bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৪) - bangla love story - bangla life story

 

ভালোবাসি মেঘা (৪)

bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৪) - bangla love story - bangla life story
bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৪) - bangla love story - bangla life story 


l

ভয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম এসে জমা হয় অভির কোপালে.....


কারণ ওর সামনে ভয়ংকর ব্যাথায় কুকরাচ্ছে মেঘার বান্ধুবী কথা আর পাশে দাড়িয়ে দাঁত কিড়মিড় করেছে মেঘা,,,,!!

হায় রে কোপাল পৃথিবীতে এত মানুষ থাকতে কি না,এই মেয়ের সাথেই ধাক্কা খেলাম., আজকে সিউর কোপালে দুঃখ আছে,কার মুখ দেখে যে ঘুম থেকে ওঠে ছিলাম আল্লাহ'ই জানে,,এই সব'ই বিড়বিড় করছিলো অভি,, তখন  মেঘা  বলে ওঠলো...


-- চোখে দেখেন না? চোখের কি মাথা খাইছেন? দেখে চলতে পারেন না? 


-- চোখের মাথা খাওয়া যায় ? আপনি খেয়েছেন? আচ্চা এটা খেতে কেমন? ( দুষ্টামির চলে কথাটা বলে অভি)


--- ফাজলামো করেন? একে তো দোষ করেছেন তার ওপর আবার ত্যাড়ামো করছেন,, সাহস তো কম না,...! আপনি চিনে আমাকে,আমি কে?

-- না চিনি না তো,,শুধু নামটা এ জানি,,তবে চিনতে বেশ ইচ্ছুক, যদি আপনি চিনান আর কি... বেশ উপকার হতো🤐

কথাটা বলেই অভি কথার সামনে যায়,, কথাকে টেনে তুলে,বিনয়ের সাথে বলে,,


-- সরি,,আসলে আমি খেয়াল করি নি,,পায়ে কি খুব বেশি ব্যাথা লেগেছে? 

-- নাহহ্,চলবে,,খুব একটা লাগে নি,,ইটস্ ওকে।

--সত্যি খুব দুঃখিত,আমি খেয়ালই করি নি,

-- হুমম বুঝতে পারছি,,আপনি এই ভাবে বলবেন না প্লিজ,দোষটা আমারও ছিলো,আমিও খেয়াল করি নি

-- ওহহ আচ্চা।তা আপনি তো খুবই মিষ্টি স্বভাবের লোক কিন্তু আপনার ফ্রেন্ড এত তেতো স্বভাবের কেন? লোকে কি ইচ্ছে করে ধাক্কা দেয় বলেন তো? 


কথাটা যেহেতু মেঘাকে উদ্দেশ্য করে বলেছে,তাই মেঘার রাগ আরো কয়েকশ গুণ বেড়ে যায়,,রাগে কিড়মিড় করতে করতে সে কথার হাত ধরে হাটা শুরু করে দেয় ,,আর বিড়বিড় করে বলতে থাকে 

-- এই শহরে ফালতু লোকের অভাব নেই....!!


এদিকে মেঘার এমন কান্ড দেখে,মুচকি মুচকি হাসতে থাকে অভি...!!

অপরদিকে হা করে তাকিয়ে চেয়ে আছে শুভ,,কোথায় থেকে কি হয় গেলো শুভ কিছুই বুঝতে পারছে না,,তবে এইটা যে সেই মেঘা  সেইটা সে ভালো করেই বুঝতে পেরেছে..। 

-- কি রে ভাই আমি বিপদে হামাগুড়ি খাচ্ছিলাম,আর তুই কি না দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছিলি..! তুই তো ভাই দোস্ত নামের কলঙ্ক....


অভি কথায় ঘুর ভাঙ্গে শুভর,হকচকিয়ে ওঠে বলে,,

-- মামা, এটাই কি সেই মেঘা...?

-- হুমম এটাই সেই মেঘা। মেঘা রানী (কথা টা বলেই মৃদু হাসে অভি)

--মামা...এটা তো পুরাই পরী,, তোর সাথে বেশ মানাবে ..! 

--কি যে বলস না তুই? নাম ছাড়া আর কিছুই জানি না,,আর তুই কি না,মানা মানিতে চলে গেছিস..


--- আরে পেয়ে যাবি পেয়ে যাবি,ঠিকানা,এড্রেস, নাম্বার সব পেয়ে যাবি,দিলে যখন টান লাগছে তখন এইসব কিছু এ না...


-- দুর কি যে বলস না তুই,,বাদ দে,,চল বাসাই যাই,খুব ক্ষিধে লাগছে....!!


সেদিন রাতে, ছবি রাখার খালি ফ্রেম নিয়ে বাসায় ফিরে অভি,, অভির মা দরজা খোলেই হা করে তাকিয়ে আছে, অভি এইসব কি শুরু করেছে বুঝে ওঠতে পারছেন না তিনি,, ছেলে ছবির ফ্রেম এনেছে অথচ এতে কোন ছবি নেই, খালি ফ্রেম....মায়ের এমন অবস্থা দেখে,  অভি কিছুটা নাক মুখ কুচকে বলে ওঠে,..


-- এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন? হা করে কি দেখো?

-- পরিবর্তন 

-- কিসের পরিবর্তন? 

-- আমার ছেলের

-- ধুর কি সব বলছো? আমার আবার কিসের পরিবর্তন? 

-- কিসের পরিবর্তন? এই যে খালি ফ্রেম নিয়ে আসছিস,,ছবি ছাড়া খালি ফ্রেম দিয়ে  কি করবি? দিন দিন কি সব আদ্ভুত আচারণ করছিস? 

-- আরে মা,,তোমাকে কি ভাবে বুঝাই বলো তো...

-- থাক আমাকে আর বুঝাতে হবে,,তোর যা ইচ্ছে হয় কর,আমার কি....


কথাটা বলেই অভির মা রান্না ঘরের দিকে চলে গেলো...এদিকে অভি দ্রুতে রুমে এসে দরজা চেপে বসে,,যত্ন সহকারে তুলে রাখা টিপ টা নামিয়ে, জলদি করে ফ্রেমের মাঝখানে আটকে দেয়,,ছোট্ট একটা ফ্রেমের মাঝখানে ছোট্ট একটা কালো টিপ,,অভির বেশ ভালোই লাগছে....কিন্তু এই ফ্রেম তো এইভাবে রাখা যাবে না,,মা দেখলেই বিপদ।তাই অভি ফ্রেমটা কে আলতো করে আলমারির ওপর ছোট্ট একটা বাক্সে রেখে দেয়,,! এত উচ্চু থেকে ওর মা বাক্সটাকে  নামাতেও পারবে না আর দেখতেও পারবে না কি আছে এতে...! তাই কিছুটা বিপদ মুক্ত...!


ঝলমলে একটা সকাল,,রৌদ্র বেশ ভালোভাবেই ওঠেছে,এই কয়েকদিনের হালকা মেঘ মেঘ ভাব কেটে রৌদ্র ওঠায়,মেঘার বেশ ভালোই লাগছে,,।

তাই কপি হাতে বারান্দায় গিয়ে দাড়ায় মেঘা, এমন ঝলমলে সকাল যে মেঘার দেখতেও ভালো লাগে...! কাল মেলা থেকে নিয়ে আসা গাছ গুলোকেও বেশ সুন্দর লাগছে এই মৃদু আলোতে...মেঘা বেশ কয়েকবার খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে থাকে গাছ গুলোকে...!! হালকা পানিতে বেশ সুন্দরই লাগছিলো...! তখন মেঘার মা এসে মেঘার পাশে দাড়ায়...মেঘা তার মায়ের দিকে একবার তাকিয়ে আবারো সামনের বিশাল আকাশের দিকে চোখ রাখে... তখন মেঘার মা বলে ওঠে....


-- মেঘা

-- হুমম শুনছি,, বলো....

--ভার্সিটিতে যাবি না?

-- না মা,,আজ ভালো লাগছে না,যাবো না....!

-- ওহহ আচ্চা... 

-- হুম

তারপর আরো বেশ কিছুক্ষণ মেঘার পাশে নিশব্দে দাড়িয়ে থাকে মেঘার মা... কি জানি মনে মনে কি ভাবছে.... কয়েকটা দীর্ঘ শ্বাস পেলে বলে ওঠে... 


-- আমার সাথে একটু বাইরে যাবি?

-- বাইরে? কোথায়..?

-- এই তো সামনেই লেকের পাড়ে,,ভালো লাগছে না,একা একা বাড়িতে,,তোর বাবাও তো বাসায় থাকে না,ব্যবাসার কাজে  এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায়,চল না একটু বাইরে থেকে ঘুরে আসি....


মেঘা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকর, সত্যি তো,এই মাহিলাটা সারা দিন ঘরে বসে থাকে,,এটা ওটা কাজ করেই যাচ্ছে..একটু বাইরে নিয়ে গেলে মন্দ হয় না...ওনার ও অধিকার আছে,এই মুক্ত বাতাসে ঘুরে বেড়ানোর...

তাই মেঘা আর কিছু না ভেবেই বলে দিলো...


-- তুমি রেডি হয়ে নেও,আজ সারা দিন তোমাকে নিয়ে ঘুরবো,বাইরে খাবো...রান্না করার দরকার নেই....!


কথা টা বলেই ওয়াশ রুমে চলে যায় মেঘা....ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয় সে,,পড়নে হালকা আকাশি রঙ্গের একটা জামা,সাথে হালকা লিপস্টিক আর আইলানার, চুল গুলো ছেড়ে দিয়েছে পুরো পিঠময়,,, আয়নার দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবছে মেঘা,,কি জানি কি কম হয়ে গেছে.? কিছুক্ষণ নিজেকে পর্যবেক্ষণ করতেই মনে পড়লো,টিপ দেওয়া হয় নি,,তাই দ্রুত ছোট্ট একটা কালো টিপ পড়ে নিলো,,এবার ঠিক আছে, একদুম পরিপাটি...! 

চুড়ি গুলো পড়তে পড়তেই নিচে নামে মেঘা,, সোফায় বসে ছিলো মেঘার মা, মেঘাকে দেখার সাথে সাথেই ওঠে দাড়ায়,,মেয়ের সৌন্দর্যে নিজেই মুগ্ধ হয়ে গেলেন,,মনে মনে বলতে লাগলেন,,মেয়েটার সৌন্দর্য দিন দিন বেড়েই চলেছে....নিজের চোখের নিচ থেকে কাজল নিয়ে মেয়ের চুলের ভাজে লেপে দিলেন মেঘার মা...আর মেঘা বিরক্ত নিয়ে এইসব দেখাই যাচ্ছে...!বিষাদময় মুখ নিয়েই বলে ওঠলেন...


-- এবার কি যাবে,নাকি এইসব করেই যাবে??

মেঘার মা তাড়া দিয়ে বললেন,,

-- এই তো আমি রেডি,, চল 

বলেই দুজনেই বেরিয়ে পড়লেন..... 


রিক্সায় পাশাপাশি বসে আছে মেঘা আর মেঘার মা...মেঘার কেন জানি না,আজ শহরটাকে বেশ ভালো লাগছে,,মৃদু বাতাসে উড়ে বেড়াচ্ছে তার চুল,তারই সাথে পাল্লা দিয়ে নড়ছে তার দু কানের দোল....!

রিক্সা এসে থামে লেকের পাড়ে, মেঘা আর মেঘা মা নেমে সেখানে গিয়ে বসে,,পাশ দিয়ে হাটে যাচ্ছিলো ফুল বিক্রেতা,মেঘা তাকে ডেকে একটা বেলি ফুলের মালা কিনে নেয়,, মুচকি হেসে সেটা তার মায়ের খোপায় পড়িয়ে দেয়,,মা আপত্তি জানলেও মেঘা তা শোনে না,চুপচাপ খোপায় গুজে দেয় সেই ফুল....তার পর এক সাথে ফুসকা,ঝাল মুড়ি খাওয়া হয়....লোকে দেখে চলেছে মা -মেয়ের কান্ড, কে বলবে এরা মা মেয়ে? বলবে কোন এক ক্লোস ফ্রেন্ড.....! আইসক্রিম হাতে হাটছে মেঘা আর মেঘার মা,,তখন হলকা মৃদু সুরে মেঘার মা বলে ওঠে 

-- আচ্চা মেঘা, একটা সত্যি কথা বলবি?

-- মিথ্যা বলছি কি কখনো?

--না তা বলিস নি,,তারপরও

-- তারপরও কি?

-- কিছু না....

তারপর ২-৩ মিনিট চুপ থেকে মেঘার মা আবারো বলে ওঠে,

-- তোর কি কোন ছেলে ফ্রেন্ড আছে?

মেঘা কিছুটা অবাক হয়ে মায়ের দিকে তাকায়, 

তখন মেঘার মা আমতা আমতা করে বলে ওঠে

-- না মানে, থাকে না অনেকের, ক্লোজ ফ্রেন্ড,ছেলে ফ্রেন্ড তাই জিঙ্গাসা করলাম আর কি,,তোর আছে কি না?

-- না আমার কোন ছেলে ফ্রেন্ড ট্রেন্ড নাই...ফ্রেন্ড বলতে আছে কেবল কথা...

-- ব্যাস হয়ে গেলো, এই জন্মে আর মেয়ের বিয়ে খাওয়া হবে না.....


চোখ পাকিয়ে ওঠে মেঘা,,মা রাস্তার মাঝখানে এইসব বলছে,,রাগে কিছু বলতেও পারছে না মেঘা....


সেদিন বাইরে ঘুরাঘুরি করে, রাতে বাসায় ফিরে মেঘা আর মেঘার মা,,বাইরে থেকে খেয়ে এসেছে দুজনে,,তাই 

মেঘা রুমে এসে ফ্রেশ হয়েই শুয়ে পড়লো মেঘা,,ঘুমে চোখ নিবোনিবো করছে তার, চোখ  বুজলেই ঘুম নিশ্চিত, তখন পাশ থেকে ফোনের শব্দ ভেসে আসে মেঘার কানে, ফোন রিসিব করতেই.....!!


Next part 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.