শুধু_তোমারই_জন্য
পাঠ - ২৬
bangla choti golpo - শুধু_তোমারই_জন্য পাঠ - ২৬ - bangla choti |
২১ দিন পর। রোদেলা আগের থেকে এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। বাস্তবতা মানতে শিখেছে। সেই ঘটনার চারদিনের মাথাতেই রোদেলা নিজের বাড়ি ফিরে যায়। আবার আগের মতো কলেজ যাওয়া-আসা শুরু করে। আগের মতো হাসি খুশি প্রাণোচ্ছল জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু মাঝেই মাঝেই থেমে যাচ্ছে মন থমকে যাচ্ছে সময়।
আনিতার আব্বু দেশে এসেছেন সপ্তাহ খানেক হবে। দুই দিন বাদেই আনিতার ছোট চাচ্চুর বিয়ে। এখন থেকেই আনিতাদের বাড়িতে মেহমান আসা শুরু করছে। আনিতার মামা মামি আংকেল আন্টি কাজিন জারাফের নানুর বাড়ির লোকজন আরো অনেকেই এসেছে। বাড়িটা মানুষে গমগম করছে। বিয়ের শপিং থেকে শুরু করে এ টু যেড সব কমপ্লিট। হলুদের ফাংশনে সব ছেলেরা একই রকম পাঞ্জাবি এবং মেয়েরা একই রকম শাড়ি। এটা আনিতার ছোট চাচ্চুর তরফ থেকে সবার জন্য দেওয়া হয়েছে। ছেলেরা কাঁচা হলুদ রঙের পাঞ্জাবি আর মেয়েরা সবুজ পাড়ের কাঁচা হলুদ রঙের শাড়ি।
মাগরিবের আজানের কিছুক্ষণ পর গেটের সামনে দিয়ে আনিতা বারবার পায়চারি করছে। আর একটু বাদে বাদেই রাস্তার দিকে উঁকি মারছে। মিনিট পাঁচেক বাদে আনিতা আবারো উঁকি দিতেই দেখে রাতুল তন্ময় ওরা আসছে। খুশিতে আনিতা কিছুটা লাফিয়ে উঠে। রাতুল তন্ময় এসেছে মানে আহিয়ানও আছে ওদের সাথে। ইশ্ আজ কত দিন পর আহিয়ানের সাথে দেখা হবে ভাবতেই আনিতা কিছুটা লজ্জা পায়। গুনে গুনে পাক্কা তেইশ দিন বাদে আজ ওদের দেখা হবে। তন্ময় আনিতার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বলে,
--"বাহ আমাদের ওয়েলকাম জানানোর জন্য আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছো দেখছি।"
--"হ্যাঁ না মানে__"
আনিতার অবস্থা বুঝতে পেরে রাতুল আর তন্ময় দুজনেই শব্দ করে হেসে দিলো। কিছুক্ষণ বাদে আরহানও এসে হাজির। মিনিট দুয়েক চারজনে কথা বলল। আনিতা ওদের সাথে কথা বলছে আর বার বার রাস্তায় উঁকি দিচ্ছে। রাতুল হেসে বলে,
--"যাকে খুঁজছো সে আসেনি।"
--"আসেনি মানে?"
--"মানে আহিয়ান আসতে পারেনি। একেবারে পরশু বিয়েতেই এ্যাটেন্ড করবে ও।"
তন্ময়ের কথা শুনে আনিতার মুখটা ফেকাসে হয়ে গেলো। আজ সকালেও আহিয়ান বলেছে যে সন্ধ্যায় আসবে। বাট এখন তন্ময় কি বলছে? আহিয়ান নাকি আসবে না। অনেকটা সময় কেটে যাওয়ার পরও যখন আহিয়ান এলো না আনিতার তখন কেঁদে দেওয়ার মতো অবস্থা। তন্ময় ওরা তিনজনে মৃদু হেসে সেখান থেকে চলে গেলো। আনিতা আর একবার রাস্তার দিকে তাকিয়ে চলে আসতে নিলেই পিছন থেকে আহিয়ান আনিতার হাত টেনে ধরে। হাতে টান পড়াতে থেমে যায় আনিতা। পিছন ঘুরে আহিয়ানকে দেখতেই ঠোঁটের কোনে মুচকি হাসির রেখা ফুটে উঠে। আহিয়ান আনিতার হাত ধরে ওকে নিজের কিছুটা কাছে এনে বলে,
--"কি ভেবেছিলে সত্যিই আসবো না?"
--"আমি জানতাম আপনি আসবেন।"
--"হুম তা তো তোমার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। আর একটু হলেই কেঁদে দিতে তুমি।"
আনিতা কিছু বলবে তার আগেই ফাইয়াজকে আসতে দেখে দৌড়ে চলে গেলো ওখান থেকে। আহিয়ান মাথা চুলকে আনিতার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসে।
*
ফুল ভলিউমে সাউন্ড বক্স বেজে চলছে আনিতাদের বাসায়। আধ ঘন্টার মাঝেই আনিতারা হলুদের সকল ধরনের ডালা নিয়ে বেরিয়ে পড়বে মেয়ের বাড়ির উদ্দেশ্যে। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার মতো বাজে। আনিতা আর ওর সকল ফ্রেন্ডরা সেজেগুজে রেডি। সবাই একই শাড়ি আর একই সাজ সেজে ফটোশুট করছে। স্টেজে উঠে নানান ধরনের স্টাইলে ছবি তুলে ফোনের গ্যালারি লোড করছে। সাথে ফটোগ্রাফার তো আছেই। পুরো বাড়িতে মানুষ ভর্তি। সব মেয়েরা এক রকমের শাড়ি আর সব ছেলেরা একই রকম পাঞ্জাবি পড়েছে। আনিতা ওরা সবাই মিলে নানান ধরনের স্টাইলে ছবি তুলছিলো। তখনই ফাইয়াজ এসে ফটোগ্রাফারকে নিয়ে অন্যদিকে চলে গেলো। ফাইয়াজ যাওয়ার পর আহিয়ান তন্ময় রাতুল আরহান চারজনেই স্টেজে উঠে। আহিয়ান এসে সবার উদ্দেশ্যে বলে,
--"ডিয়ার সিস্টারস ইন-ল তোমরা সবাই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আমাদের আড়াল করো তো।"
--"কেন ভাই এহন এই পাবলিক প্লেসেও তোদের রোমান্স করতে হবে?"
রাতুলের কথায় সবাই উচ্চস্বরে হেসে দিলো। আনিতা লজ্জায় মাথা নিচু করে ফেলল। আনিতা ওখান থেকে চলে আসতে চাইলে রোদেলা ওরা ওকে আটকে দেয়। আহিয়ান রাতুলের পিঠে একটা থাপ্পড় মেরে বলে,
--"আরেহ শালা কাপল পিক তুলমু। এত বেশি বুঝোস কেন?"
--"ওওওও কাপল পিক তুলবা নাকি সেই সুযোগে একটু ছোঁয়ার বাহানা?"
আরহানের কথায় আনিতা কাঁশতে শুরু করে। কি সব বলছে এরা? আল্লাহ এদের মুখে কিচ্ছু আটকায় না। আহিয়ান রাগী চোখে তাকিয়ে বলে,
--"আমি চাইলে ওকে যখন তখন ছুঁয়ে দিতে পারি। কোনো বাহানা লাগবে না।"
কথাটা বলেই আহিয়ান আনিতার হাত ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে এলো। আহিয়ানকে আনিতার হাত ধরতে দেখেই ওরা সবাই ওদের দুজনকে আড়াল করে দাঁড়ালো। আহিয়ান আনিতার কোমড় চেপে ধরে দাঁড়াতেই আনিতা কিছুটা কেঁপে উঠলো। আহিয়ান আনিতার দিকে একপলক তাকিয়ে মুচকি হেসে বাকীদের উদ্দেশ্যে বলে,
--"তন্ময় ভাই আমার। আমাদের দুজনের কয়েকটা কাপল পিক তুলে দে। হাতে একদম সময় নেই। যে কেউ যখন তখন এসে পড়বে।"
তন্ময় মৃদু হেসে আহিয়ানের হাত থেকে ফোন নিয়ে নিলো। তারপর আনিতা আর আহিয়ানের বেশ কয়েকটা কাপল পিক তুলে দিলো। হুট করেই ফাইয়াজের গলা শুনতে পেয়ে ওরা সবাই বেশ চমকে গেলো। ফাইয়াজ স্টেজে ওঠে ওদের সবার কাছে এগিয়ে এসে বলে,
--"কিরে তোরা সবাই মিলে এখানে এভাবে জটলা পাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছিস কেন? হলুদ দিতে যাবি না? আনিতা কোথায়?"
ফাইয়াজের প্রশ্নে সবাই পিছন ফিরে তাকায়। পিছনে সত্যিই আনিতা নেই। আহিয়ান একা একাই একপাশে দাঁড়িয়ে ফোনে কিছু একটা দেখছে। আহিয়ানকে একা দেখে সবাই একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলো। বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলো সবাই। এই বুঝি ফাইয়াজের কাছে ধরা পড়ে যাবে। কিন্তু না শেষমেশ সবটা ঠিক আছে। ফাইয়াজ কিচ্ছু বুঝতে পারেনি। পেছন থেকে আনিতা এসে ফাইয়াজকে বলে,
--"ভাইয়া খুঁজছিলে আমায়?"
--"হ্যাঁ। সবাই এখানে একসাথে আছে তুই কোথায় ছিলি?"
--"ভিতরে গিয়েছিলাম। কেন খুঁজছিলে বলো?"
--"লেট হয়ে যাচ্ছে ওই বাসায় হলুদ নিয়ে যেতে হবে তো। তাড়াতাড়ি চল।"
--"ভাইয়া।"
--"আবার কি?"
--"কিভাবে যাবো আমরা? তোমাকে বলেছিলাম আব্বুকে বলতে যে আমরা বাইকে যাবো।"
--"বড় মামাকে আমি বলেছি এখন চল তো। আমরা সবাই বাইকে করেই যাবো। এলাকার কিছু ছেলেরাও বাইকেই যাবে।"
আনিতা আর কোনো কথা না বলে সবার সাথে বাইরে বেরিয়ে এলো। রাস্তায় এসে দাঁড়াতেই দেখে এখানে পনেরো থেকে বিশটা বাইক। সবগুলো বাইকেই দু/তিনজন করে মানুষ। হলুদের জন্য ভাড়া করা অন্যান্য গাড়ি গুলা আগেই ছেড়ে দিয়েছে। এখানে শুধু বাইক গুলো আছে। সবগুলো বাইক একসাথে যাবে আর তার ভিডিও করা হবে সেইজন্য। জেরিন এবারে রাতুলের বাইকে গিয়ে বসলো। তাসকিয়া ফাইয়াজ, রোদেলা তন্ময় একসাথে। শুভর বাইকে আরোহী বসেছে। জারা আর জয়ও একই বাইকে আছে। এখন ফাঁকা পড়ে আছে শুধু আরহান আর আহিয়ানের বাইক। আনিতার খালাতো ভাই এসে আরহানের বাইকের পিছনে উঠে বসতেই আনিতা খুশি খুশি মনে আহিয়ানের বাইকে চেপে বসলো।
*
রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ বাজে এখন। নয়টার দিকেই মেয়ে পক্ষ থেকে লোকজন এসে আনিতার ছোট চাচ্চুকে হলুদ দিয়ে গিয়েছে। একটু পরেই নাচের অনুষ্ঠান শুরু হবে। আনিতা শাড়ি পাল্টানোর জন্য স্টেজ ছেড়ে বাসার দিকে আসতে নিলেই হেচকা টানে কেউ একজন আনিতাকে ওখান থেকে সরিয়ে নেয়। আচমকা এমন ভাবে টান দেওয়াতে আনিতা হুমড়ি খেয়ে লোকটার বুকের উপর গিয়ে পড়ে। আনিতা মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে আহিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আনিতা আহিয়ানকে ছেড়ে কিছুটা দূরে সরে দাঁড়িয়ে বলে,
--"এখানে নিয়ে আসলেন যে? বিয়ে বাড়িতে অনেক লোকজন কেউ দেখে ফেললে সর্বনাশ হবে।"
--"কেউ যাতে না দেখে সেজন্যই তো এখানে নিয়ে এলাম।"
--"কি বলবেন তাড়াতাড়ি বলুন।"
--"এত তাড়া কিসের তোমার শুনি?"
--"এভাবে শাড়ি পড়ে কতক্ষণ থাকা যায়? চেঞ্জ করবো তো।"
--"উঁহু আজকে এভাবে থাকো। খুব সুন্দর লাগছে।"
--"তাই?"
--"উমমম তবে একটা কাজ করতে পারো।"
--"কি কাজ শুনি?"
--"এখন কিভাবে শাড়ি পড়ে আছো এটা?"
--"বাঙালি স্টাইলে। কেন বলুন তো?"
--"এখন গিয়ে কুচি দিয়ে শাড়ি পড়ে এসো। সাথে চুলগুলো খোলা রাখবে। আর___"
--"আর কি?"
--"বেলি ফুলের মালা দিবে চুলে। আর বা হাতেও বেলি ফুলের মালা পেচাবে।"
--"এই রাতের বেলা আমি বেলিফুলের মালা কোথায় পাবো?"
--"আচ্ছা আগে তুমি শাড়ি পড়ে এসো মালা আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।"
--"এখন? আবার আমি শাড়ি অন্যভাবে পড়ে আসবো? কেউ দেখলে কি বলবে বলুন তো?"
--"জানি না। কিন্তু আমার তোমাকে ওভাবে দেখতে খুউব ইচ্ছে করছে।"
আহিয়ানের কথায় আনিতা মুচকি হাসলো। তারপর সম্মতি জানিয়ে চলে এলো সেখান থেকে। রুমে এসেই শাড়ি চেঞ্জ করে একটা প্লাজো আর টি-শার্ট পড়ে ওয়াসরুমে চলে গেলো। পাক্কা একটা ঘন্টা অব্দি চুলে শ্যাম্পু করে চুলের জট ছাড়িয়েছে। পার্লারে সাজার এই এক খারাপ দিক। সাজার সময় তো বড্ড ভালোই কিন্তু চুলের জট ছাড়াতে গেলেই এত্ত এত্ত চুল উঠবে। শাওয়ার শেষে রুমে গিয়ে হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকিয়ে নিলো আগে। তারপর ওর মেজ কাকিমাকে ডেকে তার সাহায্যে কুচি দিয়ে শাড়ি পড়ে নিলো। আঁচল ছেড়ে রেখেছে। পিন আপ করেনি। শাড়ি পড়িয়ে দিয়ে আনিতার কাকি মা চলে যেতেই আনিতা আহিয়ানকে ম্যাসেজ করে ছাদে আসতে বলল। ডান হাতে কাঁচা হলুদ রঙের চুড়ি গুলো পড়ে নিলো। আর চুলগুলো গুলো কোনোরকমে আচড়ে ছাদের দিকে পা বাড়ালো।
আনিতা ছাদে গিয়ে দেখলো আহিয়ান রেলিং ধরে নিচে বিয়ের স্টেজের দিকে তাকিয়ে আছে। বিয়ের প্যান্ডেল স্টেজ সব নিচে উঠানে করাতে ছাদে এখন কেউ নেই। আনিতা গিয়ে আহিয়ানের পাশে দাঁড়াতেই আহিয়ান ঘুরে তাকালো আনিতার দিকে। ঘন্টা খানেক আগে মুখে যে ভারী মেকআপ ছিলো এখন তার ছিটেফোঁটাও নেই। চোখে শুধু গাড়ো করে কাজল আর ঠোঁটে হালকা ভাবে দেওয়া কমলা রঙের লিপস্টিক। ফর্সা মুখশ্রী তে এই হালকা ভাবে দেওয়া কমলা রঙের লিপস্টিকটা বড্ড ফুটে উঠেছে। আনিতার আগাগোড়া স্ক্যান করে আহিয়ান কিছুটা নড়েচড়ে দাঁড়ালো।
*
আহিয়ান রেলিঙের উপর রাখা ছোট্ট শপিং ব্যাগ থেকে একটা বেলি ফুলের মালা বের করে আনিতার হাতে পেচিয়ে দিলো। তারপর আনিতাকে ওর দিকে পিঠ করে দাঁড় করালো। ব্যাগ থেকে বাকী বেলি ফুলের মালাটা বের করে নিলো। আনিতার হাত থেকে কালো ক্লিপের পাতাটা নিয়ে সেখান থেকে ক্লিপ খুলে নিলো। তারপর বেলি ফুলের মালার এক মাথা আনিতার ডান কানের পিঠে চুলের সাথে ধরে ভালো করে ক্লিপ দিয়ে আটকে দিলো। তারপর বেলি ফুলের অপর মাথাটা চুলের উপর দিয়েই কিছুটা ঢিলে ভাবে টেনে নিয়ে আনিতার বা কানের পিঠে ক্লিপ দিয়ে একই ভাবে আটকে দিলো।
চুলে বেলি ফুলের মালা আটকানো শেষে আনিতাকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে দাঁড় করালো আহিয়ান। আনিতার পা থেকে মাথা অব্দি আর একবার স্ক্যান করে নিয়ে আহিয়ান বলে,
--"এখন একদম পারফেক্ট লাগছে। এর আগেও ভালো লেগেছে তবে এখন একটু বেশিই ভালো লাগছে।"
--"তা জনাব আপনি এই রাতে বেলি ফুলের মালা কোথায় পেলেন শুনি?"
--"বলতে হবে?"
--"হ্যাঁ অবশ্যই।"
--"কাল বেলি ফুলের মালা অর্ডার দিতে গিয়েই আমার আসতে কিছুটা লেট হয়েছিলো।"
--"মালা দুটো আপনি কাল অর্ডার দিয়েছিলেন? এজন্যই আপনি তন্ময় ভাইয়ারা আসারও কিছুক্ষণ পর এসেছিলেন?"
--"হ্যাঁ।"
--"আচ্ছা মালাটা কাল যদি অর্ডার দিয়ে থাকেন তাহলে ফুলগুলো এতো তাজা লাগছে কেন?"
--"বলেছিলাম আজ রাতে লাগবে মালা দুটো। দেড় ঘন্টা আগে গিয়েই নিয়ে এসেছি আমি। এনে ফ্রিজে রেখেছিলাম।"
--"জানেন খুব পছন্দের ফুল এইটা আমার।"
--"হ্যাঁ জানি তো।"
--"কিভাবে?"
--"সেটা সিক্রেট।"
--"বলবেন না?"
--"উঁহু।"
--"সত্যিই তো."
--"হ্যাঁ।"
--"আচ্ছা তাহলে আপনি থাকুন এখানে আমি নিচে গেলাম।"
--"এই না না।"
কথাটা বলেই আহিয়ান আনিতার হাত টেনে ধরে নিজের কাছে নিয়ে এলো। পিছন থেকে আনিতাকে জড়িয়ে ধরে আনিতার পেটে হাত রাখলো আহিয়ান। মূহুর্তেই আনিতা জমে বরফ। বুক ধুকপুক করছে। নিঃশ্বাসটাও প্রচন্ডরকম ভারী হয়ে আসছে। খুব দ্রুতভাবে বুক উঠানামা করছে। আনিতার চুলে আহিয়ান কিছুক্ষণ মুখ গুজে রইলো। তারপর ধীরে ধীরে আনিতার ঘাড়ে নেমে এলো। আহিয়ান আনিতার ঘাড়ে হালকা ভাবে ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে চুমু খেতেই আনিতা কেঁপে উঠলো। আহিয়ানই একমাত্র ছেলে যার এতটা কাছে আনিতা এসেছে। আহিয়ানের স্পর্শ গুলো বারবার আনিতার মনে অন্যরকম শিহরণ জাগাচ্ছে। আহিয়ান আনিতার পেটে কিছুটা খামচে ধরে আনিতার ঘাড়ে মুখ গুজে দিলো। আনিতা ছাড়া পেতে চাইলে আহিয়ান আরো জোড়ে চেপে ধরছে আনিতাকে। আহিয়ান পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে রেখেই আনিতার ঘাড়ে আলতো করে কামোড় বসিয়ে দিলো। আনিতার হৃদপিণ্ড যেন সেখানেই থেমে গেলো। আহিয়ান নিজের মাঝে একদমই নেই। এদিকে আনিতারও নিজেকে আয়ত্ত্বে রাখাটা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে। আনিতা ওর পেট থেকে আহিয়ানের হাত ছাড়িয়ে উলটো ঘুরে শক্ত করে আহিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো। আহিয়ানের বুকে কান পেতে শুনতে লাগলো আহিয়ানের হৃদপিণ্ডের দ্রুত উঠানামা। আষ্টেপৃষ্টে আহিয়ানের সাথে মিশে গিয়ে আহিয়ানকে জড়িয়ে ধরে আহিয়ানের বুকের বা পাশের ধুকপুকানির শব্দ গুলো চুপ করে শুনতে লাগলো আনিতা।
।
।
।
চলবে।
[ ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন। আর গল্পটা কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন। হ্যাপি রিডিং🥰 ]