পুতুল বউ
পুতুল বউ গল্প - পর্ব - ৭ - bangla choti golpo - bangla love story |
★★ (পর্ব - ৭)★★
.বাসায় ফিরে মিষ্টি আর আবির তাদের রুমে চলে গেলো।
এদিকে আবিরএর বড় আপা এখনো মিষ্টি কে সামনাসামনি দেখে নি।
শুধু ওদের বিয়ের ছবি দেখেছে।
.
আবির মিষ্টিকে বলল তোমাকে খুব ক্লান্ত দেখচ্ছে, যাও ওয়াশরুমে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে এসো আর কাপড় টা ও পাল্টে ফেলো তারপর আপা এসেছে তার সাথে দেখা করো।
মিষ্টি সেই আগের মতোই মাথা নেড়ে সম্মতি জানালো।
.
এর মধ্যে আপা নিজেই চলে এসেছে ওদের রুমে মিষ্টির সাতে পরিচিত হতে।
এসে দেখে মিষ্টি তার সুটকেস থেকে কাপড় বের করছে।
আপা দেখে কিছুটা অবাক হলো।
কারন আজ প্রায় ৩/৪ দিন হবে মিষ্টি এ বাসায় এসেছে অথচ মিষ্টিদ কাপড়চোপড় এখনো সুটকেসে রুমের এক কিনারায় রাখা কেনো???
.
নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে তার মাথায়....তবে কি মিষ্টি গ্রামের বোকাসোকা মেয়ে বলে আবির এখনো মিষ্টিকে বউ হিসেবে মেনে নিতে পারে নি???
এর জন্যই আগেই মাকে বলেছিলাম আবির এর বিয়ে ওর অমতে করানোটা মোটেও ঠিক হয় নি।
আরে বুঝিয়ে সুজিয়ে হয়তো কাওকে তার অপছন্দের একটা ড্রেস পড়ানো যায় অথবা কিছু সময়ের জন্য অপছন্দের একটা জায়গায় কিছুক্ষন বসিয়ে রাখা যায় কিন্তু তাই বলে কি জীবনের এতো বড় একটা অংশ বিয়ে করানো যায় কিংবা জোড় করে সংসার করানো যায়???
.
মায়ের প্রতি খুব রাগ হচ্ছে এখন.... দরজার সামনে দাড়িয়ে ই এইসব ভাবছিলো।
এমন সময় আবিরএর ডাকে চেতনা ফিরলো ওর।
এতোক্ষনে মিষ্টি তার প্রয়োজনীয় কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেছে।
.
আপা আবিরএর পাশে বসে আবির কে জিজ্ঞাস করলো কেমন আছিস??
আবির কিছুটা ভ্রু কুচকে উত্তর দিলো - আমি তো ভালো আছি, কিন্তু তোমার মুখ এমন বাংলার পাঁচের মতো করে রেখেছো কেনো??
.
কিছু বলার আগেই মিষ্টু ফ্রেশ হয়ে বাইরে চলে এলো আপাকে দেখে ঠিক করা ঘোমটা টা আবার আরেকটু টেনে ঠিক করে আপাকে সালাম দিলো।
রিফা সালাম এর উত্তর নিয়ে বলল - কেমন আছো??
মিষ্টু বলল - জি ভালো।
রিফা বললো - আমাকে হয়তো তুমি চেনো নি।
ওমমম.......বলতো আমি কে??
মিষ্টু কিছুটা অনুমান করতে পারলেও কিছু না বলে চুপচাপ দাড়িয়ে রইলো।
রিফা কোনো উত্তর না পেয়ে বললো আমি হচ্ছি তোমার নানাশ।
এরি মাঝে রিফার দুই বছরের মেয়ে মিফতা আম্মু আম্মু বলে রিফার কোলে এসে ইশারায় মিষ্টু কে দেখিয়ে তার ভাংগা ভাংগা কন্ঠে বলল আম্মু এইটা আবার কে??
রিফা বলল এইটা তোমার মামি হয়।
আর তুমি একে বউমা বলে ডাকবে।
মিফতা দৌড়ে মিষ্টুর কাছে গিয়ে ওর একটা আঙ্গুল ধরে বলল ---- বউমা তোমার নাম কি???
মিষ্টুর মিফতা কে খুব পছন্দ হলো কিন্তু সে এইটা ভেবে পাচ্ছে না যে গ্রামে মিফতার বয়সী বাচ্চারা তো ওকে আপু কিংবা বুবু বলে ডাকতো
কিন্তু ওর মামী হই কেনো বলল???
মিফতা আর কিছু না বলে পাশের রুমে ওর নানার গলার শব্দ পেয়ে ছুটে গেলো।
.
মিষ্টু চুপচাপ বিছানার এক কোণায় বসে আছে আর আবির ফোন ঘাটাঘাটি করছে।
রিফা ওদের হাবভাব দেখছে বসেবসে আর মনে মনে বলছে যা ভেবেছিলাম ঠিকতাই।
এদের মাঝে তেমন কোনো সম্পর্ক ই হয়নি।
এমন থাকলে তো হবে না প্রসঙ্গটা নিয়ে কথা বলাটা জরুরি কিন্তু কিভাবে কথাটা তুলবে তাই ভেবে পাচ্ছে না।
অবশেষে চোখ গেলো সুটকেস টার দিকে।
আবির এর দিকে তাকিয়ে বলল কিরে আবির তোর আলমারীতে জায়গা নেই??
আবির বলল হুম আছে তো কিন্তু আই কথা কেনো বলছো???
তাহলে মিষ্টুর জিনিসপত্র এখনো ওর সুটকেসেই কেনো??
আবির সুটকেস টার দিকে তাকিয়ে মনেমনে বললো ---- কি মেয়েরে বাবা......আলমারিতে কাপড় রাখার কথাটাও আমাকে বলে দিতে হবে তারপর রাখবে???
আর আমি ই বা কেমন সারাদিন বাসায় বসে থেকে ও সুটকেস টার দিকে একবার ও চোখ গেলো না?? আর রুমে আরেকটা মানুষ আছে জানি কিন্তু তার জিনিসপত্র কোথায় রাখে তার ও খেয়াল রাখি নি???
.
আবির বলল -- ইয়ে মানে আপা আমার খেয়াল ছিলো না আর আমি বলি নি বলে ও হয়তো রাখে নি।
.
রিফা আবির কে ডেকে বলল তুই আমার সাথে একটু আমার রুমে আয়, জরুরি কথা আছে...।
.
আবির রিফার পিছুপিছু পাশের রুমে গেলো।
রিফা আবির কে ওর সামনে বসিয়ে বলল - দেখ ভাই আমি জানি তোর সাথে যা হয়েছে তা অন্যায় হয়েছে।
কিন্তু যা হওয়ার তো হয়েগেছে তাই না??
বউ তো আর কাপড়চোপড় না যে পছন্দ হয়নি না হয় পাল্টে ফেললাম।
মা তো তোর ভালোর জন্যই গ্রামের সহজসরল মেয়েকে বউ করে এনেছে যেনো তোর কথার অবাধ্য না হয় সংসারী হয় আর শহরের এমন মেয়ে অনেক খুজে হয়তো পাওয়া যেতো আর মিষ্টি মায়ের নিজ গ্রামের মেয়ে আর অত্যন্ত ভালো ও।
.
আবির অবাক হয়ে রিফার কথা শুনছে কিন্তু কেন কিসব বলছে তা ভেবে পাচ্ছে না।
আপা তুমি এসব কেনো বলছো??
আমার তো কোনো অসুবিধা নেই আমার তো মিষ্টি কে পছন্দ হয়েছে।
রিফা -- দেখ আমি তোদের দেখে ই বুঝেছি তোদের মধ্যে তেমন মিল নেই।
তুই হয়তো এ বিয়ে টা এখনো মেনে নিতে পারিস নি শুধু মায়ের কথা ভেবে চুপচাপ আছিস।
আবির মনেমনে ভাবছে -- হায় কপাল?????
যেই #পুতুল_বউ টার ছোয়া পাবার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে আছে তা নিয়ে আপা কি ভাবছে??
আর রিফার এই সিরিয়াস কথার স্টাইল দেখে আবির অট্ট হাসিতে লুটিয়ে পড়লো।
হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছে।
আর আবিরএর এমন কান্ড দেখে রিফা বোকার মতো তাকিয়ে আছে.....
.