Bangla Golpo pdf - ভালোবাসি মেঘা (১০) - bangla love story

 ভালোবাসি মেঘা (১০)

Bangla Golpo pdf - ভালোবাসি মেঘা" (১০) - bangla choti
Bangla Golpo pdf - ভালোবাসি মেঘা (১০) - bangla choti 


কিন্তু থ হয়ে যায় অভি..


আর থ হওয়ার কারণ হচ্ছে ওপাশের হ্যালো শব্দটা..কারণ হ্যালো টি বলেছে মেঘা। শুভর তো কথার নাম্বার দেওয়ার কথা ছিলো,তাহলে কল কিভাবে মেঘার কাছে গেলো? নাকি শুভ মেঘার নাম্বারই ওকে দিছে,হয় তো প্রথমে দুষ্টামি করে বলছে কথার নাম্বার।এই সব ভাবনায় আচ্ছন্ন ছিলো অভি,তখন মেঘা ওপাশ থেকে আবারো বলে ওঠলো 

-- কে বলেছেন? 

কণ্ঠে স্পষ্ট বিরক্তির ছাপ, যেটা অভি বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে। কিন্তু কল যখন দিয়েছে কথা তো বলতেই হবে,,তাই অভি এবার কিছুটা নড়ে চড়ে বসে বলে 

,-- মেঘা বলছেন?


মেঘা অবাক স্বরে উওর দেয় 

--জ্বী আমি মেঘা,,কিন্তু আপনি কে? 

অভি কি উওর দিবে ভেবে পায় না। পরিচয় দেওয়ার মতো কি বা এমন আছে তার..! তাই হালকা স্বরে বলে ওঠে 

-- আমি অভি..!

মেঘা প্রথমে কন্ঠ শুনেই বুঝতে পেরেছিলো এইটা যে  অভি,তারপরও শিউর হওয়ার জন্য প্রশ্নটা করে ছিলো,

এখন সিউর হয়ে  সে উওর দেয়... 

-- ওহহ আচ্চা..! তো কেমন আছেন?

-- এই তো ভালো,, আপনি?

-- জ্বী ভালো...

তারপর একটি দীর্ঘ শ্বাসের শব্দ শুনা যায়,,অভি হালকা মৃদু স্বরে বলে ওঠে 

-- কি করছেন?

মেঘা গম্ভীর ভাবে উওর দেয়

-- চাঁদ দেখছি,,আপনি?

-- টিপ দেখছি 

-- মানে?

অভি মেঘার প্রশ্নে মুচকি হাসে,,হেয়ালি ভাবে বলে ওঠে

-- মানে, কিছু না। রাত অনেক হয়েছে এবার ঘুমান।

-- জ্বী,আপনিও ঘুমান, বাই,


তারপর ফোন কেটে দেয় মেঘা। বিছানায় শুয়ে চোখ বুঝে,সেই বৃষ্টি ভেজা কাঠগোলাপ খোপায় বেলকুনিতে কাটানো সময় গুলো স্মৃতিচারণ করতে থাকে সে। আর মনে মনে ভাবে,আমাদের প্রত্যেকের জীবনে এমন কিছু মূহুর্ত থাকে, যা আমরা বার বার স্মৃতিচারণ করতে পছন্দ করি। আর সেই মুহূর্ত গুলোও এতটাই চমৎকার হয় যে,কখনো ভুলাও সম্ভব হয়ে ওঠে না.....!! 


সেদিনের পর অনেকদিন কেটে যায়,মেঘার সাথে অভির আর দেখা হয় না,কথা হয় না। মেঘা কেবল ভাবে,একটা মানুষ কি একটা মানুষের মায়ায় ক্ষণিকের জন্য পড়ে, নাকি অনন্ত কালের? 

সেদিন রৌদ্রেলা এক দুপুরে, বেলকুনিতে বসে সুন্দর এক বিকেল অনুভব করছিলো মেঘা,, প্রকৃতির কাছে সে যেন এক মহা আনন্দ খুজে পায়,যা সে কখনো প্রকাশ করে না।।সে দিনের সেই বৃক্ষ মেলা থেকে আনা গাছ গুলো,বেশ সুন্দর ভাবেই বেড়ে ওঠেছে,,দুই একটায় ফুলও ধরেছে। মেঘা মৃদু হাতের স্পর্শে ছুঁয়ে দেয় গাছ গুলো কে....! তারপর পাশে থাকা ফোনটি হাতে নিয়ে ভাবে, অভি কেন তাকে কল করে না? একদিন শুধু কল করেছে,তারপর থেকে আর কোন খুজ নেই,, একবার ভাবে সে নিজেই একটা কল দিবে,,আবার ভাবে কি না কি ভাবে...তারপর আর কল দেওয়া হয়ে ওঠে না।

এইভাবে আরো বেশ কিছুদিন যায়, অভি আর কল দেয় না,,মেঘা বেশ কয়েকবার কল দিয়েছে,কিন্তু অভি ফোন তুলে না,,মেঘার অভিমান জমে,সে ভাবে অভি হয়তো তাকে ভালোবাসা না,,সামান্য মুগ্ধতায় আটকে গেছিলো এখন সেই মুগ্ধতা নেই,,তাই কোন খোজও নেই,,তারপর দিনে দিনে মেঘা নিজেকে কিছুটা গুছিয়ে নেয়,অভির কল্পনা থেকে কিছুটা বেরিয়ে আসে...!!

ভার্সিটিতে বসে আড্ডা দিচ্ছিলো মেঘা আর কথা, তখন পাশে শিউলি গাছ থেকে কয়েকটা ফুল ঝড়ে পড়ে,,তেঘা মনে মনে ভাবে আজ এখানে যদি অভি থাকতো তাহলে হয় তো,এই ফুল গুলো কুড়িয়ে তার খোপায় খুজে দিতো,,বিষয়টা কল্পনা করেই মৃদু হাসে মেঘা। মহান এই ভাবনার ঘুরে  কল বেজে ওঠে মেঘা,তড়িগড়ি করে ফোন ওঠিয়ে দেখে অভির কল,,সাথে সাথে অভিমানে চেয়ে যায় মেঘার সমস্ত মুখ।এত দিন পর কল করার কি প্রয়োজন? কল কেটে দেয় মেঘা....! পাশে থাকা কথা ব্যাপারটা দেখেও না দেখার ভান করে থাকলো।তখন  পিছন থেকে মেঘার পাশে এসে বসলো অভি,,মেঘা পাশে তাকাতেই অভাবের শেষ পযায় পৌছে যায়,এই মাত্র কল দিলো,আবার এই মাত্র এসে হাজির কি ভাবে সম্ভব?? কিন্তু সে অবাক প্রকাশ করলো না,প্রকাশ করলো,এক পাহাড় অভিমান,মুখ ঘুরিয়ে বসে রইলো,অভিকে দেখেও না দেখার ভান ধরলো,,অভি ব্যাপার টা বুঝতে পেরে, শিউলি ফুল গুলো কুড়িয়ে আনে,,একটা একটা করে সব গুলো ফুল গাঁথতে গাঁথতে বলে ওঠে

-- অভিমান করেছো?

মেঘা উওর দেয় না।কথা ওঠে বলে চলে যায়।তখন অভি আবারো বলে 

-- অভিমান করো না,,আমি বাপু অভিমান ভাঙ্গাতে পারি না। তবে এই টুকু বলতে পারি,তোমাকে নিয়ে যাওয়ার আয়োজনেই  মগ্ন ছিলাম এত দিন। 

মেঘা অবাক হয়ে তাকায়,,অভি মুচকি হাসে,,হালকা ঝুকে মুখ খানি মেঘার কানের পাশে এনে ফিসফিস করে বলে 

-- ভালোবাসি মেঘা 


মেঘা অভির এমন কথায় নড়েচড়ে বসে,অভিমানে দুচোখ বেয়ে অশ্রু বির্সাজন দেয়। তারপর চিৎকার করে বলে ওঠে।

-- আমি তোমাকে ভালোবাসি না,,চলে যাও এখান থেকে...! 

অভি অবাক, তার প্রিয়তমার মনে যে অভিমান জমেছে....! তাই অপরাধীর কন্ঠে বলে ওঠে...


-- তোমাকে শিউলি ফুল বেশ সুন্দর লাগছে


অভির এমন প্রেমময় কথায় মেঘা গলে না।শক্ত পাহাড়ের মতো...ওঠে দাড়ায়,এক পা দু পা পেলে চলে যাওয়ার চেষ্টা করছে,,তখন অভি পিছন থেকে বলে ওঠে

-- বলে যাচ্ছো যাও,,তবে অভিমান কেমন করে ভাঙ্গাতে হয় তাও কিন্তু আমি জানি...!!


মেঘা উওর দেয় না,কান্না করে যাচ্ছে,তার প্রশ্ন একটাই,কেন অভি ওকে এতদিনে একটা কলও দেয় নি?ভালো যখন বাসেই তখন কেন রাখে নি প্রিয়তমার খুজ? মেঘা কিভাবে বুঝাবে সে যে অভি কে ভালোবাসে,তার এই ছোট্ট বোকামিটা যে সে মেনে নিতে পারছে না।


কথা বুঝতে পারে ব্যাপার টা আসলে তারা দুজন ই দুজন কে ভালোবাসে শুধু বলতে পারছে না...! 

সে দিন রাতে কথা মেঘাকে কল করে, মেঘা তখনও কাদছে অভির বিরহে..কিন্তু কথাকে তা বুঝতে দেওয়া যাবে না...তাই গলা হালকা করে বলে ওঠে 

-- এই কথার বাচ্চা এত রাতে কল দিছিস কেন?কি হইছে?

কথা আনন্দের সুরে বলে,

-- আরে কি হয় নি সেটা বল 

-- মানে? 

-- মানে হচ্ছে,কাল শুভ আমাকে রেস্টুরেন্টে যেতে বলছে.... 

-- কিন্তু কেন?

কথা হালকা ভেবে উওর দেয় না

-- সেটা তো জানি না,, তবে আমি যাবো

-- কেন যাবি? 

-- কেন যাবো তুই জানোস না? 

মেঘা হালকা ভাব নিয়ে বলে 

-- জানি তো,,আপনি যে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছেন সেটা তো ভালো করেই জানি,,কিন্তু সমস্যা হলো তুই বলে দিচ্ছিস না কেন তুই সে ওকে ভালোবাসি?

কথা গম্ভির সুরে বলে 

-- সময় হলেই বলবো,তোকে এত ভাবতে হবে না,তুই শুধু রেডি থাকিস, তোকে নিয়ে যাবো,

-- আমাকে কেন কাবাবের হাড্ডি হিসেবে নিচ্ছিস

কথা মৃদু চিৎকার দিয়ে বলে 

-- বেস্টু না তুই? জীবনের প্রতিটি ক্ষণে থাকবি তুই, সাথে এবার যে ই থাকো কেন....! 

-- বাহবা, আস্তে আস্তে,,এত চিৎকার করতে হবে না,যাবো আমি,,

-- মনে থাকে যেন

--হুমম

-- আচ্চা তাহলে রাখি 


বলেই ফোন কেটে দেয় কথা,মেঘা মৃদু হাসে,,এই কথা মাঝে মাঝে এমন কীর্ত করে যে,, না হেসে উপায় থাকে না....!


তার পরের দিন মেঘা আর কথা এক সাথে বের হয়,রেস্টুরেন্টে যাবার উদ্দেশ্যে দুজনে রিক্সায় ওঠে,,মেঘা চুপিচুপি কথা কে বলে,আজকে যদি প্রফোজ না করিস তাহলে তোর একদিন কি আমার একদিন,,সেই ছোট্ট বেলা থেকে শুভকে ভালোবাসি আর এখনো পযন্ত বলতেই পারলি না,,হতভাগি কোথাকার....! মেঘার এমন কথায় কথা মৃদু হাসে,সত্যি তো সে তো শুভ কে ভালোবাসে কিন্তু কেন সে বলতে পারছে না? তার কি সবটা বলে দেওয়া উচিত না?


এইসবের মাঝেই রিক্সা এসে রেস্টুরেন্টে এর সামনে পৌছায়,,দুজনে নেমে রেস্টুরেন্টে ঢুকে,,শুভ এখনো আসে নি... তাই মেঘা আর কথা দুজনেই গুমড়া মুখ করে বসে আছে,,ইতিমধ্যে কথা দু কাপ চায়ের অডার দিয়েছে,, চায়ের কাপে মৃদু চুমুক দিয়ে বলে ওঠে 

-- শুভ তো এলো না এখন কি করবি?

কথা কিছু একটা ভাবার ভান করে বলে ওঠে 

-- সেটাই তো,,কি করা যায়,,কি করা যায়?? আইডিয়া চল .........! 

-- কোথায়?

-- গেলেই দেখবি,

কথাটা বলেই কথা মেঘার দুচোখে তার হাত বিছিয়ে দেয়,,অন্ধকার হয়ে ওঠে মেঘা দু চোখ...

মেঘা চটপট করতে করতে বলে ওঠে 

-- কি করছিস টা কি? ছাড়...

কথা ছাড়ে না,,মেঘা টেনে সিড়িয়ে ওপরে ছাদে নিয়ে যায়...! 


মেঘার চোখ থেকে কথা হাত সরিয়ে বলে ওঠে....


---- সারপ্রাইজ......!


চলবে?


Next part 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.