বিটকয়েন বাংলাদেশে বৈধ করা হবে | বিটকয়েন এর দাম ৭০ হাজার ডলার হতে পরে |
ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েনের মূল্য গত কিছুদিনে রাতারাতি কমে গেছে।
এলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান টেসলা এই ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়ার পর থেকে এই ডিজিটাল মুদ্রার দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু কিছু দিন দরে বিটকয়েন এর বাজার ৬৭ হাজার ডলার থেকে ১৯ হাজার এ নেমে গেছে। এর আগে এমন ৫ বার বিটকয়েন এর বাজার এত ডাওন হয়েছিল।
বাংলাদেশে বিটকয়েন
বাংলাদেশে বিটকয়েন খুব কম পরিমনে কেনাবেচার কথা জানা যাচ্ছে যা বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বেআইনি। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এবার বলছেন বিটকয়েন অতি তারাতাতি বৈধ করা হবে।আর যজি বাংলাদেশে বিটকয়েন বৈধ করা হয় তবে বিটকয়েন এর দাম ৭০ হাজার ডলার এর ওপরে যতে পরে।
২০১৭ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক বিটকয়েনে লেনদেনের ব্যাপারে সতর্কতা জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, ভার্চুয়াল মুদ্রা কোন দেশের বৈধ কর্তৃপক্ষ ইস্যু করে না বিধায় এর বিপরীতে আর্থিক দাবির কোন স্বীকৃতিও নেই।
ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের দ্বারা মানি লন্ডারিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়ন সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করে দিয়েছে।
এ ধরনের লেনদেনের মাধ্যমে আর্থিক এবং আইনগত ঝুঁকি রয়েছে বলে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “নামবিহীন বা ছদ্মনামে প্রতিসঙ্গীর সঙ্গে অনলাইনে ভার্চুয়াল মুদ্রায় লেনদেনের দ্বারা মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।”
এছাড়া, অনলাইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লেনদেনকারী গ্রাহকরা ভার্চুয়াল মুদ্রার সম্ভাব্য আর্থিক ও আইনগত ঝুঁকিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারেন বলে সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ভবিষ্যতে বিটকয়েনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক কোন পদক্ষেপ নেবে কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের এই ব্যাপারে কোন পরিকল্পনা নেই।
তবে বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই। বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইনের আওতায় এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
বিটকয়েন কী?
বিটকয়েন। অনেকেই বলে থাকেন অনলাইন মুদ্রা। আবার অনেকেরই ধারণা ভবিষ্যতের মুদ্রা। কেউ বা বলছেন পুরো ব্যবস্থাতেই রয়েছে একটা বড় ঘাপলা। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বিট কয়েনের ব্যবহার বাড়ছে। বিটকয়েন হল ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটকলের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া সাংকেতিক মুদ্রা। যেমন আমাদের দেশের জন্য মুদ্রা টাকা, ইউএসএ-এর জন্য ডলার। তবে বিট কয়েন এমন একটি মুদ্রা যার কোনো ফিজিক্যাল প্রোপার্টিজ নেই। মানে একে ধরা বা ছোঁয়া যায় না। এটি শুধু ইন্টারনেট এর মাধ্যমেই ব্যবহার যোগ্য। আবার একে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানও নেই। শুধু বিটকয়েনই নয় এমন ডিজিটাল মুদ্রার মধ্যে রিপল, লাইট কয়েন, ইথারিয়াম, মফিজ কয়েন অন্যতম।
বিটকয়েন একধরনের ক্রিপ্টো-কারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই এই মুদ্রার লেনদেন হয়ে থাকে। ২০০৮ সালের শেষের দিকে জাপানের একজন নাগরিক সাতোশি নাকামোতো নামের কেউ বা একদল সফটওয়্যার বিজ্ঞানী এই ‘ক্রিপ্টোকারেন্সির’ উদ্ভাবন করেন। যদিও এই ব্যক্তির আসল নাম বা পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
বাংলাদেশে বিটকয়েনের ব্যবহার
বিট কয়েন কিভাবে ব্যবহার করা হয়: ইন্টারনেট ব্যবহার করে দুইজন ব্যবহারকারীর মধ্যে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ না করেও এটা সরাসরি আদান-প্রদান (পিয়ার-টু-পিয়ার) করা হয়। এই লেনদেনের তথ্য ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সুরক্ষিত থাকে, কিন্তু এই মুদ্রার লেনদেন তদারকির জন্য কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতো কর্তৃপক্ষ থাকে না। এই মাইনারের মাধ্যমে নতুন বিটকয়েন তৈরি হয়। বিটকয়েন তৈরি বা কেনার পর তা গ্রাহকের হিসাবে জমা থাকে। পরবর্তীতে তিনি সেগুলো ব্যবহার করে পণ্য কিনতে পারেন বা বিক্রি করে দিতে পারেন। বিক্রি করলে বিটকয়েনের পরিবর্তে প্রচলিত অর্থে তা গ্রহণ করা যায়। বিভিন্ন কম্পিউটার ব্যবহার করে লেনদেন করা হলেও সেসব তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে হালনাগাদ করা হয়ে থাকে। বিটকয়েন কি বাংলাদেশের বৈধ? না বিটকয়েনের এখনো বাংলাদেশে কোন বৈধতা দেওয়া হয়নি
বিটকয়েন এর ভবিষ্যৎ কী?
মনে করা হচ্ছে ক্রিপ্টো/অনলাইন মুদ্রাই ভবিষ্যতের মুদ্রা। এর মুলে যে ব্লক চেইন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই তথ্য ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা কাজ শুরু করেছেন। ইন্টারনেট যেভাবে দুনিয়া পাল্টে দিল, মুঠোফোন যেভাবে ঘরে ঘরে গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছে, এটাও তেমনি ছড়িয়ে পড়বে। কিন্তু কোন মুদ্রাটা? বিটকয়েন, রিপল, লাইট কয়েন, ইথারিয়াম, নাকি মফিজ কয়েন? বলা মুশকিল। কেউ জানে না। কিন্তু একটা না একটা ক্রিপ্টো মুদ্রা আসন গেড়ে বসবে। ডলার ধীরে ধীরে উঠেই যাবে, ইউরো উঠে যাবে, টাকাও একদিন উঠে যাবে। ব্যাংকে মানুষ যাবে না, সবার ক্রিপ্টো মুদ্রার ওয়ালেট থাকবে, কম্পিউটারে বা মোবাইলে। অনেকে বলছেন, এই অ্যাকাউন্টটিকে শুধু ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে তুলনা করলেই হবে না। এর একেকটা নিজেই একটা ব্যাংক। ব্যাংকের নিয়মকানুন, ফি, সব ওই মানুষটিই নির্ধারণ করবে। আর এই মুদ্রার তো দেশের গণ্ডি থাকছেই না।