Bangla Golpo - বোকা প্রেমিকা পার্ট১৪ - banhla choti - love story - life story

বোকা প্রেমিকা

পার্ট১৪

Bangla Golpo - বোকা প্রেমিকা পার্ট১৪ - banhla choti - love story - life story
Bangla Golpo - বোকা প্রেমিকা পার্ট১৪ - banhla choti - love story - life story 


নিস্তব্ধ গভীর রাত।বর্ষণকে খাবারের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে গ্যারেজে এসেছে জল।রিশাদ আর সাদ তখন বাঁধা অবস্থায়ই ক্লান্ত শরীর নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে।দুজনকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখে জলের মেজাজ বিগড়ে যায়।রাগে সজোরে লাথি মারে সাদ আর রিশাদকে।ঘুমন্ত অবস্থায় লাথি খেয়ে চমকে উঠে সাদ, রিশাদ। ঘুম ঘুম চোখে গ্যারেজের লাইটের আবছা আলোয় কোনো রমনীর ছায়া দেখতে পায় রিশাদ,সাদ।রমনীর হাতে বড় আকারের ছুরি।এমন ভাবে সে ছুড়ি ধরে আছে যেন এক্ষনি ওই ছুরি দিয়ে রিশাদ আর সাদকে আঘাত করবে।রিশাদ আর সাদকে জল যেখানে রেখেছিলো সেখানে রয়েছে বিষাক্ত লাল পিঁপড়ের বাসা।সেগুলো কামড়ের জ্বালায় রিশাদ, সাদ গোঙাচ্ছে।চিৎকার করতে চাইছে তারা কিন্তু পারছে না।মুখে কাপড় ঢুকিয়ে স্কচটেপ লাগিয়ে দিয়েছে যে জল।চিৎকার করবে কিভাবে?জল যে ওদের সেখানে ভুল করে রেখেছে তা নয়!ইচ্ছে করেই জল ওদের ওখানে রেখেছে।পৃথিবীর সবচে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু দিতে চায় ওদের জল।তার জন্যেই ত যত্ন করে ওদের জন্য একটা স্পেশাল চেয়ার বানিয়েছে জল।নিজ হাতে বানিয়েছে সে চেয়ারটা।যাতে সাদ,রিশাদ আরামে ওদের শাস্তি ওদের মৃত্যুযন্ত্রণা উপভোগ করতে পারে।


কাঠের তৈরি চেয়ারে গুনে গুনে প্রায় পনেরো সুচালো লোহা মেরেছে জল।শুধুমাত্র রিশাদ আর সাদকে শাস্তি দেবে বলে।এটি ইতিহাসের ভয়ংকর শাস্তি গুলোর মধ্যে একটি।চেয়ার অফ টর্চার বা চেয়ার অফ পানিশমেন্ট নামে এই শাস্তি পরিচিত।পনেরোশো সাল থেকে শুরু করে আঠেরোশো সাল পর্যন্ত চীন এবং ইউরোপে এই ভয়ানক সাজা দেওয়া হতো।ধর্ষণের আসামীদের এই সাজা দেওয়া হতো।যারা কালো যাদু করতো তাদেরও এই সাজা দেওয়া হতো।ছোট খাটো আসামিদের সামনে এই ভয়ানক সাজা দেওয়া হতো।যাতে শাস্তির ভয়াবহতা দেখে আসামিরা পরবর্তীতে বড় ধরণের অপরাধ করার সাহস না পায়।শাস্তির জন্য আসামিকে লোহা মারা চেয়ারে বসিয়ে দেওয়া হতো।তারপর কিছু স্ক্রু দিয়ে আসামিকে চেয়ারের সাথে শক্ত করে বেঁধে দেওয়া হতো যাতে ধারালো সুচালো লোহা গুলো আসামীর শরীরে ঢুকে যায়।জলও ঠিক সেই ভাবেই চেয়ারটা বানিয়েছে।

জল রিশাদকে প্রথমে চেয়ারটাতে বসায়।ধারালো সুচালো লোহার আঘাতের যন্ত্রণায় চোখ বন্ধ করে ফেলে।কার্ণিশ বেয়ে কিছু নোনা জলের বিন্দু কণা জলের বাহুতে পরে।কিন্তু জলের তাতে রিশাদের প্রতি একটুও মায়া মমতা হয় না।তারপর স্ক্রু গুলো দিয়ে শক্ত করে রিশাদকে চেয়ারে বসিয়ে দেয়।ইতিমধ্যে রিশাদ শাস্তি পেতে শুরু করেছে।সুচালো লোহা গুলো চামড়া ভেদ রিশাদের শরীরে ঢুকে গেছে।রিশাদ চিৎকার করছে যন্ত্রণায় আর জল তা উপভোগ করে পৈশাচিক হাসি হাসছে।শাস্তি ভোগ করবে আর চিৎকার করবে না?কিন্তু এই চিৎকারে যদি বর্ষণের ঘুম ভেঙে যায়!সারাদিন অফিস করে বেচারাটা শান্তিতে ঘুমাতেও পারবে না?বর্ষণ যাতে শান্তিতে ঘুমাতে পারে তাই ই তো জল রাতের খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বর্ষণকে খাইয়ে দিয়েছে।


নারীদের মানুষ সর্বদায় মায়া,মমতার আধার রূপে দেখে এসেছে।এগুলো নারীর গুণ।ছলনাটা নারীর দোষ।তাই নারীকে মানুষ যেভাবে মায়াবী,মমতাময়ী হিসাবে চিনে ঠিক সেই ভাবে ছলনাময়ী হিসেবেও চিনে।কিন্তু জলকে দেখে মায়াবী,মমতাময়ী নারীর কথা ভুলে গেছে রিশাদ আর সাদ।একটা মেয়ে এত নির্দয় আর কঠিন হৃদয়ের যে হতে পারে তা জলকে না দেখলে বুঝতেই পারতো না রিশাদ,সাদ।


রিশাদ চিৎকার করছে। রিশাদের চিৎকারে জল কোনো আনন্দ পাচ্ছে না।আগে থেকেই সে কয়লা নিয়ে এসেছিলো সেগুলো আগুনে গরম করে জল।জলন্ত কয়লা বর্ষণের কোলে ফেলে দেয়।বর্ষণ চিৎকার করতে লাগে।জল বর্ষণের যন্ত্রণা দেখে পৈশাচিক হাসি দেয়।জল রিশাদের সামনে গিয়ে চোখ উল্টিয়ে পৈশাচিক হাসি দিয়ে বলে,,


" খুব কষ্ট হচ্ছে না?বর্ষারও খুব কষ্ট হয়েছিলো যখন তুই ওর বিশ্বাস নিয়ে ওর ইজ্জত নিয়ে খেলেছিলি।"


" বর্ষা?"


" হু,বর্ষা।আমার বোন বর্ষা।শুধুমাত্র তোদের জন্য ওকে এই দুনিয়া ছাড়তে হয়েছে।ভাবলি কিভাবে ওকে কষ্ট দিতে তোরা সুখে থাকবি।ওকে যেমন ভেতর থেকে তিলে তিলে মরতে হয়েছে তোদেরকেও আমি ঠিক সেই ভাবে তিলে তিলে মারবো।মৃত্যু কত যন্ত্রণাদায়ক আর কঠিন বুঝবি তোরা।এটা তো টেইলার।সামনে আরও ভয়ানক শাস্তি আছে তোদের জন্য।"


" বর্ষা তো ওর বোনের কথা কখনো বলে নি।"


" বলে নি দেখেই তো তোরা টোপ গিলেছিস।"


কথাটা বলে জল সিগারেট ধরায়।দুটো টান দিয়ে জলন্ত সিগারেট রিশাদের ঘাড়ে আলতো করে ছোঁয়ায়।ব্যথায় কুঁকড়ে ওঠে রিশাদ।জল পৈশাচিক হাসি দেয়।জল ঘড়ি দেখে।দুটো বেজে গেছে।এখন সাদের পালা।ভাগ করে নিয়েছিলো জল সময়। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে রিশাদের তখন যাওয়ার দশা।জল টেনে হিঁচড়ে রিশাদকে চেয়ার থেকে উঠায়।তারপর মেঝেতে রেখে শক্ত করে বাঁধে।যদিও নারী হয়ে গায়ে এত জোর থাকার কথা বা জলের।কিন্তু প্রতিশোধের আগুন জলকে শক্তিশালী করে দিয়েছে।রিশাদকে বাঁধা হয়ে গেলে জল সাদকে চেয়ারে বসায়।সেই একই ভাবে।সাদ যন্ত্রণায় কুঁকড়ে ওঠে।তারপর বর্ষা ডান হাতে লবণ নেয় আর বাম হাতে জলন্ত কয়লা।বাম হাতের কয়লাগুলো সাদের কোলে দেয় আর লবণের ছিটা দেয় রিশাদের ওপর।দুইজনেই কুঁকড়ে ওঠে যন্ত্রণায়। জল আবারও পৈশাচিক হাসি দেয়।ভোর হয়ে গেলে জল দুজনকে আবার আগের অবস্থায় রেখে,গ্যারেজে তালা দিয়ে ঘরে চলে।


________


বর্ষণ খুব চুপচাপ হয়ে গেছে।বর্ষার ছেড়ে যাওয়া সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।খাওয়া,দাওয়া সব কিছুতে ওর অনিহা।সব সময় মন মরা হয়ে থাকে।জলের বর্ষণকে দেখে খুব মায়া হয়।জলের উচিত বর্ষণকে একটু হলেও সময় দেওয়া।মানুষ হিসাবে জলের এটা দায়িত্ব। যতই খারাপ থাকুক জলের কাছে বর্ষণ।সেও তো মানুষ। দুঃখ কষ্ট ওরও তো আছে।বর্ষণ টেবিলে বসে ভাতে আঙুল ঘোরাচ্ছিলো। জল বর্ষণের কাছে যায়।কাঁধে হাত রাখে।


" খাচ্ছো না যে?"


" বর্ষার কথা খুব মনে পড়ছে।কেন করলো ও এমন?"


" নিশ্চয়ই কোনো কারণে এমনটা করেছে।দেখো যাদের কারণে আল্লাহ তাদের ঠিকই শাস্তি দেবেন।তুমি খেয়ে নাও।"


" ভাত আমার গলা দিয়ে নামে না জল। প্রতিটা মুহুর্তে আমি বর্ষাকে মিস করছি।"


" করবেই তো।কিন্তু মেনে নিতে হবে মানুষ মাত্রই মরণশীল।"


" তাই এভাবে চলে যাবে বর্ষা?"


জল বর্ষণের প্রশ্নের উত্তর খুজে পায় না।পাশের চেয়ারে বসে ভাত মাখিয়ে বর্ষণের মুখের সামনে ধরে জল।বর্ষণ করুণ দৃষ্টিতে জলের দিকে তাকিয়ে থাকে।বর্ষণের চাহনি দেখে জল দুর্বল হয়ে যায়।কি নিষ্পাপ চাহনি!জল নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,,,


" খেয়ে নাও।বর্ষার খুনীদের শাস্তি দেখার জন্য হলেও তোমায় বাঁচতে হবে।"


" খুনী?"


" একটা হাসি খুশী চঞ্চল মেয়ে তো এমনি এমনি আত্মহত্যা করবেনা।নিশ্চয়ই কেউ বর্ষাকে আত্মহত্যা কর‍তে বাধ্য করেছে।"


" কেস তো করতে চেয়েছিলাম।তুমিই তো না করলে।"


" কয়টা কেসের বিচার হয়েছে বলবে আমায়?শুধু শুধু টাকা নষ্ট।"


" বর্ষার জায়গায় তোমার বোন হলে কথাটা বলতে পারতে?"


" বর্ষাকে আমি নিজেই বোনের মতোই দেখি বলে কথাটা বললাম।অনেক কথা বলেছো এবার খাও।"


কথাটা বলে জল বর্ষণের মুখের সামনে ভাত এগিয়ে দেয়।বর্ষণ নোনাজল চোখে নিয়ে ভাত খায়।এ কান্না খুশীর কান্না নাকি দুঃখের কান্না বর্ষণ বুঝতে পারছে না।জলকে আজ বর্ষণ নতুন রূপে দেখলো।মমতাময়ী জল।বর্ষণ ঠিকই ভেবেছিলো।জল রুক্ষতার শক্ত খোলসে নিজেকে আড়াল করে নিয়েছে।


চলবে,,ইনশাআল্লাহ 


Next part 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.