"ভালোবাসি মেঘা "(৯)



Bangla choti golpo - "ভালোবাসি মেঘা "(৯) - bangla love story - bangla life story
Bangla choti golpo - "ভালোবাসি মেঘা "(৯) - bangla love story - bangla life story


হাত মুঠি বদ্ধ করে ওপরে তাকাতেই অবাক হয়ে যায় শুভ,নিজের অজান্তেই বলে ওঠে, 

-- আরে অভি তুই? 

-- হ্যা আমি। 

-- সে তো দেখতে পারছি, কিন্তু এইভাবে পিছন থেকে কলারে ধরে পেলে দিলি কেন?

-- তোর ভাগ্য ভালো যে,আমি কেবল তোকে পেলছি, শুকুর কর যে এখনো মারি নি,,,!

-- কিন্তু তুই আমাকে মারবি বা কেন? কি করছি আমি?

-- কি করিস নি সেটা বল? 

-- মানে 

-- মানে, কথার সাথে কত দিনের রিলিশনে আছিস সেটা বল...!!

 অভির এমন প্রশ্নে হকচকিয়ে ওঠে শুভ,,ফ্লোরে বসে ছিলো,সেখান থেকে হাত জাড়তে জাড়তে ওঠে দাড়ায় সে,,,তারপর অভি দিকে তাকিয়ে বলে থাকে...

-- সা/লা আজ পযন্ত কাউকে প্রোফোজ ই করতে পারলাম না,,আবার নাকি রিলিশন। 

-- মিথ্যা বলিস না শুভ 

-- মিথ্যা বলতে যাবো কোন দুঃখে?আর আমি রিলিশন করলে কি তোকে বলতাম না?

-- সেটাই তো ভাবছি তুই আমার বেস্ট আর তুই রিলিশন করছিস, সেটা আমি জানি না,তা তো হয় না।

-- হুমম সেটাই তো,,কিন্তু তোকে কে  বললো এই মিথ্যা কথা টা?

-- কেউ বলে নি,,খাবারের টেবিলে তুই যেভাবে কথা কে বিয়ে করার কথা বলছিস আমি তো ভাবছি তোরা রিলিশনে আছিস..!

--আরে না। কোন রিলিশন নাই...কিন্তু

-- কিন্তু কি?

-- আমি মনে মনে কথা কে ভালোবাসি। যেটা কথা নিজেও জানে না। 

-- হুম,এতক্ষণে লাইনে আসছো বন্ধু, এইটা জানারই অপেক্ষায় ছিলাম।

অভির এমন কথায় শুভ চুপ হয়ে যায়,,অবশ্য চুপ থাকা ছাড়া উপায় বা কি?

শুভর এমন বাকরুদ্ধ অবস্থা দেখে অভি মৃদু হাসে,,মৃৃদু হেসে সে আবারো প্রশ্ন করে..

-- তুই যে কথা কে ভালোবাসি সেটা কি কথা কে বলিস? 

-- না কখনো বলা হয় নি 😓

-- কেন বলা হয় নি? ভালোবাসি যখন তখন বলে দে, তারপর দেখ কি হয়।

--ভয় করে যদি রাজি না হয়,,

-- আরে দুর, আগে বলে তো দেখ, তারপর দেখ কি হয়...

-- আচ্চা ঠিক আছে,বলবো,,তবে তুইও প্রমিস কর তুই আমাকে সব রকমে হেল্প করবি। 

-- সেই নিয়ে তুই চিন্তা করিস না।আমার বেস্টু প্রেম করবে আর আমি হেল্প করবো না,,তা তো হয় না।


কথাটা বলেই মুচকি হেসে চলে যায়,অভি....! এদিকে হাফ ছেড়ে বাচে শুভ,,যাক অবশেষে অভি কে জানানো তো হয়ে গেলো সে যে কথা কে ভালোবাসে। শুভ যখন ইন্টারে পড়ে তখন কথা মাত্র এইটে পড়ে,,প্রতি ভাবের মতো এবারো মামার বাসায় বেড়াতে এসেছিলো, ছোট কথা ছিলো খুবই চঞ্চল যা শুভর ভালো লাগতো,,তারপর সেই ভালো লাগা যে কখন আস্তে আস্তে ভালোবাসা পরিণত হলো,তা শুভ নিজেও জানে না।


সেদিন বিকালে,কথা আর মেঘা ছাদে বসে কথা বল ছিলো,তখন আগমন ঘটে অভির। হালকা মৃদু বাতাসে মেঘার চুল গুলো উড়ছিলো, যা দেখে অভির খুবউ ভালো লাগে,,তখন কথা গলা কেশে বলে ওঠে..

-- কি অভি ভাইয়া, এখানে কি তোমার?

-- কিছু না, এমনি তোমাদের ছাদটা দেখতে এলাম আর কি...

এবার কথা কিছুটা ঢঙ্গি ভঙ্গিতে বলে ওঠে,, 

-- ছাদ দেখতে এসেছেন,নাকি অন্যকে কাউকে খুজতে খুজতে ছাদে এসেছেন,, কোন টা??


অভি এবার কিছুটা  লজ্জা পেয়ে যায়,,কারণ কথা ঠিক ই বলছে,অভি মেঘা খুজতে খুজতেই ছাদে চলে এসেছে,,।কিন্তু সেটা তো স্বীকার করা যাবে না,,তাই এবার অভি কিছুটা ভাব নিয়ে বলে ওঠে...

-- আমি খুজবো, তাও আবার অন্য কাউকে,,ভাবো কীভাবে এই সব...?

 কথা বলেই অভি,  কথার গাছ থেকে একটা গোলাপ ছিড়ে আর সাথে সাথে চিল্লিয়ে ওঠে কথা...!

অভি বুকে শুকনো থুথু দিয়ে বলে ওঠে 

-- আল্লাহ, এইভাবে কেউ চিল্লানি দেয়?

কথা এবার রাগিরাগি লুক নিয়ে বলে ওঠে 

-- চিল্লাবো না তো কি করবো? আপনি আমার গাছের ফুল ছিড়েছেন কেন??

-- ছিঁড়েছি কারণ কানে দিবো..

-- কানে দিবেন?

-- হ্যা, এতে অবাক হওয়ার কি আছে 

কথা ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে বলতে থাকে,,

-- ছেলেরাও কি ফুল কানে দেয়?

অভি  কিছুটা কনফিডেন্স নিয়ে বলে 

-- হ্যা দেয়।

কথা কিছুটা লাফিয়ে ওঠে,,

--তাহলে আপনি দেন আমি ভিডিও করি...

কথা বলেই কথা সঙ্গে সঙ্গে ভিডিও অন করে দেয়।

আর অভি কিছুক্ষণ ফুলটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখে,তার আস্তে আস্তে ফুলটা কানে দেওয়ার ওপরে তুলে,,তারপর নিজের কানে না গুজে পাশে দাড়িয়ে থাকা মেঘার কানে গুজে দেয়,,অভির হাতের স্পর্শ পেয়ে মেঘা চমকে ওঠে,, পাশে অভির দিকে তাকাতেই চোখে চোখ পড়ে যায়,,দুজনেই দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে,কোন শব্দ নেই, একে অপরে যেন নিজেদের চোখের ভাষা বুঝতে ব্যস্ত....


-- বাহহ্! চমৎকার কি সুন্দর হযেছে ভিডিওটা,, একদুম সিনেমার মতো,,দারুন...

কথাটা বলেই লাফিয়ে ওঠে কথা,,,এদিকে কথার কথায় ধ্যান ভেঙ্গে অভি আর মেঘার,,দুজনে চোখ নামিয়ে,নিজে একটু ঠিকঠাক করে নিলো,,কথার দিকে তাকিয়ে অভি মৃদু হেসে ওঠলো,তারপর এক পালক মেঘার দিকে তাকিয়ে নিচে চলে গেলো...

তখন কথা মেঘার কাছে সে ফিসফিস করে বলে ওঠে

-- অভি ভাইয়া,নিশ্চয় তোকে ভালোবাসে,,! তুইও কি ভালোবাসি ভাইকে?

মেঘা নিচের দিকে তাকিয়ে,এক মুহূর্তে থমকে উওর দেয় 

-- নাহহ্...!! 


সেদিন সন্ধ্যায় সবাই সবার বাসায় ফিরে যায়,,যার ফলে একা হয়ে যায় কথা।তার একটু ভালো লাগছিলো না একা একা,,তাই শুয়ে শুয়ে ফেসবুকের নিউজ ফিড স্কল করছিলো ...কিন্তু মন তার এখনো ক্ষীণ হয়ে আছে।এই তো কালকেই তো এই সময়ে কত আড্ডা দিয়েছিলো চারজন,ডিনার করলো একসাথে কিন্তু এখন,,এখন সে একা একা শুয়ে আছে, পাথরের মতো।ভাবতেই বিরক্তে চেয়ে যায় কথার মুখ।


অন্য দিকে বাসায় ফিরে একটা লম্বা সাওয়ার নেয় মেঘা,,,ফ্রেশ হয়ে বেলকুনিতে গিয়ে খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে  লম্বা একটা শ্বাস নেয় সে।চুল গুলো হালকা ভেজা,যা বেয়ে হালকা হালকা পানি পড়ছে। তবে তার চেয়েও বেশি ভালো লাগছে চাঁদ টা কে,,এই চাঁদের আলোয় মুগ্ধ হয়ে যায় মেঘা,,পলক হীন ভাবে তাকিয়ে থাকে, সৌন্দর্যে ভরা সেই চাঁদের দিকে..!

এমন সময় আগমন ঘটে মেঘার আম্মুর,,হাতে কপি নিয়ে মেঘার পাশে দাড়িয়ে আছেন ওনি,,মেঘাই বলে ছিলো কপি আনার জন্য,,! মায়ের হাত থেকে কপিটা নিতে নিতে মেঘা বলে ওঠলো

--  ডিনার করছো?

মেঘার মা নিরব ভাঙ্গিতে বললেন

-- না, তোর সাথে খাবো।

তখন মেঘা কপিতে একটা চুমুক বসিয়ে, আবারো চাঁদ টার দিকে তাকিয়ে একটা ছোট্ট নিশ্বস পেলে বলে ওঠে 

-- আমি খাবো না,,তুমি খেয়ে নাও। 


 অন্যদিকে বাসায় ফিরে  বসে বসে ল্যাপটপে কাজ করছিলো শুভ তখন হঠাৎ করেই তার ফোন বেজে ওঠে,ফোন হাতে নিয়ে দেখো অভির কল...তড়িঘড়ি করে ফোন রিসিভ করে সে,,। 

ফোন রিসিভ করতেই অপর প্রান্ত থেকে অভি বলে ওঠে,, 

-- কি রে কি করছিস?

-- এই তো একটু কাজ করছিলাম।তুই?

-- কিছু না,,শুয়ে আছি। ভালো লাগছে না।

-- ভালো লাগবে কেইমনে, মেঘাকে তো দেখতে পারছিস না তাই না ভালো লাগার কথাও না।। 

-- ধুর, ফালতু কথা বাদ দে তো..!

-- আচ্চা দিলাম এখন...? 

--এখন মেঘার নাম্বার টা দে..

-- মেঘার নাম্বার তো আমার কাছে নেই...

-- মেনেজ করে দে...

-- আমি কিভাবে মেনেজ করবো? তুই এক কাজ কর, কথার সাথে কথা বলে মেঘার নাম্বার টা নে,,আমি কথার নাম্বার টা তোকে মেসেজ করে দিয়ে দিচ্ছি।

-- ওকে দে।


তারপর ফোন কেটে শুভর মেসেজের অপেক্ষায় থাকে অভি, তারপর মেঘার টিপ বেধে রাখা ফ্রেমটার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা ছাপা নিশ্বাস ছাড়ে অভি। 

তখন মেসেজ আসে শুভর,,কথার নাম্বার পাঠিয়ে সে।

অভি মুচকি হেসে নাম্বারে ডায়েল করে,, কথার থেকে মেঘার নাম্বার নেওয়া বেশ কঠিন হবে,সেটা সে ভালো করেই জানে,,হয় তো বা দিবেও না,,কিন্তু তাতে কি চেষ্টা করতে তো আর ক্ষতি নেই...!

এইসব ভাবতেই কল করে অভি,,কল বাজছে,কিন্তু অপাশ থেকে রিসিভ হচ্ছিলো না। বেশ কয়েকবার ফোন করার পরও যখন ফোন ধরছিলো না,,, 


তখন বিরক্ত নিয়ে অভি সিদ্ধান্ত নেয় আর একবার কল দিবে,এবার যদি রিসিভ না করে, তাহলে আর দিবে না..মনে মনে এই পণ করই কল দেয় অভি।


অভির পণ করা শেষ বারের কলটা,বেজে ওঠলো ঠিকি আর সাথে রিসিভও হলো...!


কিন্তু থ হয়ে যায় অভি...!!


চলবে?


[ গল্পটি কেমন লাগছে,অবশ্যই জানবেন..আর বেশি বেশি সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকবেন,,❤️হেপি রিডিং❤️ ]


Next part