস না। সারপ্রাইজ থাকুক ওর জন্য।"
--"ওকে আম্মু তুমি যা বলবে।"
খুশিতে রুহি আর নাহিয়ান দুপাশ থেকে ওর আম্মুকে জড়িয়ে ধরে। নাহিয়ানের আম্মু দুহাতে দুজনকে জড়িয়ে ধরে পর পর দুজনের মাথায় দুটো চুমু খায়।
।
।
।
চলবে।
[ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। আর গল্পটা কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন। হ্যাপি রিডিং🥰 ]