" ভালোবাসি মেঘা " (৩)
Bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৩) - bangla golpo pdf - Love story - life story |
তখন তার মা রোমালটা দেখিয়ে বলে ওঠলো...
--তোর রুমালে মেয়েদের টিপ কেন?
হকচকিয়ে ওঠে অভি...শুয়া থেকে লাপিয়ে ওঠে বসে,ছো মেরে তার মায়ের হাত থেকে রোমালটা নিয়ে নেয়....!
ভালো করে লক্ষ্য করে দেখে,সত্যি রোমালে একটা টিপ লেগে আছে,, কালো রঙ্গের তবে বেশ ছোট...মায়েদের চোখ ফাঁকি দেওয়া যে এত সহজ না সেটা আবারও প্রমাণ করে দিলো অভির মা,,ছোট্ট একটা টিপ পযন্ত তার চোখ এড়িয়ে যায় নি....!! তবে অভির বুঝতে একটুও সমস্যা হয় নি,এটা যে মেঘার টিপ...!! কিন্তু মাকে তো বলা যাবে না....তাই কোন রকমে কথা কাটাতে সে বলের ওঠলো...
-- আরে আম্মু এটা তো আমার টিপ না। ( তোতলাতে তোলাতে কথা টা বললো অভি)
এদিকের অভির মা মুখ বেকা করে হালকা বিরক্ত নিয়ে বলে ওঠলো,,
--- এই টিপ যে তোর না সেটা তো আমি ভালো করেই জানি,,তুই তো ছেলে মানুষ, টিপ তো আর পড়োস না,, সেই জন্যই তো জানতে চাচ্ছি টিপটা কার?....!
--- না মানে ইয়ে আম্মু
--- কি সব না মানে ইয়ে মানে করে যাচ্ছিস....এই অভি,,বাবা আমার সত্যি করে বল কোন মেয়ের চক্করে পড়িস নি তো তুই ?? ( কিছুটা কাদো কাদো ভঙ্গিতে কথা বললো অভির মা)
-- দুর আম্মু কি সব যে বলো না,,!! এই সব হলে কি আমি তোমাকে বলতাম না? আমার লাইফে কি এমন কিছু আছে যা তুমি জানো না? আমি তো সব'ই বলি তোমাকে...!
--তা বলোস,,ঠিক আছে,কিন্তু বলা তো যায় না, কখন কার ফাদে পা দিয়ে বসে থাকোস....।
এইবার অভি ওঠে, তার মা কে পিছন থেকে গলায় জড়িয়ে ধরে, বয়নার স্বরে বলে ওঠে....
--- দুর আম্মু কি সব বলছো বলো তো,, বাদ দেও। আমার কিন্তু হেব্বি ক্ষিধে পেয়েছে....এই বৃষ্টির দিন, তোমার স্পেশাল খিচুড়ি ছাড়া কি জমে??
-- থাক হইছে আর দরদ দেখাতে হবে না,,আমি খিচুড়ি রেঁধে রেখেছি,,ফ্রেশ হয়ে আয়, টেবিলে দিচ্ছি....
অভির মা চলে যাবার পর অভি আবারো রোমালটা হাতে নেয়, টিপ টা আলতো পরসে তুলে নেয়,, কিছুক্ষণ টিপটার দিকে তাকিয়ে থেকে, অভি ফ্রেশ হতে চলে যায়.....
শেষ বিকেলে, রাস্তার এক কোণা দিয়ে হেটে যাচ্ছে অভি আর অভির বন্ধু শুভ,, সূর্য ডুবি ডুবি করছে, কিছুক্ষণের মাঝেই অন্ধকার নেমে আসবে সারা শহরে....!
-- তার পর মেয়েটার বাসা কই কিছু কি জানিস?
( অভিকে উদ্দেশ্য করে কথা টা বললো শুভ,,কারণ
ইতিমধ্যে ঘটে যাওয়া সব টুকু ঘটনা শুভকে বলে পেলছে অভি)
-- আরে নাহহ্,,কই আর জানতে পালাম? জানার আগেই তো উদাও।
-- তাহলে আর কি এবার বসে বসে টিপ খা...!
মুচকি হাসে অভি....তখন শুভ আবারো বলে ওঠে...
-- আচ্চা মামা, আমি তো তোর ছোট বেলার বন্ধু তাই না?
-- হুমম,,কোন সন্দেহ আছে?
-- না নেই....তাহলে একটা সত্যি কথা বলবি আমাকে?
-- কখনো মিথ্যা বলছি তোকে?
-- আচ্চা মামা তুই কি মেয়েটাকে ভালো/বেসে পেলছিস?
-- আরে দুর প্রথম দেখাতেই এই সব হয় নাকি?
-- হয় হয়,,মনে রং লাগলেই হয়...(কথা বলেই হাসতে থাকে শুভ)
অভি ঠোট উল্টে হাটতে থাকে আনমনে....,কিছুক্ষণ হাটার পর দুজনেই এসে বসে পাড়ার টং দোকানে...চারদিকে মৃদু আলোকে চা নিয়ে বসেছে অভি আর শুভ...!! তখন অভি বললো...
-- শুনলাম, শহরে নাকি বৃক্ষ মেলা বসেছে?
-- হ্যা আমিও শুনেছি বসেছে, কিন্তু এখনো যাওয়া হয় নি 😕
-- কাল যাবি নাকি চল???
-- সত্যি যাবি?
-- হুমম চল,,গিয়ে দেখে আসি,,কয়েকটা গাছও কিনা হবে,প্লাস ঘুরাঘুরিও হবে, কি বলিস?
-- হুমম,,,তাহলে কাল বিকালে রেডি থাকিস,এক সাথে যাবো...
-- ওকে...!!
গাথা গায়ে,থর থর করে কাপছে মেঘা...জ্বর বেশ ভালো রকমেই ধরেছে....! পাশে বসে জল পট্টি দিয়ে যাচ্ছেন মেঘার মা...! মেয়েকে ওনার এই এক যত্রণা, বৃষ্টির দু ফুটা জল শরীরে পড়তে নন পড়তেই জ্বর ওঠে যায়...!
ইতিমধ্যে ডাক্তার মশাইকে নিয়ে হাজির মেঘার বাবা,,মেঘা কে দীর্ঘক্ষণ পরিক্ষা নিরক্ষা করে ঔষুধ দিয়ে গেছেন ডাক্তার মশাই...! মেঘের এমন জ্বর আগেও কয়েকবার ওঠছে, তাই ওনি ভালো করেই জানেন মেঘা জ্বর কেমন করে কমাতে হয়,, প্রেসকিপশন হাতে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন মেঘার বাবা,,মেয়ে এমন জ্বরে মন তার কিছুতেই সায় দিচ্ছে না...!
সারা রাত জ্বরে কাতরানো মেঘা, সকালে কিছুটা সুস্থ হলো....ফ্রেশ হয়ে,খাবারের টেবিলে গেলো,মেয়েকে দেখে খুশি আত্নহারা মেঘার মা,,জ্বর যে কমেছে তাতেই ওনার শান্তি..রান্না ঘরেই ছিলেন ওনি মেঘাকে দেখে দৌড়ে গেলেন,,খাবারের টেবিলে বসিয়ে,নাস্তা দিতে দিতে বলে ওঠলেন...
-- জ্বর কমেছে তোর? এখন শরীর কেমন লাগছে? মাথা ব্যাথা কমেছে তো?
মেঘা কিছুটা বিরক্ত নিয়ে বলে ওঠলো,,
-- আহ..! মা থামো তো,,এক সাথে এত গুলা প্রশ্ন কেউ করে??, একটা একটা করে প্রশ্ন করো....।
এবার মেঘার মা মেঘার দিকে তাকিয়ে কাদো কাদো গলায় বলে ওঠে....
-- কাল সারা রাত জ্বরে কাতরিয়েছিস,, সারা রাত তোর পাশে বসেছিলাম..মেয়ের যন্ত্রণা তো বুঝিস না,,মা হলে তখন বুঝবি....
মেঘা এবার চেয়ার থেকে ওঠে মা জড়িয়ে ধরে বলে,তখন মেঘার মা অভিমানী সুরে বলে ওঠে..
--থাক হইছে আর ঢং করতে হবে না,,চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে খেয়ে নে....
.
সেদিন বিকালে শুভ আর অভি রওনা দেয়,বৃক্ষ মেলার উদ্দেশে, অভির পড়নে, সাদা গেন্জির ওপরে নীল শার্ট কালো রঙ্গের প্যান্ট আর সাথে সু,,বেশ সুন্দরই লাগছে তাকে,,শুভ কিছুটা মুচকি হেসে বলে
-- কি রে মামা,আজ এত সেজে গুজে কাহিনী কি? নাকি প্রেমে পড়লে লোকে স্মার্ট হয়ে যায় কোনটা ?
-- দুর কি যে বলোস না তুই..!! হুদাই বকবক.....( লজ্জাময় ভঙ্গি নিয়ে উওর দেয় অভি)
বৃক্ষ মেলায় এসে দুজনে বেশ অনেকক্ষণ ঘুরাঘুরি করে,কয়েকটা গাছও কিনে,,চারদিকে মানুষে গিজগিজ করছে,অভি ডান দিতে হাটছিলো আর শুভ বা দিকে,,শুভ দিকে তাকিয়ে অভি গাছ নিয়ে কথা বলতে ছিলো,,হঠাৎ জোরসে ধাক্কা খায় অভি,সামনে না তাকিয়ে হাটার ফল....! অভির তেমন খুব একটা ব্যাথা না লাগলেও সামনের জনের যে লেগেছে সেটা অভি বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পেরেছে,,তাই সামনের জনকে সরি বলার জন্য সেই সামনে তাকায়,,ওমনি অভির হাত পা কাপাকাপি শুরু করে দেয়...ভয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম এসে জমা হয়েছে তার কোপালে......!!
চলবে??