Bangla story | শুধু তোমারই জন্য পর্ব_১১ | bangla choti

 


শুধু তোমারই জন্য

পর্ব_১১

Bangla story | শুধু তোমারই জন্য পর্ব_১১ | bangla choti
Bangla story | শুধু তোমারই জন্য পর্ব_১১ | bangla choti 


এর মাঝে অনেকগুলো দিন কেটে গিয়েছে। আর মাত্র একটা দিন তারপরই আদৃত আর আনিতার রিলেশনের ১ বছর পূর্ণ হবে। সেটা নিয়ে বেশ এক্সাইটেড হয়ে আছে আনিতা। কেননা আদৃত বলেছিলো ওদের রিলেশনের যেদিন ঠিক এক বছর পূর্ণ হবে সেদিন ওরা দুজনে মিট করবে। এতদিনে আনিতার সেই অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। আজ থেকে ঠিক এক বছর আগে কালকের এই তারিখটাতে আদৃত এসেছিলো ওর লাইফে। আর কালকের এই তারিখটাতেই আনিতা আদৃতের দেখা পাবে। বহু অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলছে কাল। সেইজন্য কালকের দিনটা আনিতার জন্য খুবই স্পেশাল।


সন্ধ্যায় আনিতা কলেজের পড়া কমপ্লিট করছিলো। পাশে অনিমাও পড়ছে। তখনই আনিতার আম্মু রুমে আসলো ফোন হাতে নিয়ে। আনিতার আম্মু ফোনটা অনিমার দিকে এগিয়ে দেয়। অনিমা ফোন হাতে নিয়ে দেখে আব্বুর ফোন। তাই কানে নিয়ে কথা বলতে থাকে। আনিতা তেমন একটা ফোনে কথা বলে না ওর আব্বুর সাথে। তবে ওর আব্বুকে ও সবচাইতে বেশি ভালোবাসে। ওর আব্বুও দুই মেয়েকে অনেক ভালোবাসেন। আনিতা তখন অনিমাকে বলে,


--"তোর কথা শেষ হলে আমাকে দিস তো।"


অনিমা ঘাড় নাড়িয়ে সম্মতি জানায়। অনিমার কথা শেষ হলে ও আনিতার হাতে ফোন দেয়৷ আনিতা ফোন কানে নিয়ে বলে,


--"আসসালামু আলাইকুম আব্বু।"


--"ওয়ালাইকুম সালাম। কেমন আছো মা?"


--"ভালো তুমি কেমন আছো?"


--"ভালোই। পড়াশোনা কেমন চলছে? ঠিক মতো কলেজে যাচ্ছো তো?"


--"হ্যাঁ আব্বু।"


--"তো আর কি অবস্থা আম্মু? কিছু দিন পর তোমার ছোট চাচ্চু আসছে দেশে। তোমার কিছু লাগবে?"


--"কিছু লাগলে পরে জানাবো।"


--"আচ্ছা।"


--"ওই আব্বু।"


--"কি মা বলো?"


--"আমার কিছু টাকা লাগবে।"


--"কত টাকা লাগবে?"


--"দু/তিন হাজার হলেই হবে।"


--"কি করবা এত টাকা দিয়ে?"


--"আমার ফ্রেন্ডরা ট্রিট চেয়েছে আমার কাছে। তাই সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাবো।"


--"আচ্ছা যেদিন লাগবে তোমার আম্মুর থেকে নিয়ে নিও।"


--"তুমি আম্মুকে বলে দাও। আম্মু নয়তো এত টাকা দিবে না আমাকে।"


--"আচ্ছা বলে দিবো আমি।"


আনিতা আরো কিছুক্ষণ ওর আব্বুর সাথে কথা বলে ফোন অনিমাকে দিয়ে দেয়। অনিমাও ওর আব্বুকে বলে, "" আপুরে টাকা দিলে আমাকেও দিতে হবে।" অনিমার আব্বু তখন মুচকি হাসে। ওদের দু বোনের সাথে সবসময় ঝগড়া লেগেই থাকে। আবার দুজনের অনেক মিলও বটে। দুই বোনই দুজনের জান।


---


পরদিন আনিতা বোরখা পড়ে একেবারে রেডি হয়ে ওর আম্মুর কাছে যায়। ওর আম্মু তখন কিচেনে ছিলো। আনিতা ওর আম্মুকে ডেকে বলে,


--"টাকা দাও।"


--"কিসের টাকা?"


--"কেন আব্বু তোমাকে বলেনি?"


--"আজই লাগবে? দাড়া একটু  দিচ্ছি।"


এই বলে আনিতার আম্মু তার হাতের কাজটা শেষ করে। তারপর আঁচল দিয়ে হাত মুছতে মুছতে নিজের রুমে চলে যায়। আনিতাও যায় পেছন পেছন। আনিতার আম্মু আলমারি থেকে এক হাজার টাকার দুটো নোট বের করে দেয় ওর হাতে। দু হাজার দেখে আনিতা বলে,


--"দু হাজার কেন? আরো এক হাজার দাও।"


--"তোর আব্বুর কাছে কত চাইছিস?"


--"দু/তিন হাজার।"


--"তাহলে ঠিকই তো আছে। দু হাজারই তো দিয়েছি।"


--"আম্মু দু আর তিনে কত হয়? পাঁচ হাজার। সেখানে আমি তিন হাজার চাইছি। দাও তো আর এক হাজার।"


--"একটা দিবো ফাজিল মেয়ে। বড্ড কথা শিখে গেছো।"


এই বলে আনিতার আম্মু এক হাজার টাকার আরো একটা নোট দেয়। আনিতা সেটা নিয়ে আবারো বলে,


--"এবার কলেজে যাওয়ার গাড়ি ভাড়া + আমার ক্ষুধা লাগলে আমি কিছু খাবো না? তার টাকা দাও।"


আনিতার কথা শুনে আনিতার আম্মু চোখ কটমট করে তাকায় ওর দিকে। আনিতার আম্মু কপাট রাগ দেখিয়ে বলে,


--"তিন হাজার দিলাম এখন আবার গাড়ি ভাড়া আবার নিজের খাওয়ার টাকাও এক্সট্রা লাগবে তাই না?"


--"গাড়ি ভাড়া শেষ তো। এখন দাও তো।"


আনিতার আম্মু আর একশ টাকার একটা নোট ওর হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেলো। আনিতা আর কিছু বলল না। আপাতত একশ টাকাতেই হবে। আনিতাদের বাসা থেকে কলেজের যেতে আসতে অটোতে টোটাল ভাড়া বিশ টাকা লাগে। আর যদি রিকশায় যায় তাহলে চল্লিশ টাকা।


আনিতা টাকাগুলো ব্যাগে ভরে বের হয়ে গেলো বাসা থেকে। আজকে একা যেতে হবে ওর। তাসকিয়া রোদেলা শুভ ওরা আজকে একটু আগেই চলে গিয়েছে। ওকে অবশ্য বলেছিলো কিন্তু আনিতার ঘুম থেকে উঠতে লেট হয়ে যায়। আনিতা বাসা থেকে বের হতেই দেখে ওর মেজো চাচ্চু কোথায় থেকে যেন আসলো। আনিতার ওর চাচ্চুকে বলে,


--"চাচ্চু একটু কলেজে দিয়ে আসবা? লেট হয়ে গিয়েছে আজকে।"


--"আচ্ছা উঠো"


আনিতা বাইকে উঠে বসে। আনিতার কলেজ পৌঁছাতে মিনিট সাতেক সময় লাগে। কলেজ গেটের সামনে এসে ওর চাচ্চু বাইক থামালে আনিতা নেমে যায়। ওর চাচ্চুকে বলে চলে যেতে নিলেই ওর চাচ্চু বলে,


--"টাকা আছে তোমার কাছে?"


--"হ্যাঁ আছে।"


তারপরও ওর চাচ্চু ওয়ালেট বের করে একশ টাকার দুটো নোট বের করে ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বলে,


--"রাখো এটা।"


--"লাগবে না চাচ্চু। আমার কাছে টাকা আছে। আর আম্মুও দিয়েছে আসার সময়।"


--"রাখো কিছু খেতে ইচ্ছে করলে খেও।"


এই বলে ওর চাচ্চু একপ্রকার জোর করেই আনিতার হাতে টাকা দেয়। আনিতা ওর চাচ্চুকে বাই বলে কলেজে চলে যায়। ওর চাচ্চু বাইক ঘুরায় বাসার দিকে।


---


আনিতা আরোহী শুভ তাসকিয়া রোদেলা পাঁচজন মিলে একটা শপিংমলে গিয়েছে আদৃতের জন্য গিফট কিনবে বলে। কয়েকটা দোকান ঘুরে আনিতা আদৃতের জন্য একটা ঘড়ি, একটা ওয়ালেট নিলো। আর আদৃতের পছন্দের একটা পারফিউমও নিলো সাথে। সব গুলো আলাদা আলাদা ভাবে র‍্যাপিং পেপারে মুড়ে একটা ছোট্ট শপিং ব্যাগে নিলো। তারপর ব্যাগটা ওর কলেজ ব্যাগে রেখে দিলো। গিফটগুলো সব আনিতা ওর নিজের জমানো টাকা দিয়েই কিনেছে। 


শপিংমল থেকে বেরিয়ে ওরা সবাই মিলে পাশেরই একটা রেস্টুরেন্টে গেলো। বেশ ক্ষানিকটা সময় ওরা সবাই ওয়েট করলো আদৃতের জন্য কিন্তু আদৃত আসছে না। আদৃতের বলা টাইম অনেক আগেই শেষ হয়েছে। এতক্ষণে তো এসে পরার কথা। এসবই ভাবছে আনিতা। 


আনিতা ফোন বের করে আদৃতকে ফোন দিলো। প্রথম বারে ধরলো না। দ্বিতীয় বারে দুবার রিং হবার পরই আদৃত ফোন রিসিভ করলো। আনিতা ফোন কানে নিয়ে বলে,


--"আদৃত কোথায় তুমি? এতক্ষণে তো তোমার এসে পরার কথা।"


--"আনিতা আসলে___"


--"আসলে কি?


--"সরি আনি আমি আজ আসতে পারছি না। জরুরী একটা কাজ পড়ে গিয়েছে।"


--"মানে কি বলছো? তুমি তো আমাকে কথা দিয়েছিলে আমাদের সম্পর্কের এক বছর হলে তুমি মিট করবে আমার সাথে। তাহলে আজকে যখন মিট করার কথা তখন এসব কিভাবে বলতে পারছো তুমি?"


--"হ্যাঁ বলেছিলাম। আমিও চেয়েছিলাম তোমার সাথে দেখা করবো আজ। কিন্তু এখন পসিবল হচ্ছে না আনি।"


আদৃতের কথায় আনিতার কষ্ট হলো ক্ষানিকটা। অনেক আশা নিয়ে এসেছিলো ও। আর আদৃত কি বললো? জরুরী কাজ পড়ে গিয়েছে আসতে পারবো না। বাহ ভালোই তো! মনে মনে এসব ভেবে তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো আনিতা৷ ক্ষানিকটা হেসেই বলে,


--"হুম বুঝলাম।"


--"প্লিজ আনি রাগ করো না। খুব শীঘ্রই আমরা মিট করবো। প্রমিস।"


--"হুম, আচ্ছা রাখছি আমার ফ্রেন্ডরা ওয়েট করছে আমার জন্য।"


--"আচ্ছা তাহলে পরে কথা হবে।"


এই বলে আদৃত নিজেই লাইন কেটে দিলো। আবারো তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো আনিতা। এবারেও বোকার মতো ভেবেছিলো আদৃত হয়তোবা বুঝতে পারবে ওকে। আদৃত হয়তো বুঝবে ও অভিমান থেকেই ফোন রাখার কথা বলল। কিন্তু না আদৃত তো আদৃতই। বরাবর যেমন ছিলো। এখনই ঠিক তেমনই আছে।


মাঝে মাঝে আনিতা ভেবে পায় না, আদৃত সত্যি ওকে ভালোবাসে তো? একেক সময় মনে হয় আদৃত সত্যি ওকে খুব ভালোবাসে। আবার একেক সময় মনে হয় আদৃত ভালোবাসে না আনিতাকে। শুধুমাত্র আনিতার পাগলামি ভালোবাসা বাচ্চামো এসবের কাছে বাধ্য হয়েই আদৃত ওর সাথে সম্পর্কটা টিকিয়ে রেখেছে। মনে হয় এতদিনেও আনিতা আদৃতের ভালোবাসা হয়ে উঠতে পারেনি। শুধুমাত্র অভ্যাসই রয়ে গেলো আদৃতের।


এই এক বছরে কম তো অবহেলা সহ্য করেনি আদৃতের। হুটহাট করেই আদৃত কেমন যেন বদলে যেতো। কথা বলতে চাইতো না এড়িয়ে চলতো। প্রায়সময় ছোট খাটো বিষয় নিয়ে সম্পর্ক শেষ করে দিতো। আনিতা খুব করে চেষ্টা করতো আদৃতকে ওর লাইফে ফিরিয়ে আনতে। কখনো আদৃত আনিতার কথায় ব্যাক করতো। আবার কখনো স্বেচ্ছায় নিজেই সবকিছু ঠিক করে নিতো।


অনেক মেয়ের সাথেই আদৃতের রিলেশন ছিলো এটাও একসময় আনিতা জানতে পারে। তবুও নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে গিয়েছে ও আদৃতকে। আদৃতকে এই বিষয়ে জানালে তার উত্তর ছিলো, 


"মিথ্যে বলবো না তোমাকে। আগে রিলেশন করেছিলাম। অনেকের সাথেই মজা করতাম। কিন্তু তোমার সাথে সম্পর্কে জড়ানোর পর আর এসব কিছুই করিনি আমি। সব মেয়েদের সাথে কথা বলা অফ করে দিয়েছি।"


তবুও সবটা মেনে নিতো আনিতা। ওই যে খুব বেশি ভালোবাসতো যে। পাগল ছিলো কিনা আদৃতের জন্য। আর আদৃতও বারবার সেটারই সুযোগ নিতো। বারবার অবহেলা ইগনোর এসব করেই যেত৷ তবুও ভালোবেসেছে।


কাঁধে কারো হাতের স্পর্শ পেতেই আনিতার ভাবনার ছেদ ঘটে। চোখের কোনে জমে থাকা পানিটা মুছে নিলো ও। পিছু ঘুরতেই দেখে শুভ দাঁড়িয়ে আছে। শুভকে দেখে আনিতা মৃদু হাসে। তা দেখে শুভ বলে,


--"আর যাই হোক আমার সামনে অন্তত মিথ্যে হাসি হাসিস না।"


--"কি বলছিস মিথ্যে হাসবো কেন?"


--"আর কত কষ্ট পাবি ওকে ভালোবেসে? ওর আর কত অবহেলা সহ্য করবি বল? কেন এত কষ্ট পাচ্ছিস ওর জন্য? কেন এখনো ওর সাথে সম্পর্কে আছিস বল?"


--"ওই যে ভালোবাসি যে।"


--"দেখ আনিতা তুই ভালোবাসলেও আদৃত তোকে ভালোবাসে না।"


--"ওর মনের কথা আমিও জানি না আর তুইও জানিস না। ওই যে বললাম না, ভালোবাসি ওকে? তাই ওর সবটা হাসিমুখে মেনে নেই। ওর সব কথা বিশ্বাস করি। আর আদৃত যে আমাকে বলে "আনি তোকে ভালোবাসি আমি" এই কথাটাও বিশ্বাস করি।"


--"আদৃত একদিন নিশ্চয়ই বুঝবে তবে না জানি বড্ড দেরী করে ফেলে।"


--"যাই হোক বাদ দে এসব। ও আসবে না। তোরা কি খাবি অর্ডার দে।"


এই বলে আনিতা ওখান থেকে সরে বাকী সবার সাথে গিয়ে বসলো। আনিতার যাওয়ার পানে তাকিয়ে শুভ একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলে,


--"আমি জানি তুই আদৃতকে কতটা ভালোবাসিস আনিতা। আদৃতের প্রতি তোর ভালোবাসার কোনো খামতি নেই। কিন্তু আদৃত তো বুঝে না তোকে। বুঝলে এভাবে অন্তত কষ্ট দিতে পারতো না।"


নিজে নিজেই এসব বলে শুভও আনিতার ওখানে গিয়ে বসে। তারপর খাবার অর্ডার করে। কিছুক্ষণ বাদে ওয়েটার খাবার দিয়ে গেলে ওরা খেতে শুরু করে। খাওয়া-দাওয়ার পার্ট শেষ হলেই ওয়েটার এসে একটা লাভ শেইপ দুই পাউন্ডের চকলেট কেক দিয়ে যায় ওদের টেবিলে। 


কেক এর উপর লেখা আছে "Happy 1st Relationship Anniversary" আর এই লেখাটার নিচে ছোট্ট করে ইংলিশে লেখা "আনিতা লাভ আদৃত।" কেকটা তো আজ দুজনে মিলে কাটার কথা ছিলো। কিন্তু ওকে এখন একাই কাটতে হবে। এসব ভেবে আনিতার চোখ পানিতে টলমল করে উঠলো। সাথে সাথেই আনিতা নিজেকে সামলে নিলো। আর কাঁদবে না ওর জন্য। আদৃতের যা ইচ্ছে করুক। 


আনিতা কেক কাটার পর সবাই ওকে খাইয়ে দেয়। আনিতাও খাইয়ে দেয়। ওখানে থাকার সারাটা সময় আনিতা মুখে প্লাস্টিকের হাসি ঝুলিয়ে রেখেছিলো ঠোঁটের কোনে। ওরা সবাই সেটা বুঝতে পেরেছে। বেস্ট ফ্রেন্ড তো। আজকের দিনটা নিয়ে অনেক এক্সাইটেড ছিলো আনিতা সেটা ওরা সবাই জানে। কিন্তু এই দিনটাকেও আদৃত মূহুর্তেই মাটি করে দিলো। 


রেস্টুরেন্টের সব বিল পে করে দিলো আনিতা। তারপর সবাই মিলে একসাথেই বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো। 


---


বিকেলে ছাদে দাঁড়িয়ে আছে আনিতা। একটু আগে আদৃতকে ফোন করেছিলো কিন্তু ওর দুটো নাম্বারই বন্ধ বলছে। বেশ মন খারাপ ওর। কিন্তু আনিতা ওর মন খারাপ ভাবটা বাহিরে প্রকাশ করতে চাচ্ছে না। এবার আর রাতুল আরহান কাউকেই ফোন দিয়ে আদৃতের কথা জিজ্ঞেস করবে না মনে মনে এটা ভেবে নিয়েছে আনিতা। আদৃত না চাইলে এবারে আর ওর সাথে সম্পর্ক রাখবে না আনিতা। যত কষ্টই হোক শেষ করে দিবে সবকিছু। এভাবে তো আর চলতে পারে না। অনেক তো হলো আর কত? আর কত নিজে নিজে বেহাইয়া হবে? এর থেকে ভালো না দূরে সরে আসা? আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে এসবই ভাবছে আনিতা। 


আনিতার পাশে তখনই কেউ একজন এসে দাঁড়ালো। গভীর ভাবনায় থাকার ফলে সেটা টের পেলো না আনিতা। একমনে আকাশের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করে আছে আনিতা। হুট করেই আনিতার কানের কাছে সে মানুষটা কিছুটা ঝুকে ফিসফিস করে বলে,


--"পিচ্ছি পাখিটার কি মন খারাপ?"


চোখ বন্ধ থাকা অবস্থাতেই চমকে উঠলো আনিতা। কি বলল? পিচ্চি পাখি? এই নামে তো ওকে একমাত্র আদৃতই ডাকে। আর কে ডাকতে পারে আনিতাকে এ নামে? এই ভেবে একবার আনিতা চোখ খুলতে চাইলো। কিন্তু পরক্ষণেই মনের ভুল ভেবে আর চোখ খুলল না আনিতা। কিন্তু আনিতার স্পষ্ট মনে হচ্ছে এটা মনের ভুল না ও ঠিকই শুনেছে। মস্তিষ্ক বলছে মনের ভুল আর মন বলছে না ও যা শুনেছে একদম ঠিকই শুনেছে। অতঃপর মন আর মস্তিষ্কের যুদ্ধে মনেরই জয় হলো। মনের কথাকে সায় দিয়ে চোখ খুলে পাশে তাকালো আনিতা।

চলবে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.