"ভালোবাসি মেঘা" (৭) 

Bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৭) - bangla love story - life story
Bangla choti golpo - ভালোবাসি মেঘা (৭) - bangla love story - life story 


তখন দুই হাতে কপি নিয়ে হাজির হয় কথা...!!


 একটা কপির মগ মেঘার হাতে দিতে দিতে কথা বলে ওঠে 

-- আরে অভি ভাইয়া,আবারো চলে আসছো, মেঘাকে বিরক্ত করতে,,প্লিজ ভাইয়া ওকে আর বিরক্ত করো না। এমনি সে চলে যেতে চাইছিলো,ভাগ্যিস বৃষ্টিটা এসে ছিলো..!!

মেঘা তখন কথাকে বাধা দিয়ে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে ওঠে...

-- আরে নাহ্,নাহ্, তুই ভুল বুঝছিস কথা, অভি আমাকে ডিস্টার্ব করতে আসে নি,এমনি সরি বলতে এসেছে...!!


কথা এবার মেঘার দিকে তাকিয়ে ঠোঁট উল্টে বলে ওঠলো,

-- বাহহবা! তুই এই না একটু আগে অভি ভাইয়ার ওপর রাগে গিজগিজ করছিলি, এই কয়েক মিনিটে অভি ভাইয়া কি এমন বললো যে,তুই ওর হয়ে কথা বলছিস?? কাহিনি কি সত্যি করে বল....!

অভি এবার দু হাত পকেটে গুজে, কথার দিকে তাকিয়ে বলতে লাগলো..

-- আসলে হয়েছে কি কথা,,বৃষ্টি হচ্ছে রোমান্টিক জিনিস,তাই এই দিন রাগ অভিমান করে থাকতে নেই,,এই সময়টাই হচ্ছে,সরি বলার একটা পারফেক্ট সময়, এই সময়টাতে তুমি যাকেই সরি বলবা, সেই গলে যাবে...!

কথা এবার গালে হাত দিয়ে কিছুটা ঢঙ্গি ভঙ্গিতে বলে ওঠলো, 

-- আহা..! কি সুন্দর কথা,,কিন্তু কার প্রেমের সমুদ্রে ভেসে এমন রোমান্টিক রোমান্টিক কথা বলতাছো বলো শুনি?? 

-- জানতে চাও? 

-- হুমম অবশ্যই জানতে চাই.. 

 এবার অভি কিছুটা নড়েচড়ে সোজা হয়ে দাড়ায়,তারপর কথার হাত থেকে কপির মগটা নিয়ে একটা চুমুক দিয়ে বলে ওঠে

-- আগে নিজের জন্য এক কাপ কপি নিয়ে আসো,তারপর বলছি....!


কথা বেচারি বড্ড আশা নিয়ে বসে ছিলো, অভি কার প্রেমে পড়েছে সেটা জানার জন্য,,কিন্তু অভি তাতে জল ঢেলে দিয়ে বললো কপি আনার জন্য,,কথা কপি এনে ছিলো দুইটা একটা মেঘার জন্য আরেকটা নিজের জন্য,,কিন্তু তাতে ভাগ বসালো অভি,,তাই কথা আর কিছু না বলে'ই সোজা রান্না ঘরের দিকে হাটা ধরে,নিজের জন্য কপি আনতে ...!


কথা চলে গেলে,অভি গিয়ে মেঘার পাশে বসে,,হালকা হেসে,মেঘার খোলা চুলে একটা কাঠ গোলাপ গুজে দেয়,,মেঘা কিছুটা চমকে ওঠে, তখন অভি সামনে ঝড়তে থাকা ঝুম বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে, কপির মগে চুমুক বসাতে বসাতে আনমনে বলতে ওঠে...


--- কেন জানি না মেয়েদের খোলা চুলে কাঠ গোলাপ জিনিস টা একটু মানায়..! 

মেঘার ভালো লাগে কথাটা,,তাই সে মৃদু হাসে,শূন্যে দৃষ্টি রেখে  বলে ওঠে

-- এই বৃষ্টির দিনে এমন কাঠ গোলাপ কোথায় পেলেন আপনি?

-- তা তো বলা যাবে না?

-- কেন?  

--কারণ সব কেনর উওর হয় না...!!


তখন কপি হাতে ফিরে আসে কথা,,অভি আর মেঘাকে এমন ভাবে বসে থাকতে দেখে,কথার খুবই ভালো লাগে,,কি সুন্দর দুজনে,বৃষ্টির পানে চেয়ে,মৃদু ভাষায় কথা বলছে,মাঝে মাঝে মৃদু হেসে ওঠছে,খোলা চুলে মেঘাকে অভির পাশে মেঘাকে বেশ ভালোই লাগছে..! 

 কথা আর ওদের ডিস্টার্ব করলো না...নিরবে রুম থেকে বেরিয়ে আসলো,,এসে  সোফার ওপর হেলান দিয়ে বসে মনযোগ সহকারে কাটুন দেখতেছিলো সে ,,,আর মাঝে কাটুনে মজার মজার সিন দেখে হাসিতে গড়াগড়ি খাচ্ছিলো..!


এমনি সময় আগমন ঘটে শুভর,, কথার এমন কীর্তি দেখে,হা হয়ে আছে সে...শুভ কিছুটা মুখ ভেংচে ,কথা কে বলে ওঠে 

-- এই তোর লজ্জা করে না? 

 শুভর এমন কথায় লাপিয়ে ওঠে বসে কথা,,এক পলক শুভ দিকে তাকিয়ে,ভ্রু কুচকে বলে ওঠে...।

-- আমি কি এমন করছি যে,,লজ্জা পেতে হবে??

-- কি এমন  করছিস মানে...বুঝোস না তুই ??এত  বড় একটা মেয়ে হয়ে,তুই কি না কাটুন দেখছিস।ছিঃ ছিঃ লজ্জা হওয়া উচিত। 

 কথা এবার উদাস ভঙ্গিতে শুভর দিকে তাকায়,বড় হয়ে গেছে বলে কি কাটুন দেখা যাবে না? কোন সংবিধানে লেখা আছে যে বড় হলেই কাটুন দেখা বন্ধ করে দিতে হবে?

 উওর খুজে পায় না কথা।মুখ গুমড়া করে আবারো কাটুন দেখতে থাকে সে...!!

তখন শুভ  আবারো প্রশ্ন করে বসে কথা কে 

-- অভি কই রে?

কথা উদাস ভঙ্গিতে, টিভির দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে 

-- জানি না 

--- জানিস না নাকি বলবি না কোনটা ?

---- হুমম,জানি,,তবে আপাতত বলবো না কারণ অভি ভাইয়ার এই সুন্দর মুহূর্ত টা নষ্ট হোক সেইটা আমি চাই না..! 

-- সুন্দর মুহূর্ত নষ্ট হোক মানে,কি বলছিস তুই?

-- সে তুমি বুঝবা না,তুমি তো হলে গিয়ে একটা ক্ষেতের বস্তা, বুঝবা কেইমনে,বলো...

-- এই কথার বাচ্চা কথা মুখ সামলে কথা বল.. আমি মোটেও ক্ষেত নই,,জানিস আমি কি করছি?

-- কি এমন মহা ভারত করেছো শুনি?

-- আমি বৃষ্টিতে ভিজে অভিকে সুন্দর সুন্দর কাঠগোলাপ এনে দিছি,যাতে সে......!

-- যাতে সে কি?

-- কিছু না।

কথা এড়িয়ে যায় শুভ,কারণ অভি যে মেঘাকে ভালোবাসে সেটা এখন কথা কে বলা যাবে না..সমস্যা হতে পারে,,.শুভ এইসব কল্পনার মাঝে কথা বলে ওঠে,,

-- একটা কথা বলি?

-- হুম বল..!!

-- তুমি যে,অভি ভাইকে যে  কাঠগোলাপ এনে দিছো,তাতে আমি বেশ খুশি হয়েছি..!! 

-- খুশি হয়েছি,কেন? 

-- কারণ কাঠগোলাপ কাজে দিয়েছে,..! 

-- কাজ দিয়েছে? 

-- হুমম।

-- বলছিস? 

-- হুমম

-- তা তো ভালোই,কিন্তু কাঠগোলাপের যে এত পাওয়ার আগে তো জানা ছিলো। 

-- তাতে কি এখন তো জানতে পারছো তাই না?

-- হুম তা ঠিক।আচ্চা বাদ দে,, নে তুইও একটা কাঠগোলাপ রাখ..!! 

কথাটা বলেই শুভ কথার হাতে একটা কাঠগোলাপ গুজে দেয়,তারপর দু হাত প্যান্টের পকেটে দিয়ে শিস বাজতে বাজতে,ওপরে চলে যায়।

এদিকে হা করে তাকিয়ে আছে কথা,,কাঠগোলাপ কেউ এইভাবে হাতে গুজে দিতে পারে সেটা তার ধারণায়  ছিলো না ... শুভর তো উচিত ছিলো কাঠগোলাপ টা কথাার চুলে গুজে দেওয়া..!! 


সে দিন সন্ধ্যায়,গানের আসর নিয়ে বসে, অভি, শুভ, মেঘা আর কথা, কাচের বোতল ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গানের কলি খেলছে তারা,,।

অভি বোতল ঘুরাতেই বোতলের মুখ গিয়ে থামে কথার দিকে...আনন্দে সকলে উৎফুল্ল হয়ে ওঠলেও,মুখ গুমড়া করে আছে কথা,,মনে মনে ভাবছে কি গান গাইবে সে,..তখন শুভ তাড়া দিয়ে বললো 

-- কি করে, গান গাইছিস না কেন?  তাড়াতাড়ি গান ধর।

কথা বিরক্তের ভঙ্গিতে শুভ দিকে তাকায়,তারপর বলে ওঠে 

-- ওপপ ভাবার জন্য হলেও তো একটু সময় দিবে নাকি?

তখন অভি বলে ওঠে, না এত সময় দেওয়া যাবে না,তাড়াতাড়ি। 

কথা এবার অসহায় ভঙ্গিতে মেঘার দিকে তাকায়...

মেঘা মৃদু হাসে,,অভি আর শুভ সেই দিকেই তাকিয়ে ছিলো,,তখন মেঘা কি জানে চোখ দিয়ে ইশারা দিতেই,,দুই বান্ধুবী এক সাথে গেয়ে ওঠে... 


""ভালোবাসি  বলে দাও আমায়,বলে দাও হ্যা সব কবুল..তুমি শুধু আমার ই হবে,যদি করো মিষ্টি এই ভুল...!!

 ওদের এই গানের তালে তালে গিটার বাজিয়ে যাচ্ছিলো শুভ,,কথা আর মেঘা কিছুটা গাওয়ার পর অভি আর শুভ ও ওদের সুরে সুর মিলায়...! 


মেঘা গানে সুর মিলাতে মিলাতেই তার মনের কাছে মিনুতি করে ,,এমন সুন্দর সন্ধ্যা যেন তার জীবনে বার বার আসে....! 


এমন সময় ডাক পড়ে........!


চলবে?


Next part