Bangla Golpo pdf - শিশির বিন্দু পর্ব ৩ - bangla choti golpo - love story - life story

 

"শিশির বিন্দু"

পর্ব- ৩

Bangla Golpo pdf - শিশির বিন্দু পর্ব ৩ - bangla choti golpo - love story - life story
Bangla Golpo pdf - শিশির বিন্দু পর্ব ৩ - bangla choti golpo - love story - life story 


প্রতিদিনই চলেছে ফোনে টুকটাক প্রেমালাপ। অবশেষে আজ শিশিরের ঘরে বিন্দু। মাথা নিচু করে বিছানার মাঝামাঝিতে বসে আছে রাঙা বধু। দরজা খুলে কেউ ভেতরে প্রবেশ করতেই ধুক করে উঠলো বিন্দুর প্রাণ! কানে ভেসে এলো সুরেলা কণ্ঠে কিছু শব্দ।

" আকাশে ফুটে উঠেছে এক টুকরো চাঁদ। ঝলমলে করেছে অন্ধকার রাত! রাঙা পায়ে পদার্পণ করেছে দেখো গৃহবধু। রশ্মি ছাড়িয়ে গৃহে, নিরিবিলি বসে আছে আলোকিত কামরায়। এ যে আমার গৃহ চাঁদ।"

কথাগুলো বলতে বলতে এতোক্ষণে শিশির বিন্দুর কাছে চলে গেছে। বিন্দুর মনের ভেতর ধুকপুকানি যেন শতগুণে বেড়ে গেছে! শিশির বিছানায় পাশাপাশি বসে আবার বললো, 

"ওগো লজ্জাবতী নারী, লজ্জায় কেন নতশির তুমি! আজ পরপুরুষ নহে, তোমারই জীবনসঙ্গী আমি। উদয়ন করো মুখখানি, দৃষ্টিতে হারাবো তোমাতে ওগো মোর রানী।"

বিন্দু যেন লজ্জায় মাটিতে মিশে যাচ্ছে! হাত পায়ে কম্পনও ধরে গেছে! এভাবে কেন বলছে লোকটা! তার মনের অবস্থাটা কি একটুও বুঝতে পারছে না!

বিন্দুকে মাথা তুলে সোজা না হতে দেখে শিশির মৃদু হাসলো। হাত বাড়িয়ে সে বিন্দুর একটা হাত স্পর্শ করলো। সে তার কম্পন অনুভব করতে পারছে। তাই সে হাতটা টেনে হাতের পিঠে একখানা চুম্বন করলো। বিন্দু কেপে উঠলো। তার সর্বাঙ্গে শিহরণ বয়ে গেল! শিশির আঙুলের ফাকে আঙুল রেখে হাত মুঠোয় ধরে বললো, 

- তুমি যে শিশিরবিন্দু সেটা কি তোমার জানা ছিলো না! তাহলে আজ এতো নার্ভাস কেন হয়ে পড়ছো। বি ইজি শিশিরবিন্দু। নাও উই আর কাপল। আই ডীপলি ফিল ইউ, সো ইউ শোড ফিল মি।

শিশির অন্যহাতে বিন্দুর মুখটা তুলে সোজা করতেই বিন্দুর আখিজোড়া বন্ধ হয়ে গেছে! ঘনঘন কাপছে চোখের পাতা। শিশিরের কণ্ঠে উচ্চারিত হলো "মাশাল্লাহ"। সাথে সাথেই শিশির তার কপালে আলতো কোমল স্পর্শ করে থুতনি ছেড়ে দিলো।  এবার অন্যরকম কণ্ঠে বললো, 

- ওফ্! তোমার তো পরীক্ষা সামনে! এখন বাসর টাসর নিয়ে ভাবলে চলবে না। এসব চিন্তা মাথা থেকে  নামিয়ে ফেলো। পড়াশোনায় মনযোগ দাও। পড়ার মুড আছে? বই এনে দিবো? পড়তে বসবে?

শিশিরের মুখে এমন উক্তি শুনে বিন্দু অবাক হলো এবং চোখ খুলে তাকালো। শিশির যে চরম ফানি মুডে আছে সেটা বিন্দু সহজেই বুঝে গেছে। তাই সে ঘাড় ঘুরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে মুখে হাসি ফুটিয়ে তুললো। শিশির বিছানা ছেড়ে নেমে গেলো। ঘড়ি খুলতে খুলতে বললো, 

- বাবাকে নিষেধ করেছিলাম এতোসব অনুষ্ঠান করতে। বুঝিয়েছিলাম তোমার পরীক্ষা, পড়াশোনার ডিস্টার্ব হবে। উনার কি আর তোমার পরীক্ষার চিন্তা আছে! একমাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা, লোক দাওয়াত করবে না সেটা কি করে হয়! সাথে যুক্ত হয়েছে আমার শ্বশুর মশাই! দু একদিন পড়াশোনা মিস হলে নাকি কিছু হবে না। আমার যে বউয়ের কাছে আরও দুদিন চাই সেটা তাদের বুঝাই কি করে! আমার তো ইচ্ছে ছিলো সামনে যেহেতু পরীক্ষা, কাজী ডাকবো আর বিয়ে করে বউ নিয়ে আসবো। আর আমার জন্য আলাদা ভাবে দুদিন সময় নষ্ট করবো। এখন তো এমনিতেই প্রায় তিনদিন মিস হবে। বউ কি আমাকে দুদিন সময় দিবে এখন! 

বিন্দু কিছুই বললো না। শিশির শেরওয়ানী, পাঞ্জাবী খুলে বললো, 

- বইপত্র কিন্তু সবই আনা হয়েছে। পড়তে বসবে এখন তুমি? 

- উহুম।

- তাহলে বসে আছো কেন? আমার কাছে তোমার আসল রূপটাই বেশি ভালো লাগে। এভাবে তুমি ঘুমাতেও পারবে না। চেঞ্জ করে নিতে পারো। তুমি চাইলে আমি হেল্প করতে পারি।

বিন্দু কিছু বললো না। সে গহনা খুলতে লাগলো। শিশির একটা টিশার্ট পরে তার পাশে বসে মাথার পিনগুলো ছুটিয়ে দোপাট্টা খুলে দিলো। এবং চুলের ভাজ গুলোও খুলতে সাহায্য করলো। বিন্দু লাগেজ খুলে সুতি একটা থ্রিপিস হাতে নিলে শিশির বললো, 

- বেনারসিটা না হয় পড়নে থাকুক? ঘুমাতে পারবে না শাড়ি পড়ে? 

- হুম। 

বিন্দু লজ্জিত কণ্ঠে জবাব দিয়ে জামা রেখে বাথরুমে চলে গেলো ফ্রেশ হতে। ফ্রেশ হওয়ার পরেও অযথা কিছু সময় বাথরুমে নষ্ট করে একসময় বেরিয়ে এলো। শিশির খাটের মাঝামাঝি একটা বালিশ নিয়ে শুয়ে আছে। হাতে তার বিন্দুর দোপাট্টা। গহনাপত্র খাট থেকে গুছিয়ে রেখেছে হয়তো কোথাও। কিন্তু বালিশ আরেকটা কোথায়! একটু আগেও দুইটা বালিশ ছিলো! বিন্দুর দিকে না তাকিয়েই দোপাট্টার পাড় ঘুরাতে ঘুরাতে শিশির বললো, 

- শিশিরবিন্দু, যেখানে একবালিশে দুইটা মাথার জায়গা হয় সেখানে দুইটা বালিশ রাখার কোনো প্রয়োজন আছে? আমার মতে নেই, তুমি কি বলো?

বিন্দু ঠেই দাড়িয়ে আছে! এমনিতেই লজ্জায় সে নাক পর্যন্ত ডুবে আছে! এখন কি দমও আটকে দিবে এই লোকটা! তার সাথে একবালিশে কিভাবে ঘুমাবে! আদৌ কি তার মনে সেই সাহস জাগবে!

শিশির ঘাড় ঘুরিয়ে তাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে উঠে এলো। কাছে এসে হুট করেই কোলে তুলে নিলো। বিন্দু চোখে খিচে বন্ধ করে রেখেছে। বিছানায় এনে বালিশে শুয়িয়ে দিয়ে শিশির  বললো, 

- এই, চোখ খুলো। বিন্দু...

বিন্দু চোখের পাতা খুলে তাকালো সাথে সাথেই শিশিরের ঠোঁটের হাসির রেখা প্রশস্ত হয়ে গেলো। শিশির চোখে চোখ রেখে শুধালো,

- বউ, আমাকে দেওয়ার জন্য দুটো দিন হবে তোমার কাছে? ৪৮ ঘন্টার এক সেকেন্ডও বেশি অতিক্রম করবো না। পারলে আরও কমিয়ে আনবো।

এ কেমন আবদার! এভাবে বলতে হয়! তাকে কি নিষেধ করবে সে! এই বোধটা কি নেই! শিশির এখনো তাকিয়ে আছে বিন্দুর উত্তরের আশায়। বিন্দু ঠোটের কোনায়  মৃদু হাসি ফুটিয়ে মাথা নেড়ে হ্যাঁ জবাব দিলো। শিশির সাথে সাথেই ঠোঁটের উপর আলতো স্পর্শ দিয়ে কম্বল টেনে দুজনকেই ঢেকে নিলো এবং এক বালিশে মাথা রেখে বিন্দুকে দু হাতের বন্ধনে আবদ্ধ করে বললো, 

- এটুকু তো হতেই পারে, তাই না?

বিন্দু ফিক করে মৃদু স্বরে হেসে উঠলো এবং শিশিরের মাঝেই লজ্জা লুকাতে চাইলো। শিশিরও তাকে লুকিয়ে রাখলো। বিয়ের পর প্রথম ঘুম ভাঙলো শিশিরের ডাকে আর প্রথম সকাল শুরু হলো তারই বুকে। জেগে তোলারও চমৎকার ভঙ্গি তার! মাথায় হাত বুলিয়ে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখেই মৃদু স্বরে ডাকছিলো "শিশিরবিন্দু, শিশিরবিন্দু আযান পড়েছে। নামাজ পড়বে না?" সে কি ডেকে তুলছিলো নাকি ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছিলো বুঝা মুশকিল। তবে বিন্দু এটা জেনেছে তার শিশিরের ডাকেই তার ঘুম ভেঙেছে। চোখের পাতা খুলেই দেখতে পেয়েছে শিশিরের গলা। মিষ্টি জাতীয় একটা সুবাস পাওয়া যাচ্ছে তার দেহ থেকে। অত:পর লক্ষ্য করলো তার একটা হাত শিশিরের ঘাড়ের নিচ দিয়ে পেছনে অবস্থান করেছে অন্যহাত শিশিরের পেটের উপরের অংশে টিশার্ট আকড়ে ধরে রেখেছে। আর সে শিশিরের হাতের উপর শুয়ে আছে। শিশিরের একটা হাত তার মাথায় বিলি কাটছে এবং অন্যহাত শাড়ির নিচে পেট অতিক্রম করে পিঠে অবস্থান নিয়েছে। তার পা দুটি শিশির দুই পায়ের মাঝে নিয়ে আটকে রেখেছে। বিন্দু শিশিরের উপর থেকে হাত সরিয়ে নিতেই শিশির বুঝে গেছে সে জেগেছে। তাই মাথায় চুমু দিয়ে বললো, 

- শুভ সকাল শিশিরবিন্দু। নামাজ পড়বে না?

- হুম।

- উঠো। না হয় তোমার আগে সূর্য জেগে উঠবে।

- না ছাড়লে কিভাবে!

শিশির হেসে তাকে পাঁচ সেকেন্ডের জন্য জোরে চেপে ধরে আবার ছেড়ে দিলো। এবং দুজনেই উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ আদায় করে নিলো। নামাজ পড়া শেষ হতেই শিশির তাকে বই এনে দিলো পড়তে বসার জন্য। সে দরজা খুলে বেরিয়ে নাস্তা করার জন্য কিছু খাবার নিয়ে এলো বিন্দুর জন্য। খাবার খেয়ে পড়তে বসলে মনযোগ তুলনামূলক বৃদ্ধি পাবে। এটা বিন্দুর জন্য শিশিরের উক্তি। কেননা পেটে ক্ষুধা থাকলেও বিন্দু এখন বলবে না। তার কথায় অল্প খেয়ে বিন্দু পড়তে বসলো। যদিও কোনো ইচ্ছে ছিলো না এখন পড়তে বসার। তবুও বসতে হলো। কেউ যেন এসে বিরক্ত না করে সেই ব্যবস্থাও করে রেখেছে শিশির। দরজা লক করে সে রুমেই বসে আছে। সকাল আটটার পর সে দরজা খুলে রুম থেকে বেরিয়েছে। বিন্দু তখনও পড়ছিলো। শিশিরকে বের হতে দেখে হাই তুলতে তুলতে শীতুল এসে রুমে প্রবেশ করলো। বিন্দুকে পড়তে দেখে শীতুল অবাক হয়ে বললো,

- ভাবি! তোমার বিয়ে অথচ তুমি পড়তে বসেছো! আমি তো তোমাদের বিয়ের জন্য আরও এক সপ্তাহ আগে থেকেই পড়া বন্ধ করে দিয়েছি! আর এখন ফ্রেশ হওয়ার পরেও আমার ঘুম কাটছে না আর তোমার হাতে বই!

বিন্দু মৃদু হেসে বললো, 

- আমার তো পরীক্ষা তাই পড়ার তাড়া। আমারও ইচ্ছে ছিলো না, তোমার ভাইয়া বই হাতে ধরিয়ে দিয়েছে। পড়াও হয়েছে অনেকটা।

- তো রেখে দিচ্ছো কেন! আমি এসে ডিসটার্ব করলাম!

- না। অনেক্ক্ষণ পড়েছি৷ এখন রেখেই দিতাম।

শীতুল ধপাস করে খাটে বসে পড়লো এবং তার গল্প শুরু করে দিলো। বিন্দু তার সাথে কথা বলতে বলতে বইপত্র গুছিয়ে বিছানাও গুছিয়ে রাখলো। এর পরপরই অন্যরা একে একে আসতে লাগলো নতুন বউয়ের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য।    

অনুষ্ঠান শেষ হলে আর বিন্দুদের বাসায় যায়নি। শিশির ইতালি চলে যাওয়ার শেষ সময়ে যাবে তাদের বাসায় বেড়াতে। সেদিন রাতেই শিশির বিন্দুকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লো সিলেটের উদ্দেশ্যে। আরও দূরে যাওয়ার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু সময়ের স্বল্পতার কারনে আর যাওয়া হলো না। বিন্দু বউ সাজ পালটে স্বাভাবিক রূপ ধারণ করেছে। তারা বাসে উঠেছে। একেবারে পেছনের সিট টাই তারা দখল করেছে। বেড়াতে যাবে সেটা জানে কিন্তু কোথায় যাবে তা বিন্দুর অজানা। তাই সে জিজ্ঞেস করলো, 

- আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি?

এমন প্রশ্নে শিশির একটু অবাক হলো। সে নিশ্চিত বাসে উঠার সময় বিন্দু খেয়াল করেনি এটা কোথায় যাওয়ার বাস! ঠোঁটের কোনায় দুষ্টুমির হাসি ফুটিয়ে ফিসফিস করে বললো, 

- হানিমুনে যাচ্ছি আমরা।

তার এমন জবাবে লজ্জা পেয়ে বিন্দু ঘাড় ঘুরিয়ে জানালার বাইরে তাকিয়ে বললো, 

- আমি জায়গার নাম জিজ্ঞেস করেছি। 

শিশির একটা হাত বিন্দুর পেছনে  নিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে বললো, 

- আমরা লন্ডনে যাচ্ছি। বাংলাদেশের লন্ডন। বাংলাদেশের লন্ডন কোথায় সেটা জানো?

- সিলেট।

- হুম।

- আমরা বাসে আছি। 

- হুম, আমিও জানি।

- এভাবে বসতে হয়!

শিশির আরও একটু চেপে ধরে বললো, 

- কাপলের মাঝে তো একটু একটু খুনসুটি চলবেই! এজন্যই তো পেছনের সিট নিলাম! ওহ,  মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট কথা,  বই নিয়েছি সাথে মাঝে মাঝে একটু পড়াশোনা করতে পারবে। এখন কি পড়বে? 

এসময় পড়ার কথা বলায় বিন্দু ব্রু কুচকে তাকালো তার দিকে। শিশির তার নাকটা টেনে বললো, 

- বউটা আমার রাগও করতে জানে এই প্রথম দেখলাম! 

বিন্দু আবার জানালার বাইরে তাকিয়ে হেসে উঠলো। বাসে উঠার দশ মিনিট পর বাস ছাড়লো। তাদের পাশের সিট ফাকা ই আছে। সামনেও হয়তো দু'একটা সিট ফাকা পাওয়া যাবে। মানুষ এতোটা উঠেনি। বাস চলতে শুরু করেছে। ঢাকার কোলাহল সমৃদ্ধ পথ অতিক্রম করে চলতে শুরু করেছে বাংলাদেশের লন্ডনের দিকে। বাসের লাইট অফ করে দেওয়া হয়েছে। ভেতরে অন্ধকার আর বাইরে কখনো আলো আবার কখনো ঘন কালো! জানালা অর্ধেক খোলা। তা দিয়েই প্রবেশ করছে তীব্র বেগে হিমেল হাওয়া। শিশির বিন্দুকেসহ মোটা চাদরে গুটিয়ে নিয়েছে নিজেকে। অন্ধকার পথে ভ্রমণ করার মজাই আলাদা। আর বাসের লোক গুলো সেই মজাটাকে উপেক্ষা করে বেঘোরে ঘুমাচ্ছে এক একজন! বিন্দু তার ভার দুদিনের গড়া সম্পর্কের  প্রিয় মানুষটার উপর ছেড়ে দিয়ে হেলান দিয়ে উপভোগ করছে রাতের আঁধারের দৃশ্য। শিশির তাকে কিছুক্ষণ ঘুমাতে বললো। কিন্তু বিন্দু এমন মুহুর্তে একটুও ঘুমাবে না। সে সম্পূর্ণ পথ জেগেই ছিলো।


Next part 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.