ভালোবাসি মেঘা (৫)
Bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৫) - love story - life story |
ফোন রিসিভ করতেই কথা রাগারাগি কন্ঠে বলে ওঠে
-- আজ ভার্সিটিতে কেন আসোস নি?
মেঘা শান্ত গলায় বলে ওঠলো
-- আম্মুকে নিয়ে একটু বাইরে বের হইছিলাম তাই যাই নি....কেন কিছু হইছে?
-- নাহহ্ কিছু হয় নি 😒 শুধু ইকটু মনে হইছিলো যেন মরভূতি বসে আছি...!
কথার এমন কথা শুনে,, মেঘা উচ্চ স্বরে হেসে ওঠে....কারণ মেঘা ভালো করেই জানে, মেঘা ভার্সিটিতে না গেলে কথার দিনটা'ই নিরামিষ হয়ে যায়...! আর বান্ধুবীকে ছাড়া একা একা ভার্সিটিতে বসে থাকা মানে মারুভূমিতে বসে থাকা...! এদিকে কথার মেঘা ছাড়া আর কোন ফ্রেন্ডও নেই,,এই একটা মাত্র ফ্রেন্ডই আছে যাকে সে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পারে...।
মেঘার এমন উচ্চ স্বরে হাসি দেখে কথা আরো কিছুটা রেগে যায়...রাগে পুসপুস করতে করতে বলে ওঠে..
-- ভার্সিটি মিস দিয়ে এখন হাসা হচ্ছে?? কালকে যদি ভার্সিটি মিস দেস তো,তাহলে তোর একদিন কি আমার একদিন.. হত/চ্ছাড়ি কোথাকার....
কথা টা বলেই ফোনটা কেটে দেয় কথা....এদিকে কথার এমন কান্ড দেখে,,একা একা হাসতে থাকে মেঘা।
পরের দিন ভার্সিটিতে হাজির হয় মেঘা...
মাঠে বসেই দুই বান্ধুবী আড্ডা দিচ্ছিলো,,তখন কথা বলে ওঠে...
-- আম্মু বলছে, তোকে আজকে আমাদের বাসায় নিয়ে যেতে....।
মেঘা কথার দিকে তাকিয়ে ব্রু উচিয়ে জিঙ্গাসা করে,,
---কেন? কেন?আন্টি হঠাৎ এত জরুরি তলব কেন?
-- আজকে আমার কিছু মেহমান আসবে তাই তোকেও দাওয়াত দিলো আর কি...
-- ওহহ আচ্চা....কিন্তু আমি তো যেতে পারবো না..।
-- কেন? কেন?
-- আমার একটা জুরুরি কাজ আছে বিকালে..।
-- তোর আবার জুরুরি কাজ...😑 আমি ওত শত বুঝি না,তুই আমার সাথে যাচ্ছিস,মানে যাচ্ছিস,এটাই ফুল এন্ড ফাইনাল..।
তারপর মেঘা যেতে না চাইলেও, কথা ওকে কিছুটা জোর করেই নিয়ে যায়....
কথাদের বাড়িতে আসতেই দরজা খুলে দেয় কথার আম্মু, মেঘা কথা আম্মুর সাথে সেখানে দাড়িয়ে'ই সামান্য ভাব বিরনময় করে নেয়...! কথার আম্মু সাহদরে ওদের কে ভেতরে ডাকে...!
তখন মেঘা আর কথা,কথার আম্মুর পিছনে পিছনে ড্রয়িং রুমে আসে,,আর ড্রয়িং রুমে আসতেই বিশাল বড় শক খায় মেঘা আর কথা,,কারণ ড্রয়িং রুমে বসে আছে, কথার ফুপি,ফুপা,আর সাথে কথার ফুপা তো ভাই শুভ,,আর শুভর পাশে বসে আছে শুভর বন্ধু অভি...।
এদিকে অভি বসে বসে জোস খাচ্ছিলো, মেঘাকে দেখে সেও কিছুটা হা হয়ে গেছে,এখানে এসে যে মেঘার দেখা পাবে সেটা সে স্বপ্নেও কল্পনা করে নি...।
তখন শুভ অভিকে হালকা ধাক্কা দিয়ে ফিসফিস করে বলে ওঠে,,,
-- মামা,হা বন্ধ কর, না হলে মাচি-টাচি পেটে চলে যেতে পারে...।
শুভ কথায় হুশ ফিরে অভির,মুচকি হেসে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে সে...তখন কথার ফুপি বলে ওঠে..
-- কিরে কেমন আছিস কথা?
-- এই তো ভালো ফুপি..তুমি কেমন আছো?
-- হুমম ভালো...
তখন কথা ওর ফুপার দিকে তাকিয়ে জিঙ্গাসা করে
-- কেমন আছেন আঙ্কেল?
-- এই তো আলহামদুলিল্লাহ ভালো,,তুমি কেমন আছো মামুনি?
-- জ্বী ভালো...
কথা এবার শুভ দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বলে ওঠে
-- আরে শুভ ভাই কেমন আছো?
-- ভালো,তুই?
-- হুমম ভালো
-- কখন আসছো তোমরা?
-- এই তো দশ মিনিট হবে..
-- ওহহ আচ্চা
-- তোর সাথে এটা কে রে কথা?
-- ওহহ পরিচয় করিয়ে দেই,ও হচ্চে আমার বান্ধুবী মেঘা,,
আরে মেঘা ওরা হচ্ছে আমার ফুপি,ফুপি আর ফুপবতো ভাই,
মেঘা তখন ওদের দিকে তাকিয়ে ভদ্রতার খাতিরে মুচকি হাসে,, কিন্তু কাউ না বুঝলেও কথা বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারছে,মেঘা যে রাগে গিজগিজ করছে তাই সে কথা এড়াতে বলে ওঠে,
--তোমরা বসো,আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি,পরে কথা হবে,
কথাটা বলেই মেঘাকে নিয়ে রুমে চলে আসে কথা। এদিকে রুমে আসতেই,,অগ্নি চোখে মেঘা তাকিয়ে থাকে কথার দিকে,তখন কথা বলে ওঠে
-- বিশ্বাস কর দোস্ত, আমি জানতাম না,এখানে যে অভি ভাইয়া আসবে...।
-- না জেনে আমাকে নিয়ে আসছি কেন? আগে তো জানবি কে কে আসবে,তারপর না এনবি,,হত/চ্ছাড়ি কোথার,,তোমাকে তো আমি আজ মেরেই পেলবো...
কথাটা বলেই মেঘা ধেয়ে যায় কথার দিকে,এদিকে কথা প্রাণ রক্ষার্থে দৌড়ে গিয়ে ওয়াশরুমে ডুকে,,মেঘা রেগে দরজায় একটা মৃদু লাথি দিয়ে বলে ওঠে,
--আজ তুই বের হ,,কথার বাচ্চা,,তারপর বুঝবি কত ধানে কত চাল...!!
কথাটা বলেই রাগে পুসপুস করতে থাকে মেঘা....।
অন্যদিকে শুভ অভিকে ফিসফিস করে বলে ওঠলো,,
-- কেমন লাগলো,আমার সারপ্রাইজ মামা??
-- সা/লা তুই আগে বলবি না?
-- আগে আর কি বলতাম? অবশ্য আমি নিজেও জানতাম না এইভাবে যে তোর মেঘার সাথে দেখা হয়ে যাবে,, আসলে ঐদিন বৃক্ষ মেলায় তুই যখন কথার সাথে ধাক্কা খেলি, তখন আমি ওপাশ থেকে সবটাই দেখেছিলাম,তখন কথা আমাকে খেয়াল না করলেও আমি কথাকে দেখে ছিলাম,,কিন্তু তখন এমন অবস্থা ছিলো যে কথার সাথে কথা'ই বলতে পারি নি...!!তারপর ভেবে ছিলাম তুই যেহেতু মেঘাকে পছন্দ'ই করিস, তাহলে এখানে এসে কথাকে পটিয়ে টটিয়ে মেঘার সাথে দেখা করিয়ে দেবো,,কিন্তু সেটা আর করতে হলো না মেঘা নিজেই এসে হাজির হয়ে গেলো....!
-- আহা..! তোর তো ফ্রেন্ড যাতে ঘরে ঘরে হয় দোস্ত...পাউডার থুক্কু পাউন্ড অফ ইউ দোস্ত.....।
ওদের এই কথপোকথনের মাঝেই শুভর মা বলে ওঠে....
--- এই তোরা কি এত ফিসফিস করছিস?
শুভ আর অভি দুজনেই নড়েচড়ে বসে বলে ওঠে...
-- কই না তো,কিছু না....।
খাবারের টেবিলে বসে আছে, শুভ, অভি, শুভর বাবা, তখন আগমণ ঘটে মেঘা আর কথার, কথা মা বললো
-- তোরা দুজনোও বসে পর, তোরা খাওয়ার পর আমরা খাবো....!
এদিকে মেঘার বেশ বিরক্তই লাগলে অভির সাথে এক টেবিলে বসতে,কিন্তু এখন কিছু বলাও যাবে না,ভদ্র খাতিরে এক টেবিলে বসতেই হবে....।
অভির উল্টো দিকে বসেছে মেঘা, তার পাশে বসেছে কথা,, সবাই বেশ মন দিয়ে খাবার খাচ্ছিলো,,তখন শুভ একটা এলাচি হাতে নিয়ে বলতে লাগলো...
-- পৃথিবীর যত এলাচি আছে,সব মনে হয় আমার জন্যই তৈরি হয়েছে,,যেখানে যখনই খেতে বসি না কেন,সর্বদাই আমার পাতে এসে পড়ে, কচুর এলাচি...।
পাশে পানি খাচ্ছিলো অভি,শুভ এমন কথা শুনে তার হাসি পেয়ে গেলে,,এদিকে হাসতেও পারছে না,পনিও খেতে পারছে না,,যার সুবাদে ,মুখের সবটুকু পানি গিয়ে পড়লে সামনে বসে থাকা মেঘার মুখে....!
এমন কান্ড দেখে উপস্থিত সকলে না চাইতেও হেসে পেলে,এদিকে মেঘা আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে রাগে টেবিল থেকে ওঠে চলে যায়....।
তখন শুভর মা অভিকে পিঠে থাপ্পর মেরে বলে ওঠে
-- এখনো পানি খাওয়াও শিখলি না,,দিলি তো মেয়েটার খাওয়ার বারোটা বাজিয়ে...
অভি শুভর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে
-- আমার আর দোষ কি? শুভ এমন হাসির কথা বলছে যে,আমি আর হাসি কন্ট্রোল করতে পারি নি,,তাই তো এমন হলো...!
শুভর মা এবার শুভর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠলো,,
-- দিন কে দিন,,বাদরে পরিণত হচ্ছিস,,কি যে করি তোদের নিয়ে...
তখন কথার মা বলে ওঠলো
-- আহা,,ওদের কে আর বকে কি হবে,,যা হবার তো হয়ে গেছে,বাদ দেও,মেঘাকে আমি বুঝিয়ে বলবো...!
তখন অভি বলে ওঠলো...
-- হ্যা আমিও ওকে সরি বলে দিবো,আমি তো আর ইচ্ছা করে এমন করি নি...!!
পাশে বসে সব শুনছিলো কথা,,তখন.......!
চলবে?